ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

‘কীর্তির মাধ্যমে আমাদের ঋদ্ধ করেছেন সুধীন দাশ ও করুণাময় গোস্বামী’

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ১৮ জুলাই ২০১৭

‘কীর্তির মাধ্যমে আমাদের ঋদ্ধ করেছেন সুধীন দাশ ও করুণাময় গোস্বামী’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলা একাডেমি আয়োজিত সঙ্গীতজ্ঞ সুধীন দাশ এবং সঙ্গীত-গবেষক ও প্রাবন্ধিক ড. করুণাময় গোস্বামীকে স্মরণ করে বক্তারা বলেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে আমরা আমাদের সাহিত্য ও সংস্কৃতি জগতের বেশ কয়েকজন গুণীকে হারিয়েছি। সুধীন দাশ ও করুণাময় গোস্বামী এমনই দু’জন বিরল সাহিত্য-সংস্কৃতিসাধক যারা তাদের জীবনব্যাপী কীর্তির মধ্য দিয়ে আমাদের ঋদ্ধ করেছেন এবং শুদ্ধতার শিক্ষা দিয়েছেন। সোমবার বিকেলে বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে এ স্মরণসভায় অনুষ্ঠিত হয়। প্রয়াত দুই গুণীকে নিয়ে কথা বলেন ড. নাশিদ কামাল, খায়রুল আনাম শাকিল, মাহমুদ সেলিম এবং নিশাত জাহান রানা। ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। স্মরণসভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ড. ইসরাইল খান, ড. সৌমিত্র শেখর, ইন্দ্রমোহন রাজবংশী, বুলবুল মহলানবীশ, সাইদুর রহমান বয়াতি প্রমুখ। রফিকুল ইসলাম বলেন, সুধীন দাশ এবং করুণাময় গোস্বামী দু’জনেই নজরুলকে নিয়ে আমৃত্যু কাজ করেছেন। সুধীন দাশের প্রধান ক্ষেত্র নজরুলের গান আর করুণাময় গোস্বামী রবীন্দ্রনাথ এবং নজরুলের সঙ্গীতভুবনসহ সামগ্রিক বিষয় নিয়ে গবেষণা করেছেন। তাদের অনন্য সৃজনকর্ম উত্তরকালের গবেষক এবং শুভবুদ্ধির সংস্কৃতিমনষ্ক মানুষকে পথ দেখাবে নিরন্তর। অন্য বক্তারা বলেন, সুধীন দাশ নজরুলগীতির বাণী ও সুরের শুদ্ধতা রক্ষার সংগ্রাম করে গেছেন সবসময়। নজরুলের গানের এক অনন্য পরম্পরা তিনি সৃষ্টি করেছেন তরুণ প্রজন্মের মধ্য দিয়ে। এভাবে নজরুল গবেষক এবং নজরুলপ্রেমীদের অনন্য ঋণে আবদ্ধ করেছেন সুধীন দাশ। অন্যদিকে করুণাময় গোস্বামী নজরুলগীতি বিষয়ে প্রাতিষ্ঠানিক গবেষণায় যেমন দক্ষতা দেখিয়েছেন তেমনি রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলের সাহিত্যের- সঙ্গীতের বিভিন্ন দিক নিয়ে উন্মোচক আলোচনায় দিশারীর ভূমিকা পালন করেছেন। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে করুণাময় গোস্বামী দেশভাগকে কেন্দ্র করে দু’টি উপন্যাস রচনার মধ্য দিয়ে কথাসাহিত্যিক হিসেবেও তার বিশিষ্টতার পরিচয় রেখে গেছেন। এদিকে, আজ মঙ্গলবার বিকেলে বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে শিশুসাহিত্যিক ও গবেষক শামসুল হক এবং প্রাবন্ধিক-গবেষক আজহার ইসলাম স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হবে। বহুবচনের অনিকেত সন্ধ্যা নাটকের মঞ্চায়ন সোমবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হলো নাট্যদল বহুবচনের নাটক অনিকেত সন্ধ্যা। নাট্যকার চন্দন সেনের রচনা থেকে নির্মিত দলের এই ২৪তম প্রযোজনাটির নির্দেশনা দিয়েছেন আরহাম আলো। পৌঢ়ত্বে মানুষের অবসর জীবনযাপন ও পরিবারের মানসিক, সামাজিক সমস্যাকে ভিত্তি করে চার পুরুষের অনবদ্য সময় তুলে ধরা হয়েছে এ নাটকে। প্রযোজনাটি প্রসঙ্গে নির্দেশক আরহাম আলো বলেন, বর্তমান সমাজে সবচেয়ে বড় সমস্যা বয়োজ্যেষ্ঠদের বার্ধক্য ও তারুণ্যের পারিবারিক পরিস্থিতি। এই সমাজে বার্ধক্যের অবসরে অনেক মানুষই অসহনীয় মানসিক ও শারীরিক দুর্দশা নিয়ে দিনাতিপাত করে। নিজের সাজানো সংসার ছেড়ে অনেককেই যেতে হয় বৃদ্ধাশ্রম নামক আশ্রয়কেন্দ্রে। তাই আমাদের সমাজে বার্ধক্য যেন এক অভিশাপ। আমরা বলতে চাই আমাদের সমাজে যারা বৃদ্ধ তারা সমাজের অভিশাপ নন তারা আমাদের পথের দিশারী। তাদের দূরে ঠেলে না দিয়ে প্রয়োজনে তাদের দিকে সহানুভূতি ও সহমর্মিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। মনুষ্যসৃষ্ট এই অভিশাপ সম্পর্কে সমাজকে সচেতন করাই এ নাটকের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। নাটকটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন নূর রোহান, আলো, মাহমুদ, রুমানা, হ্যাপী সিকদার, মুন মাসুদ, তৌফিক প্রমুখ। আল রেদুয়ানের সঙ্গীত পরিকল্পনায় মঞ্চসজ্জা করেছেন হেন্ডরি সেন।
×