ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কলাপাড়ায় ৫ কিমি বাঁধ বিধ্বস্ত ॥ জোয়ারে ভেসে যাওয়ার আশঙ্কা

প্রকাশিত: ০৫:১০, ১৮ জুলাই ২০১৭

কলাপাড়ায় ৫ কিমি বাঁধ বিধ্বস্ত ॥ জোয়ারে ভেসে যাওয়ার আশঙ্কা

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ১৭ জুলাই ॥ নিজামপুরের প্রায় দেড় কিলোমিটার বেড়িবাঁধ মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। বিলীন হয়ে গেছে আন্ধারমানিক নদীতে। কমরপুরসহসংলগ্ন আরও আড়াই কিলোমিটার বেড়িবাঁধের রিভার সাইটের স্লোপ নদী গিলে খেয়েছে। নিজামপুরের মানুষ তিন বছর আমন ফসলের আবাদ করতে পারেনি। অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে ডুবে একাকার হয়ে যায় বাড়িঘর থেকে জনপদ। তাদের ঘরে থাকার কোন উপায় থাকে না। ব্যবহারের নিরাপদ পানি পর্যন্ত থাকে না। দূষিত পানিতে জীবনযাত্রায় বিরাজ করে ভয়াবহ মানবেতর অবস্থা। এখানকার পাঁচটি গ্রামের অন্তত চারশ’ পরিবারে দুর্বিষহ অবস্থা এখন দুর্যোগে পরিণত হয়েছে। নিজামপুরের মানুষ এ বছর নিজেদের অর্থায়নে বিকল্প রিং বেড়িবাঁধ করেছে। যদি অস্বাভাবিক জোয়ারের জলোচ্ছ্বাস ঠেকাতে পারে তাহলে আমনের আবাদ করতে পারবেন এমন আশায় এরা বুক বেঁধেছে। স্থানীয় ছিদ্দিক মুন্সি জানালেন, এ বছর বাঁধটি মেরামত কিংবা বিকল্প বাঁধ করা না হলে তাদের অন্তত ৫০টি পরিবারকে বাড়িঘর ছেড়ে চলে যেতে হবে। আর জমিজমার মালিকদের নিঃস্ব হয়ে অন্যের কামলা দিতে হবে। একই দৃশ্য লালুয়ার। তিন কিলোমিটার বেড়িবাঁধের বিধ্বস্ত দশা। দেড় কিলোমিটার সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত। পাঁচটি গ্রামের দেড় হাজার কৃষক পরিবারের চরম দুর্দশা। কুয়াকাটার মাঝিবাড়ি, মিরাবাড়ি ও খাজুরার অন্তত পাঁচশ’ মিটার বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত রয়েছে। এসব ভাঙ্গা বেড়িবাঁধ এলাকার মানুষ রয়েছেন চরম আতঙ্কে। তারা আমন আবাদ নিয়ে পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়। ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের রমজানপুর গ্রামসংলগ্ন প্রায় দেড় কিলোমিটার এবং পেয়ারপুরের এক কিলোমিটার বেড়িবাঁধ চরম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। রিভার সাইটের স্লোপ বহু আগেই সোনাতলা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ইউপি চেয়ারম্যান আবদুস সালাম সিকদার জানান, জরুরী ভিত্তিতে এসব বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ মেরামত করা না হলে অস্বাভাবিক জোয়ারে জনপদে প্লাবনের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। নয়টি গ্রামের চাষাবাদ ভেস্তে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড কলাপাড়া সার্কেলের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের জানান, এ বছর বেড়িবাঁধ পুনরাকৃতিকরণের কাজ চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে মিঠাগঞ্জ ও নীলগঞ্জ ইউনিয়নের ৪৭/৩ ও ৪৭/৪ নম্বর পোল্ডারের ২৫ কিলোমিটার বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলছে। ৪৭/২ নম্বর পোল্ডারের রমজানপুর থেকে প্রায় ১৭ কিলোমিটার বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু হবে। এসবের টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া বিশ^ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় কুয়াকাটার সমগ্র এলাকার ৪৮ নম্বর পোল্ডারের ৩৯ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ আধুনিকভাবে এবং বর্তমানের চেয়ে পাঁচ ফুট উঁচু করে নির্মাণ করার কাজও শীঘ্রই শুরু হচ্ছে।
×