জনসংখ্যার বিচারে পৃথিবীর বৃহত্তর গণতান্ত্রিক দেশ ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন সোমবার স্থানীয় সময় বিকেল পাঁচটায় শেষ হয়েছে। এতে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ’র প্রার্থী রামনাথ কোবিন্দ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কংগ্রেসের মীরা কুমারের সঙ্গে। দেশটির প্রধান দুই দলই এবার দলিত সম্প্রদায় থেকে নিজেদের প্রার্থী দিয়েছে। ১৯৯৭-২০০২ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করা কে আর নারায়ণের পর দ্বিতীয়বারের মতো দলিত রাষ্ট্রপতি পাচ্ছে ভারত।
নির্বাচকম-লীর (ইলোক্টারাল কলেজ) ভোটে ভারতীয় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। দেশটির লোকসভা ও রাজ্যসভার সকল নির্বাচিত সদস্য, ২৯ রাজ্যের নির্বাচকম-লীরা, কেন্দ্রশাসিত দিল্লী ও পদুচেরির বিধায়কদের নিয়ে এই নির্বাচকম-লী গঠিত। নির্বাচকম-লীর মোট ভোটের সংখ্যা ১০,৯৮,৯০৩। প্রতিটি পার্লামেন্ট সদস্যের ভোটের মূল্য ৭০৮। তবে বিধানসভার বিধায়কদের ভোটের মর্যাদা নির্ধারিত হবে, কতসংখ্যক ভোটারের তিনি প্রতিনিধিত্ব করেন তার ওপর ভিত্তি করে। একজন প্রার্থীকে নির্বাচিত হতে হলে পঞ্চাশ শতাংশেরও বেশি ভোট পেতে হবে, হিসেব করলে সেই সংখ্যায় দাঁড়াবে ৫,৪৯,৪৫২টি ভোট।
এবারের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ফল অনেকটা আগে থেকেই সবার জানা। কারণ প্রায় চল্লিশটি দল রাজনাথ কোবিন্দকে রাষ্ট্রপতি পদে ভোট দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যার মধ্যে এনডিএ’র বাইরের দলও রয়েছে। কোবিন্দকে এখন পর্যন্ত যে রাজনৈতিক দলগুলো সমর্থন দিয়েছে তাদের ভোটের পরিমাণ ষাট শতাংশেরও বেশি, যেখানে বিজয়ী প্রার্থীকে পেতে হবে পঞ্চাশ শতাংশ। বিরোধী দল কংগ্রেসের প্রার্থী মীরা কুমার। তাকে ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি, সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজবাদী পার্টি, আম-আদমি পার্টি, রাষ্ট্রীয় জনতা দল, অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেস, কমিউনিস্ট দলগুলো, ডিএসকে, জম্মু ও কাশ্মীর ন্যাশনাল কনফারেন্সসহ বেশ কিছু দল সমর্থন দিয়েছে। সব মিলিয়ে মীরা কুমার ৩৯ শতাংশ ভোট পাবেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগেভাগেই রাজনাথ কোবিন্দকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তাকে তিনি সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, একজন আইনজীবী কিংবা রাজনীতিবিদ হিসেবে কোবিন্দকে নিয়ে কোন বিতর্ক নেই। তার রাষ্ট্রপতি প্রার্থী হিসেবে প্রচারাভিযানও তেমনটি হয়েছে।
বিরোধী নেতা সোনিয়া গান্ধী সবার কাছে বিবেকের ডাকে সাড়া দিয়ে ভোট দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। রবিবার তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আদর্শের সংঘাতের প্রতিনিধিত্ব করে। এতে অভিন্ন মূল্যবোধেরও সংঘাত রয়েছে। যদিও এ প্রতিদ্বন্দ্বীতায় অধিকাংশ ভোট আমাদের বিপক্ষে। কিন্তু লড়াই চলবে এবং তা কঠোর থেকে কঠোরতর হবে।’ যদি ব্যালট পেপারে বিশেষ বেগুনি কালির কলম ব্যবহার করা হয়, তবেই ভোট বৈধ হবে। পার্লামেন্ট সদস্যরা ভোট দেবেন সবুজ ব্যালট পেপারে। আর বিধায়করা ভোট দেবেন গোলাপি রঙের ব্যালটে। রাজ্যগুলো থেকে বিমানে ব্যালট নিয়ে এসে পার্লামেন্টের ৬২ নম্বর কক্ষে স্তূপ করা হয়েছে। ২০ জুলাই দিল্লীতে ভোট গণনা শুরু হবে। ২৫ জুলাই নতুন প্রেসিডেন্ট শপথ নেবেন। পাঁচ আগস্ট উপ-রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ এখনও তাদের প্রার্থী বাছাই করেনি। তবে বিরোধী দল কংগ্রেসের প্রার্থী হবেন গোপালকৃষ্ণ গান্ধী। -টাইমস অব ইন্ডিয়া
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: