ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নির্মিত হলো ১৫ আগস্টের নাটক ‘মহামানবের দেশে’

প্রকাশিত: ০৩:৩৪, ১৮ জুলাই ২০১৭

নির্মিত হলো ১৫ আগস্টের নাটক ‘মহামানবের দেশে’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সহিদ রাহমানের গল্পভাবনা এবং মান্নান হীরার কাহিনীচিত্র ও পরিচালনায় সম্প্রতি নির্মিত হয়েছে ১৫ আগস্টের বিশেষ নাটক ‘মহামানবের দেশে’। পিয়া ভিশনের ব্যানারে নির্মিত নাটকটির নির্বাহী প্রযোজক সেলিম শামসুল হুদা চৌধুরী। নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন তারিক আনাম খান, ফজলুর রহমান বাবু, মোমেনা চৌধুরী, শর্মিমালা, তামিমা তিথি প্রমুখ। নাটকের কাহিনীতে দেখা যাবে দুলাল এক গ্রাম্য যুবক। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় একদিন রেডিওতে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনে দারুণভাবে অনুপ্রাণিত হয়। সেদিনই সে ঠিক করে যুদ্ধে যাবে। তার সঙ্গে যোগ হয় গর্ভধারিণী মায়ের অনুপ্রেরণা। রাতের অন্ধকারে আরও কয়েক বন্ধুদের সঙ্গে গ্রাম ছাড়ে সে। চোখের জলে বিদায় নেয় প্রিয়তমা মুক্তির কাছ থেকে। আসায় সময় মুক্তি তার হাতটা একটু ছুতে বললে সে প্রতিজ্ঞা করে দেশ স্বাধীন না হওয়া পর্যন্ত সে তার প্রিয়তমার হাত ছোবে না। দেশ স্বাধীন হলে যদি বেঁচে থাকে তাহলে ফিরে এসে বিয়ে করবে তাকে। একদিন যুদ্ধের ক্যাম্পে আহত দুলালের সঙ্গে পরিচয় হয় ‘দৈনিক জয়বাংলা’র এক সাংবাদিকের। সাংবাদিক দুলালকে যুদ্ধে আসার প্রেরণার কথা জিজ্ঞেস করে। দুলাল সাংবাদিককে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের কথা এমনভাবে বর্ণনা করে যে সাংবাদিক অবাক হয়ে যায়। সাংবাদিক দুলালকে তার ঠিকানা দিয়ে দেশ স্বাধীন হলে দেখা করতে বলে। দেশ স্বাধীন হয়। ফিরে এসে মুক্তিকে বিয়ে করে দুলাল। একে একে পেরিয়ে যায় ৪টি বছর। এই ৪ বছরে দুলালের মনে একটা ইচ্ছা ক্রমেই গাঢ় হতে থাকে। সেটি হলো বঙ্গবন্ধুকে একবার স্বচক্ষে দেখা। যে মহামানবের কয়েকটি কথায় লাখ লাখ মানুষ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে তাকে একনজর না দেখলে দুলালের জীবনটাই যেন বৃথা। কিন্তু দুলাল কোন পথ খুঁজে পায় না। কিভাবে দেখা পাবে মহামানবের? সে তো কোন সাধারণ মানুষ না। হঠাৎ দুলালের মনে পড়ে সেই সাংবাদিকের কথা। ভাবে ঢাকায় গিয়ে সাংবাদিককে তার পরিচয় দিলে নিশ্চয়ই একটা ব্যবস্থা হবে। যেই ভাবা সেই কাজ। দুলাল রওনা হয় ঢাকার উদ্দেশে। অনেক খুঁজে বের করে সাংবাদিকের ঠিকানা। দেশ স্বাধীনের পর সে এখন পত্রিকার সম্পাদক। দুলাল তাকে পরিচয় দিলে সম্পাদক অত্যন্ত সাদরে তাকে গ্রহণ করে। দুলালকে তার বাসায় নিয়ে যায়। দুলাল সম্পাদককে তার ইচ্ছের কথা বলে। কিন্তু সম্পাদক ভেবে পায় না কিভাবে দুলালকে সাহায্য করবে। হঠাৎ সম্পাদকের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া বোন বলে আগামীকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু আসবেন। তাকে তার ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দেয়া হবে। দুলালকে সে সঙ্গে নিয়ে যেতে পারে, তবে দূর থেকে বঙ্গবন্ধুকে দেখতে হবে। দুলাল তাতেই খুশি। সারারাত উত্তেজনায় দুলাল পাঁয়চারি করে। হঠাৎ খুব ভোরে সম্পাদকের কাছে একটি ফোন আসে- বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছে। সেদিন ছিল ১৫ আগস্ট, ১৯৭৫। সম্পাদকের মুখে দুলাল খবরটি শুনে কোনভাবেই বিশ্বাস করতে পারে না। সে পাগলের মতো বেরিয়ে আসে সম্পাদকের বাসা থেকে। উ™£ান্তের মতো হাঁটতে থাকে রাস্তা দিয়ে। ফিরে যায় গ্রামে আর ভাবে যে মহামানবের দেশে মহামানব বেঁচে নেই- সেই দেশে কি ফসল ফলবে? নদীতে পানি থাকবে? জোয়ার ভাটা হবে? প্রতিদিন কি সূর্য উঠবে?
×