ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কক্সবাজার উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস

শিক্ষকের কোচিংয়ে নেয়া প্রশ্নের সঙ্গে হুবহু মিল

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ১৭ জুলাই ২০১৭

শিক্ষকের কোচিংয়ে নেয়া প্রশ্নের সঙ্গে হুবহু মিল

এইচএম এরশাদ, কক্সবাজার ॥ কক্সবাজার সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বাসায় নেয়া দশম শ্রেণীর ‘হিন্দু ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা’ বিষয়ে মডেল টেস্টের প্রশ্ন দিয়ে ওই স্কুলের অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। একটি-দুটি নয়, পুরো ৩০টি প্রশ্নেই হুবহু মিল রয়েছে। গত ১২ জুলাই ‘হিন্দু ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা’ বিষয়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগের দিন একই প্রশ্নে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের বাসায় নেয়া হয় মডেল টেস্ট। অভিভাবক ও সাধারণ মানুষের প্রশ্ন জেগেছে- প্রশ্নপত্র জালিয়াতি করাটা কোন ধরনের নৈতিক শিক্ষা। জানা গেছে, ফাঁস হওয়া ‘হিন্দু ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা’ বিষয়ের শিক্ষকের নাম মিন্টু শর্মা। তিনি ভৌত বিজ্ঞান ও রসায়ন বিষয়ের শিক্ষক। পাঠ দেন ডে শিফটে। বাসা স্কুলের একটু পূর্বে গোলদীঘির পাড়ে। সরকারীভাবে প্রাইভেট-কোচিং নিষিদ্ধ হলেও পরীক্ষায় ‘শতভাগ কমন’ পড়ার নিশ্চয়তা দিয়ে দীর্ঘদিন কোচিং বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। বাসায় দিনে ৪-৫টি ব্যাচ-কোচিং পড়ান। প্রতি ব্যাচে এক শ’র কাছাকাছি ছাত্রছাত্রী রয়েছে। প্রতি ছাত্র থেকে নেন মাসিক ন্যূনতম ৬শ’ টাকা। ওই শিক্ষকের বাসা যেন আরেকটি স্কুল। পড়ার জন্য নয়, মূলত প্রশ্ন কমন পাওয়ার নিশ্চয়তায় তার কাছে হুমড়ি খেয়ে পড়ে শিক্ষার্থীরা। অভিযোগ রয়েছে, স্কুলের প্রধান শিক্ষক রাম মোহন সেন যোগদানের পর থেকে স্কুলের পরীক্ষা, প্রশ্নপত্র, শিক্ষার মান নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে ব্যাপক স্বেচ্ছাচারিতা ও কোচিং বাণিজ্যের। শিক্ষক মিন্টু শর্মার সঙ্গে রয়েছে তার গভীর সখ্য। স্কুলের প্রায় সব কাজে চলে মিন্টু শর্মার একক আধিপত্য। শিক্ষার্থীদের বাধ্য করান প্রাইভেট পড়তে। যারা তার কাছে প্রাইভেট পড়ে না, তাদের পরীক্ষায় ফেল করার ভয় মনে করিয়ে দেন। এসব জেনেও না জানার ভান করেন প্রধান শিক্ষক। প্রধান শিক্ষক রাম মোহন সেন বলেন, বোর্ডের নির্দেশনার আলোকে স্কুল কর্তৃপক্ষের সরবরাহকৃত প্রশ্নে পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। কোন প্রশ্নের বিষয়ে অভিযোগ উঠলে তা বাতিলের এখতিয়ার আমাদের আছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। জেলা শিক্ষা অফিসার সালেহ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, সরকার শিক্ষকদের সর্বোচ্চ সম্মানিত করেছে। বেতন-ভাতা দ্বিগুণ করেছে। প্রাইভেট-কোচিং নিষিদ্ধ করার পরও যারা আইন অমান্য করছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঠিক তথ্য-প্রমাণ পেলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×