ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কেশবপুরে নদ-নদীর অবৈধ পাটার বাঁধ উচ্ছেদ

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ১৭ জুলাই ২০১৭

কেশবপুরে নদ-নদীর অবৈধ পাটার বাঁধ উচ্ছেদ

নিজস্ব সংবাদদাতা, কেশবপুর, ১৬ জুলাই ॥ নদ-নদী ও খালে পাটা দিয়ে পানি সরতে বাধা দেয়ার কারণে কেশবপুরে বৃষ্টির মৌসুমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মাছের ঘেরও জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ। যত্রতত্র মাছের ঘের এবং নদ-নদী ও খালে আড়াআড়ি পাটা দেয়ায় বৃষ্টির পানি বেরোতে না পেরে শহর, ফসলের মাঠ, জনবসতি এলাকা ডুবে যাচ্ছে। পানি সরাতে কেশবপুরের সাংসদ জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেকের নির্দেশে স্থানীয় প্রশাসন সব নদ-নদী ও খালের যাবতীয় পাটা উচ্ছেদ করতে মাঠে নেমেছে। ইতোমধ্যে কপোতাক্ষ নদ, হরিহর নদী ও বুড়িভদ্রা নদীর প্রায় ৩০ জায়গা থেকে প্রশাসন মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে পাটার বাঁধ উচ্ছেদ করেছে। একজনের বিরুদ্ধে মামলাও করা হয়েছে। গত বছর বর্ষার সময় কেশবপুর পৌরসভাসহ চারপাশের গ্রামগুলো পানিতে তলিয়ে যায়। নদ-নদী দিয়ে পানি বেরোতে না পারায় ওই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। হাজার হাজার পরিবারকে রাস্তার পাশে ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিতে হয়। প্রায় তিন-চার মাস জলাবদ্ধতায় বাড়িঘর ধসে যাওয়া আশ্রয়হীন মানুষ ভিটেমাটিতে ফিরতে পারেনি। ওই সময় হরিহর নদী খনন করে পানি সরানো এবং ব্যাপক ত্রাণের ব্যবস্থা করেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক। এ বছরও প্রতিমন্ত্রীর চেষ্টায় জলাবদ্ধতার কবল থেকে রেহাই পেতে হরিহর, বুড়িভদ্রা ও কপোতাক্ষ নদ খনন করা হয়েছে। কিন্তু কিছু ঘের ব্যবসায়ী ও মাছ শিকারি নদ-নদী ও খালে বাঁধ দিয়ে পানি সরতে বিঘœ সৃষ্টি করেছে। ফলে পৌরসভার সাহাপাড়া, আলতাপোল, হাবাসপোল, ভোগতীসহ অনেক এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশে স্থানীয় প্রশাসন সকল নদ-নদী ও খালের অবৈধ পাটার বাঁধ উচ্ছেদ করতে প্রতিদিন মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছে। গত এক সপ্তাহে হরিহর নদী, বুড়িভদ্রা নদী ও কপোতাক্ষের ত্রিমোহিনী, সাতবাড়িয়া, মির্জানগর, মধ্যকূল এলাকার প্রায় ত্রিশ জায়গার পাটার বাঁধ উচ্ছেদ করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দায়িত্বে থাকা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ কবীর হোসেন জানান, প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক নির্দেশ দিয়েছেন সব পাটার বাঁধ উচ্ছেদ করতে। যদি কেউ বাধা প্রদান করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইন মোতাবেক মামলা করে ব্যবস্থা গ্রহণ করার আদেশ দিয়েছেন তিনি। সব নদ-নদী ও খালের যাবতীয় বাঁধ উচ্ছেদ করা হবে। ইতোমধ্যে তিন ভাগের একভাগ বাঁধ উচ্ছেদ করা হয়েছে। প্রতিদিনই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। দু’-একদিনের ভেতর সব নদ-নদী ও খালের শতভাগ পাটার বাঁধ উচ্ছেদ করা হবে। তিনি জানান, একেকটি পাটার বাঁধে এক ট্রাক বাঁশ লাগানো হয়েছে। এছাড়া পলিথিন, ঘন চট ও জাল দিয়ে তিন স্তরে বাঁশের বেড়া দিয়ে পানিপ্রবাহ আটকে দেয়া হয়েছে, যে কারণে উচ্ছেদ করতে সময় বেশি লাগছে। শনিবার হরিহর নদীর মধ্যকূল মধ্যমপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিন জায়গা থেকে এবং বৃহস্পতিবার ছয় জায়গা থেকে মাছ শিকারিদের দেয়া অবৈধ পাটার বাঁধ মোবাইল কোর্ট বসিয়ে উচ্ছেদ করা হয়েছে। নদীতে পাটার বাঁধ দেয়ার অভিযোগে মধ্যকূল গ্রামের মশিয়ার রহমানের বিরুদ্ধে শনিবার রাতে কেশবপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পাটা উচ্ছেদের ফলে নদ-নদীতে পানি কমতে শুরু করেছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন।
×