ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সিইসি বললেন, যে কোন প্রভাবের উর্ধে থেকে নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে এই কর্মপরিকল্পনা সহায়ক ভূমিকা পালন করবে;###;এটিই সবকিছু নয়। সংযোজন পরিমার্জন করে সবার মতামত নিয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য কাজ করবে কমিশন;###;৩১ জুলাই থেকে সংলাপ শুরু

নির্বাচনের প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু ইসির ॥ রোডম্যাপ ঘোষণা

প্রকাশিত: ০৫:২৪, ১৭ জুলাই ২০১৭

নির্বাচনের প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু ইসির ॥ রোডম্যাপ ঘোষণা

সিইসি কেএম নুরুল হুদা ॥ শাহীন রহমান ॥ নির্বাচনী রোডম্যাপে ইসি। আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ৭টি বিষয়ে প্রাধান্য দিয়ে নির্বাচনের প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু হয়েছে কমিশনের। প্রাথমিক প্রস্তুতি হিসেবেই রবিবার তাদের কর্মকা- সংক্রান্ত কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করেছে। কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ অনুষ্ঠানে সিইসি বলেন, আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক এবং প্রভাবমুক্ত করার লক্ষ্য নিয়ে এই কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করা হয়েছে। যে কোন প্রভাবের উর্ধে থেকে নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করতে নির্বাচনী কর্মপরিকল্পনা সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। তিনি বলেন, ইসির এই কর্মপরিকল্পনা একটি সূচনা দলিল মাত্র। নির্বাচনের পথে এটিই সবকিছু নয়। সংযোজন-পরিমার্জন করে সবার মতামত নিয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন কাজ করবে। যদিও ইসির এই কর্মপরিকল্পনা প্রকাশের সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচন কমিশন কোন আলোচনা না করেই তাদের কর্মপরিকল্পনা নিয়েছে। নির্বাচনের আগে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ কি হবে, নির্বাচনে সহায়ক সরকারের কি ব্যবস্থা হবে তা কারও সঙ্গে আলোচনা না করেই নতুন কমিশন একতরফাভাবে রোডম্যাপ প্রকাশ করেছে। তবে তিনি ইসির কর্মপরিকল্পনা বিষয়ে দলের নেত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিক্রিয়া দেবেন বলে জানান। রবিবার বেলা সাড়ে ১১টায় নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ভবনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আগামী নির্বাচনের এই কর্মপরিকল্পনা বা রোডম্যাপ প্রকাশ করা হয়। কর্মপরিকল্পনায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের লক্ষ্যে ৭টি করণীয় বিষয় নির্ধারণ করা হয়েছে। করণীয় ৭টি বিষয়ের মধ্যে রয়েছে নির্বাচন কমিশনের আইনী কাঠামোসমূহ পর্যালোচনা ও সংস্কার। নির্বাচন প্রক্রিয়া সহজ ও যুগোপযোগী করতে সংশ্লিষ্ট সবার পরামর্শ গ্রহণ, সংসদীয় এলাকার নির্বাচনী সীমানা পুনর্নির্ধারণ, নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও সরবরাহ, বিধি অনুসারে ভোটকেন্দ্র স্থাপন এবং নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন এবং নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের নিরীক্ষা। এছাড়াও সুষ্ঠু নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট সবার সক্ষমতা বৃদ্ধির কার্যক্রম গ্রহণ করা। নির্বাচনের আগে কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের বিষয়ে বলা হয়েছে নির্বাচন কমিশনের কর্মপরিকল্পনার অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলো নির্বাচনের মূল অংশীজন এবং উপকারভোগী সংগঠন- রাজনৈতিক দল, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ, গণমাধ্যম এবং সুশীল সমাজের সঙ্গে আলাপ আলোচনার প্রেক্ষিতে কর্মপরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলো চূড়ান্ত করে বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেয়া হবে। এই কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী সবার মতামতের ভিত্তিতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আইনানুগ এবং গ্রহণযোগ্য করে তোলা সম্ভব হবে। ইসির কর্মপরিকল্পনা ১. আইন সংস্কার ॥ কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী জুলাই মাসের মধ্যেই আইন কাঠামো পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় সংস্কারের বিষয়গুলো চিহ্নিত করার পদক্ষেপ নেয়া হবে। আইন কাঠামো পর্যালোচনা সংস্কারের বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে নির্বাচন কমিশনের নির্বাচন ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগ-১ এবং আইন অনুবিভাগকে। এতে বলা হয়েছে এ বছর জুলাই থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে আইন সংস্কারের লক্ষ্যে বিশেষজ্ঞ মতামত গ্রহণ করা হবে। ডিসেম্বরনাগাদ আইন সংস্কারের প্রয়োজনী খসড়া ফেব্রুয়ারি ২০১৮ মধ্যে আইন প্রণয়নের ব্যবস্থা করা হবে। ২.সংলাপ ॥ কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী ৩১ জুলাই থেকে সংলাপ শুরু হবে। প্রথমে সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে সুশীল সমাজের সঙ্গে। এরপরে আগামী আগস্টেই গণমাধ্যমের সঙ্গে সংলাপ, আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইসির নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ, অক্টোবরে নারী নেত্রীদের সঙ্গে সংলাপ, একই মাসে নির্বাচন পরিচালনার বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সংলাপ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সংলাপের আলোকে আগামী নবেম্বরে সংলাপের ভিত্তিতে সুপারিশমালার প্রাথমিক খসড়া প্রস্তুত করা হবে। এ বছর ডিসেম্বরে সুপারিশমালা চূড়ান্ত করা হবে। ৩. সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ ॥ এতে উল্লেখ করা হয়েছে জুলাই থেকে আগস্টের মধ্যে নির্বাচনী এলাকা পুনর্নির্ধারণের জন্য আগের নীতিমালা পর্যালোচনা করে একটি নতুন নীতিমালা প্রস্তুত করা হবে। আগামী আগস্ট মাসে নির্বাচনী এলাকা পুনর্নির্ধারণের জন্য জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সিস্টেমস সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আগামী অক্টোবরে নীতিমালার আলোকে বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় ৩শ’ আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ করে খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হবে। নবেম্বরের খড়সা তালিকা প্রকাশ করে দাবি/আপত্তি/সুপারিশ আহ্বান করা হবে। নবেম্বর-ডিসেম্বরে আপত্তি বিষয়ে অঞ্চল ভিত্তিক শুনানি শেষে তা নিষ্পত্তি করা হবে। ডিসেম্বরের মধ্যেই ৩শ’ আসনের সীমানা চূড়ান্ত করে গেজেট প্রকাশ করা হবে। ৪. ভোটার তালিকা হালনাগাদ ॥ আগামী নির্বাচনের আগে ২৫ জুলাই থেকে শুরু হচ্ছে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদের জন্য তথ্য সংগ্রহের কাজ। আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সংগৃহীত তথ্য ডাটাবেজে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। ২ জানুয়ারি ভোটার তালিকার খড়সা প্রকাশ করা হবে। ২ থেকে ১৫ জানুয়ারি খড়সা ভোটার তালিকার ওপর সংশোধনকারী কর্তৃপক্ষে দাবি আপত্তি গ্রহণ করা হবে। ১৬ থেকে ২০ জানুায়রি আপত্তি নিষ্পত্তি করা হবে। ৩১ জানুয়ারি ২০১৮ মধ্যে হালনাগাদকৃত চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। জুন ২০১৮ সালের মধ্যে ৩শ’ নির্বাচনী এলাকার জন্য ভোটার তালিকা মুদ্রণ ছবি ও ছবি ছাড়া ভোটার তালিকার সিডি প্রণয়ন এবং বিতরণ করা হবে। ৫. ভোট কেন্দ্র স্থাপন কার্যক্রম ॥ এতে জানানো হয়েছে সম্ভাব্য ভোট কেন্দ্র চিহ্নিত করে সর্বোচ্চ সুবিধাদি নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা প্রদান করা হবে। আগামী বছরের জুলাইয়ের মধ্যে নির্বাচনী এলাকাভিত্তিক ভোট কেন্দ্রে খড়সা তালিকা প্রকাশ করা হবে। আগামী বছরের আগস্টে খড়সা ভোট কেন্দ্রের তালিকার ওপর দাবি আপত্তি গ্রহণ ও নিষ্পত্তি করা হবে। ভোট গ্রহণের ২৫ দিন আগে কমিশনের অনুমোদন গ্রহণপূর্বক ভোট কেন্দ্রের গেজেট প্রকাশ করা হবে। গেজেটে প্রকাশিত সব ভোট কেন্দ্রের তালিকা সব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের কাছে প্রেরণ করা হবে। ৬. নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন ॥ এতে উল্লেখ করা হয়েছে নির্বাচন কমিশনে মোট ৪০টি রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন রয়েছে। নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলই দলীয় পরিচয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে। তবে আগামী নির্বাচনের আগে নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন দেয়ার চিন্তাভাবনাও করা হচ্ছে। এজন্য এ বছর অক্টোবর মাসে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর শর্তাদি প্রতিপালন সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা হবে। আগামী বছরের জানুয়ারি মাসে প্রাপ্ত তথ্যাদি পর্যালোচনা করে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বহাল সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এ বছর অক্টোবরের মধ্যে নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য আবেদন আহ্বান করা হবে। আগামী বছর ফেব্রুয়ারির মধ্যে নতুন রাজনৈতিক দলের জন্য প্রাপ্ত আবেদন যাচাই-বাছাই করে নিবন্ধন প্রদান করা হবে। আগামী মার্চের মধ্যে নতুন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে। এছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের জন্য সংশ্লিষ্ট সবার সক্ষমতা বৃদ্ধির কার্যক্রম নেয়া হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নির্বাচনী কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচী, জেলা উপজেলা পর্যায়ে ভোট কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীদের জন্য প্রশিক্ষণ এবং নির্দেশনা। কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ অনুষ্ঠানে সিইসি বলেন, নির্বাচনের আগে এই পরিকল্পনা একটি সূচনা দলিল। নির্বাচনের পথে কাজের জন্য এ কর্মপরিকল্পনাই সব নয়। সংযোজন-পরিমার্জন করে সবার মতামত নিয়ে আমরা কাজ করে যাব। আগামী নির্বাচনে যেকোন প্রভাবের উর্ধে থেকেই আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচন নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করতে পারব। এমনকি বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনেও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারব। শুধু সরকার কেন, রাজনৈতিক দল বা যে কোন দেশী-বিদেশী সংস্থার প্রভাবমুক্ত নির্বাচন করতে পারব আমরা। তফসিল ঘোষণা পর্যন্ত কর্মপরিকল্পনার সাতটি বিষয় ধরে কাজ এগিয়ে নেবেন। তফসিল ঘোষণার পর ইসির কাজে কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতা এলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, তফসিল ঘোষণার পরবর্তী ৯০ দিন নির্বাচনী আইন-বিধি অনুযায়ী ইসি কাজ করবে। এ মুহূর্তে সরকার কীভাবে পরিচালিত হবে, রাজনৈতিক কর্মপরিবেশ কীভাবে নিশ্চিত করা হবে তা কমিশনের এখতিয়ারে নেই। সম্প্রতি একজন রাজনৈতিক দলের নেতার বাসায় ‘সামাজিক অনুষ্ঠানে’ পুলিশের বাধার বিষয়টি সংবাদ সম্মেলনে এলে এ ধরনের ঘটনায় ইসির পদক্ষেপ কী হবে এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, এটা সরকারের বিষয়। আমরা তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনী পরিবেশ বজায় রাখতে যথাযথ ব্যবস্থা নেব। এখন সরকারের কাছে কোন অনুরোধ থাকবে না। তবে তফসিল ঘোষণার পর পরিস্থিতির প্রয়োজন হলে অনুরোধ করা হবে। কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম বলেন, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে এ পর্যন্ত সব কাজ ‘প্রশ্নের উর্ধে রেখে’ করার চেষ্টা করেছেন তারা। তিনি বলেন, আমরা পরিকল্পনা ধরেই এগোচ্ছি। সুষ্ঠু, সুন্দর, সবার অংশগ্রহণে নির্বাচন করতে চাই আমরা। সততা ও শক্তির স্বাক্ষর যেন আমরা রাখতে পারি, সেজন্য সবার সহযোগিতা চাই। নির্বাচন কমিশন সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহর সঞ্চালনায় এ অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, রফিকুল ইসলাম ও শাহাদত হোসেন চৌধুরী ও অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমানও উপস্থিত ছিলেন। ইসির কর্মপরিকল্পনায় বলা হয়েছে, নির্বাচন পরিচালনায় বিদ্যমান আইন-বিধি প্রয়োগ করে অতীতে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা সম্ভব হলেও পরিবেশ-পরিস্থিতির কারণে এগুলো আরও যুগোপযোগী করার সুযোগ রয়েছে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ও নির্বাচন পরিচালনা বিধি অনুযায়ী ‘পোস্টাল ব্যালটে’ ভোটে দেয়ার প্রক্রিয়াটি জটিল। বিশেষ করে বিদেশে অবস্থানরতদের সহজ পদ্ধতিতে ভোট দেয়ার কাঠামো বের করা প্রয়োজন। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত প্রার্থীর গেজেট প্রকাশ নিয়ে বিধিতে অস্পষ্টতা রয়েছে বিধায় তা দূর করার প্রয়োজন রয়েছে। সেই সঙ্গে আইনী কাঠামো পর্যালোচনা করে আরও অসঙ্গতি পেলে তা দূর করতে উদ্যোগ থাকবে ইসির। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে এ পর্যন্ত দু’শতাধিক সংশোধনী আনা হয়েছে। এ আইনটিও যুগোপযোগী করতে আরও সংস্কারের প্রয়োজন হবে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ও সীমানা পুনর্নির্ধারণ অধ্যাদেশ বাংলা ভাষায় রূপান্তর করা গেলে ভোটার, প্রার্থী ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সবার কাছে সহজবোধ্য হবে। সীমানা পুনর্বিন্যাসে নতুন প্রশাসনিক এলাকা ও বিলুপ্ত ছিটমহলগুলোকে নিয়ে নির্বাচনী এলাকা পুনর্নির্ধারণ করতে চায় ইসি। বিদ্যমান অধ্যাদেশে জনসংখ্যার বিবেচনায় আসন বিন্যাস করা হয়। জনসংখ্যার ঘনত্ব বিবেচনায় শহর ও গ্রামাঞ্চলের আসনে বৈষম্য সৃষ্টি হবে। বড় শহরের জনসংখ্যা বাড়লেও অনেকে ভোটার হন গ্রামাঞ্চলে। ইসির প্রস্তাব হচ্ছে-আইন সংস্কার করে শুধু জনসংখ্যাকে বিবেচনা না করে জনসংখ্যা, ভোটার সংখ্যা ও আয়তনকে বিবেচনায় আনা যেতে পারে। রাজধানীর মতো বড় শহরের আসন সংখ্যা সীমিত করার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়েছে সীমানা পুনর্নির্ধারণে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহারকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। নীতিমালার আলোকে সংসদীয় আসনের সীমানার খসড়া করে সংশ্লিষ্ট দাবি-আপত্তি-নিষ্পত্তি শেষে চূড়ান্ত করা হবে। অবৈধ অর্থ ব্যবহার রোধ ও পেশি শক্তির ব্যবহার দমনে আইনী সংস্কার ও তা প্রয়োগে সংশ্লিষ্ট সবার সুপারিশ পেলে শান্তিপূর্ণ ভোট করতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করে নির্বাচন কমিশন। এ সংক্রান্ত নির্বাচন কমিশনারদের নিয়ে গঠিত কমিটি সব পর্যালোচনা করে তা চূড়ান্ত করা হবে। ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও বিতরণ; দলের নিবন্ধন হালনাগাদ, ইসির জনবলের সক্ষমতা বাড়াতে কার্যক্রম নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করার পরিকল্পনাও তুলে ধরা হয়েছে রোডম্যাপে।
×