ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা আজ

ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে ৯৭২ কোটি টাকার প্রকল্প

প্রকাশিত: ০৪:১৪, ১৭ জুলাই ২০১৭

ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে ৯৭২ কোটি টাকার প্রকল্প

আনোয়ার রোজেন ॥ ইলিশের সুদিন ফিরেছে কয়েক মৌসুম হলো। সাম্প্রতিক মৌসুমগুলোতে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়েছে জেলেদের জালে। তবে দেশের মোট মাছ আহরণে ইলিশের অবদান খুব বেশি নয়, মাত্র ১১ ভাগ। আর জিডিপিতে অবদান ১ শতাংশ। এমন প্রেক্ষাপটে ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে বিশেষ উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। এর অংশ হিসেবে ইলিশসম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনায় ৯৭২ কোটি ১৭ লাখ টাকা ব্যয়ের প্রকল্প নেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এর মাধ্যমে দাদনের (ঋণ) জাল ও মহাজনদের হাত থেকে জেলেদের মুক্ত করা হবে। পাশাপাশি জাটকা ও মা ইলিশ সংরক্ষণের মাধ্যমে উৎপাদন বাড়ানো, জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা, মৎস্য সংরক্ষণ আইনের কঠোর প্রয়োগ ও ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টি করা হবে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প প্রস্তাব জমা দিয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। ইতোমধ্যে অনুমোদনের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। আজ সোমবার পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হবে। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ইলিশ বাংলাদেশের জাতীয় মাছ এবং নবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, রফতানি আয় বাড়ানো এবং আমিষের চাহিদা মেটানোর জন্য ইলিশের ব্যাপক গুরুত্ব রয়েছে। উপকূলীয় মৎস্যজীবীদের জীবিকার প্রধান উৎস হচ্ছে ইলিশ। প্রায় পাঁচ লাখ জেলে সরাসরি ইলিশ আহরণে নিয়োজিত। ২০-২৫ লাখ মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত রয়েছে এর সঙ্গে। সারাবিশ্বে মোট উৎপাদিত ইলিশের প্রায় ৬০ শতাংশ আহরিত হয় এ দেশের নদ-নদী থেকে। কিন্তু আশির দশকে ইলিশ উৎপাদন সঙ্কটে পড়ে। আশির দশকের আগে দেশের মোট মৎস্য উৎপাদনে ২০ শতাংশ ছিল ইলিশের অবদান। কিন্তু ২০০৩-০৪ সালে তা ক্রমান্বয়ে কমে গিয়ে দাঁড়ায় জাতীয় উৎপাদনের মাত্র ৮ শতাংশে। এভাবে প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট নানা কারণে ইলিশের উৎপাদন কমে যায়। তাই ইলিশসম্পদের গুরুত্ব ও বর্তমান অবস্থা বিবেচনা করে বৃহৎ পরিসরে মাছের ব্যবস্থাপনা উন্নত করা প্রয়োজন। এ প্রেক্ষিতে প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রকল্পটির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জনকণ্ঠকে জানান, প্রকল্পের আওতায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে জেলেদের ১০ হাজার গ্রুপকে (দল) দাদনদার ও মহাজনদের হাত থেকে মুক্তির জন্য মাছ ধরার জাল সহায়তার সংস্থান রাখা হয়েছে। এছাড়া সব জেলের জাল সহায়তার পাশাপাশি ৪৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে এফআরপি বোট সহায়তারও প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া প্রকল্পের আওতায় ১০ হাজার জেলেকে জাল প্রদান ও জাটকা আহরণে বিরত রাখতে ৩০ হাজার জেলেকে বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য ১২০ কোটি টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে। আজ পিইসি সভায় এসব ব্যয়ের যৌক্তিকতা নিয়ে আলোচনা হবে।
×