ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

জাফর ওয়াজেদ

শেখ হাসিনাকে সরে যেতে হবে কেন

প্রকাশিত: ০৪:০৫, ১৭ জুলাই ২০১৭

শেখ হাসিনাকে সরে যেতে হবে কেন

প্রতিহিংসার রাজনীতি ছেড়ে দেয়ার ঘোষণা দিলেও সেই অবস্থান থেকে যে তিনি সরবেন না, সেটার পূর্বাভাস আগেই পাওয়া গিয়েছে। বিশেষত ওনার অতীত কর্মকা- এবং লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তা-ই জানান দেয়। ভিশন ২০৩০ ঘোষণার সময় তিনি অতীত ভুলে আগামীর দিকে পা বাড়ানোর কথা বলেছিলেন। এতে বিস্মিত হওয়ার কোন কারণ না থাকলেও অভিজ্ঞজন ঠিকই বুঝে নিয়েছে, এর মধ্যে আছে এক ধরনের চাতুরি। কিন্তু চালাকি দিয়ে যে মহৎ কাজ হয় না, সেটা জানা থাকলে লুকোচুরি বা লুকোছাপার পথে পাড়ি দিতে সচেষ্ট হওয়ার কথা নয়। অহিংসা বা সহিষ্ণুতার ধারে কাছে যিনি কখনও ঘেঁষেন না, তিনি যদিও অপরকে তা মেনে চলার নির্দেশ দিতে থাকেন, আর নিজে ছল ও কৌশলের আড়ালে ছিপ হাতে বসে থাকেন, তাতে মৎস্য আর মারা হয় না। কর্তৃত্ববাদ আর সহিংসতত্ত্ব যার মজ্জায়, তিনি যদি হঠাৎ ঘোষণা করে বসেন যে, এখন থেকে তিনি সহিংসতা পরিহার করছেন। তাতে এক ধরনের চমক থাকতে পারে। কিন্তু ভবি ভোলবার নয়। গণমানুষ যাকে চেনেন মানুষ মারার কারিগর হিসেবে, দুর্নীতির পাহাড় নির্মাতা, অস্থিতিশীল পরিস্থিতির স্রষ্টা এবং নিপীড়ন, নিধন, নির্মমতায় প্রতিপক্ষকে ঘায়েল এবং নিশ্চিহ্ন করার দ্রষ্টা হিসেবে, তিনি অকস্মাৎ পূত-পবিত্র রূপ ধারণ করতেই পারেন বহিরঙ্গে। মুখোশের মানুষ হয়ে ভোলাতে পারেন অর্বাচীনদের। কিন্তু আদতে যিনি এসবের বিপরীত, ধংসযজ্ঞই যার ধ্যান-জ্ঞান, সম্পদ লুটপাটই যার আরাধ্য। তিনি সাধু-সন্ত বনে যাবেন সাধনা ছাড়াই, তা মেনে নিতে পারেন ক’জনইবা। চোখে ঠুলিপরা থাকলে আর মস্তিষ্কের কোষগুলো দুর্বল হলে বিশ্বাস করতেই পারেন কথিত সুশীলরা যে, তিনি একেবারেই ‘ইননোসেন্ট। কিন্তু দেশের ব্যাপক মানুষ তো দেখেছেন, জেনেছেন এবং বুঝেছেন তিনি আসলে কি। কেন এসব অসহিষ্ণু কাজের প্রতি এতো নিষ্ঠাবান। ‘ধরাকে সরা জ্ঞান করার’ মানসিকতায় আবদ্ধ থেকে আর যা-ই হোক সকল মত ও পথের মানুষের সঙ্গে আলোচনা কিংবা উদার নৈতিকতা প্রদর্শন ধাতে সয় না। বরং হুঙ্কার তোলা আর হুকুমদানের মধ্যে তিনি প্রাণ খুঁজে পান। তাই সংসদে দাঁড়িয়ে ‘চুপ বেয়াদব’ বলে ধমকে দেবার আচরণে তিনি যে একক প্রতিভাধারী, এবং তা সহজাত অভ্যাস, সেটা সর্বজনবিদিত। আইন-কানুন মেনে চলার বাতিকে তিনি ভোগেন না। বরং আইন ভঙ্গ করার মতো দুঃসাহস সব সময় প্রদর্শন করে এসেছেন। নানা অজুহাতে তিনি অন্যদের ব্যতিব্যস্ত করে রাখেন। ক্ষমতার মসনদে বসে তিনি আহামরি এমন কিছু করতে পারেন নি, যাতে দেশের মানুষ তার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবেন। কিন্তু তিনি তো মানুষকে মানুষ হিসেবে গণ্য করতে নারাজ। তাই হম্বিতম্বি করে আসছেন সময়ে-অসময়ে, কাজে-অকাজে। নিজে যেসব কর্ম-অপকর্ম সাধন করেছেন, অপরের ক্ষেত্রে তার ভিন্নরূপ দেখতে চান। তাই যে ব্যবস্থা তিনি মেনে নেননি, সেই ব্যবস্থা চালু করার জন্য অপরকে বাধ্য করতে চান। আর তা কার্যকর করার জন্য হেন কাজ নেই, তিনি করতে পারেন না। পেট্রোলবোমা মেরে মানুষ হত্যা, নির্বাচনকালীন প্রিজাইডিং অফিসার হত্যা, ভোট কেন্দ্রে বোমাবাজিÑ এসব ঘৃণ্য কার্যকলাপ তিনি আকছার ঘটিয়ে বুঝিয়ে দিতে চেয়েছিলেন যে, তার সিদ্ধান্ত বা নির্দেশ মতো না চললে, এর চেয়েও ভয়াবহ ও ভয়ঙ্কর রূপ তিনি ধারণ করতে পারেন। তার ঝুলিতে তিনি যুদ্ধাপরাধী, ধর্ম ব্যবসায়ী, জঙ্গীদের এক সঙ্গে রেখে দিতে পছন্দ করে আসছেন। যখন যা প্রয়োজন ঝোলা থেকে তিনি বের করেন। চিড়া গুড় নয়, মানুষ হত্যার বোমা, গ্রেনেডও তিনি ঝোলা থেকে বের করে দেখিয়ে দিয়েছেন, তুড়ি মেরে সব উড়িয়ে দিতে পারেন। লঙ্কাকা- ঘটানো তার জন্য কোন বিষয় নয়, তাই নাশকতা, বীভৎসতা, নারকীয়তা, নির্মমতার স্বরূপ কেমন, তা দেশবাসীর ওপর কার্যকর করে প্রদর্শন করেছেন যে, সবকিছু উপড়ে ফেলতে পারেন অনায়াসে তিনি। কিন্তু সব কী উপড়ানো যায়? শেকড় শক্ত হলে, তার মূলোৎপাটন করা যে দুরূহ, টের পেয়েছেন তিনি হাড়ে হাড়ে। অনেক কিছুই তাই হয়েছে বুমেরাং। দেশী-বিদেশী অপশক্তির কাঁধে ভর করে ষড়যন্ত্রের যে জাল বুনে গেছেন, তাতে প্রাণ ও সম্পদহানি হলেও শেষ সাফল্য তার করায়ত্ত হয়নি। বরং গণরোষ বেড়েছে, বেড়েছে মানুষের অশ্রদ্ধা এবং ঘৃণা। দাম্ভিকতার আড়ালে তিনি যে ভাবই প্রকাশ করুন না কেন, আসল স্বরূপ তাতে ঢাকা পড়ে না। ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে বুঝিয়ে দিয়েছেন, কীভাবে জনগণকে নিপীড়ন, নির্যাতন করা যায়। অপারেশন ক্লিনজিং চালু করে প্রতিপক্ষ মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী এবং সংখ্যালঘুদের ধনে মানে প্রাণে কীভাবে নিশ্চিহ্ন করা যায়। আওয়ামী লীগসহ বিরোধী দলের একুশ হাজার নেতাকর্মী হত্যাকা-ের শিকার হয়েছিল বলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তথ্য প্রকাশ করেছেন। বলেছেনও, আজকে বিএনপি গুম-খুনের কথা বলে, সেই সময় আওয়ামী লীগের কতজন গুম হয়েছে এর হিসেব নেই। শাহ কিবরিয়া, আহসানউল্লাহ মাস্টারের মতো প্রথম সারির নেতাকে হত্যা, ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীকে হত্যা প্রচেষ্টা ভুলে থাকার নয়। জামায়াত-শিবিরসহ ধর্ম ব্যবসায়ী দল, গ্রুপ ও গোষ্ঠীকে এক ঝুলিতে ভরে যে রাজনীতির চর্চা তিনি গত তিন দশকের বেশি করে আসছেন, তাতে গণবিধ্বংসী কামানের মতো প্রতিপক্ষের প্রতি প্রাণঘাতী গোলা ছুঁড়েছেন শুধু নয়, অনেককে দেশ ছাড়তে বাধ্য করেছেন, কয়েক পুরুষের ঘরবাড়ি পুকুর সম্পদ ফেলে যেতে। যে আগুন তিনি জ্বেলে দিয়েছেন, তা সহজেই নেভে না। আর তাই যে জঙ্গীবাদকে তিনি বাংলার মাটিতে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছিলেন তার শাসনকালে, তার রেশ এখনও শেষ হয়নি। এই জঙ্গীদের ওপর ভর করে তিনি দেশকে অস্থিতিশীল শুধু নয়, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিলেন। প্রচ- শক্তিমত্তা আর ক্ষমতা নিয়েও তিনি শেষ রক্ষা করতে পারেননি। তারই সৃষ্ট ইয়াজউদ্দিন নামক তত্ত্বাবধায়ক সরকার সবকিছু এমনভাবে উলোট-পালট করে দিয়েছে যে, দুর্নীতির যে পীঠস্থানে পরিণত করা হয়েছিল হাওয়া ভবনকে, তা হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে। সেনানিবাসের বাড়িতে বসে তিনি তার নিয়োগ করা রাষ্ট্রপতিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিতে বাধ্য করেছিলেন। এমনকি সেই প্রশাসনে নিজস্ব লোকজনকে নিয়োগ দিয়েছিলেন এমনভাবে যে, তার নির্দেশে চলতে হয়েছে ইয়াজউদ্দিন সরকারকে। সেসব নিয়োগপ্রাপ্তরা ওনার সঙ্গে লিয়াজোঁ রেখে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে চেয়েছিল। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। গণরোষে তার সব পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে। এক কোটি তেইশ লাখ ভুয়া ভোটার বানিয়ে তিনি নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে চেয়েছিলেন যেনতেনভাবে। কিন্তু ফখরুদ্দীন-মঈনউদ্দিনরা দায়িত্ব নেয়ার পর সেই ভুয়া ভোটার চিহ্নিত হয়ে পড়ে। সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে নতুন করে ভোটার তালিকা প্রণয়নের জোর বিরোধিতা করেছিলেন। কিন্তু হালে পানি আর মেলেনি। বরং তার থলের বিড়াল বেরিয়ে এসেছিল। প্রবল দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার আর অরাজকতার যে বিষবাষ্প তিনি ধারণ করছিলেন, তা সবই প্রকাশ্য হয়ে পড়ে। মাতা-পুত্রের দুর্নীতির ফিরিস্তি ক্রমশ প্রকাশিত হতে থাকে। বাধ্য হয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়ের মুখ দেখতে না পেরে তিনি ক্ষোভে-বিক্ষোভে এমনভাবে ফেটে পড়েন যে, ভদ্রতা, সৌজন্যবোধের আর লেশমাত্র চর্চা করতে পারেননি। নয়া সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানেও তিনি অংশ নেয়ার মতো মনোবল ধারণ করতে পারেননি। এমনকি বিরোধী দলের নেতা হিসেবে দলবলসহ দিনের পর দিন সংসদ বর্জন করেছেন। সংসদীয় গণতন্ত্রে তার আস্থা ও বিশ্বাস এতো কম যে, সংসদ নেত্রী থাকাকালেও তিনি অধিবেশনে যোগ না দিয়ে বিভিন্ন স্থানে ফিতে কাটার অনুষ্ঠানে ব্যাতিব্যস্ত থাকতেন। তার শাসনামলের সাফল্যের ঝুড়ি একেবারেই শূন্য। বরং অনৈতিক, অনিয়ম আর জিঘাংসার লোলুপ জিহ্বা বেরিয়ে এসেছিল তার সরকারের। জনগণকে তোয়াক্কা না করলেও তাকে জনগণের কাছেই যেতে হয়েছিল ভোটের জন্য। কিন্তু প্রায় শূন্য হাতে ফিরেছেন। সেই যে ২০০৮ সালে ক্ষমতা হারিয়েছেন, আজতক আর সেই ক্ষমতার মসনদ তাকে ধরা দেয় না। ২০১৪ সালের নির্বাচন বানচালের জন্য সহিংস পথ ও পন্থা অবলম্বন করে গণবিরোধী অবস্থানে নেমেছিলেন। তার আগে ২০১৩ সালে সরকার উৎখাতের নামে ধর্মান্ধ জঙ্গীগোষ্ঠীকে উস্কে দিয়ে দেশ ধ্বংসে লিপ্ত হয়েছিলেন। কিন্তু জনসমর্থন না থাকায় কোনভাবেই তিনি সরকার উৎখাত করতে পারেননি। যেমনটা ২০১৫ সালে পেট্রোলবোমা মেরে, গুপ্তহত্যা চালিয়ে ও সরকারের পতন ঘটাতে ব্যর্থ হয়েছেন। যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার জন্য তিনি যত হীন তৎপরতাই চালিয়েছেন, তা ব্যর্থ হয়েছে জনরোষের কারণে। তার অতীত কর্মকা- কখনও প্রমাণ করেনি দেশ ও জনগণের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধের প্রতি নিষ্ঠা। বিরুদ্ধ মতের সঙ্গে তিনি আলোচনায়ও আগ্রহী নন। তাই শেখ হাসিনার আলোচনার আহ্বানকে তিনি রূঢ়তা ও অভব্যতার সঙ্গে প্রত্যাখ্যানও করেছেন। বিরুদ্ধ মতের সঙ্গে আলোচনার পরিসর বজায় রাখতে হলে গণতন্ত্রের প্রতি যে আস্থা থাকা আবশ্যক, বর্তমান বিএনপি-জামায়াত জোটের তা নেই। তাদের কাছে বরং বিরুদ্ধ মতের কণ্ঠরোধ করার কৌশল গুরুত্ববহ। এ জন্য প্রাণে মেরে ফেলতেও কসুর করেন না। তাই দেখা যায় ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে হত্যার প্রচেষ্টা। আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বদান ও নিশ্চিহ্ন করার জন্য প্রশাসনকে ব্যবহার করে একুশ শতকের সবচেয়ে বড় নারকীয় হামলাটি সংঘটিত করিয়েছিলেন। শেখ হাসিনার প্রতি তিনি যে কী প্রতিহিংসাপরায়ণ, সেদিনের ঘটনা তার নির্লজ্জ উদাহরণ। তার স্বামী সামরিক জান্তা শাসক ও রাজাকার যুদ্ধাপরাধী পুনর্বাসনকারী জিয়াউর রহমান ‘বঙ্গবন্ধু’কেও সহ্য করতে পারেননি। বঙ্গবন্ধু হত্যার ইন্ধন যুগিয়েছেন। খুনীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছেন। এমনকি রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনকালে আওয়ামী লীগকে ‘বঙ্গবন্ধু’ শব্দটি ব্যবহার করতে দেননি। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছে। বিদেশে থাকায় দুই কন্যা বেঁচে গেছেন। তাদের পিতামাতা ও স্বজনদের কবর জেয়ারত করার সুযোগ দেননি পর্যন্ত। তাদের দেশে ফেরার পথে নিষেধাজ্ঞা জারি করে রেখেছিলেন। নির্বাসন জীবন যাপনে বাধ্য করেছিলেন। প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে তিনি তাদের পৈতৃক বাসভবনটিও হস্তান্তরে গড়িমসি করেছিলেন। জিয়া বুঝেছিলেন, জীবিত শেখ মুজিবের চেয়ে মৃত শেখ মুজিব আরও শক্তিশালী। আর তার কন্যাদের প্রতি গণমানুষের সমর্থন ব্যাপকতা পাবে ভেবেই তিনি তাদের প্রতি বিরূপ আচরণ করেছেন। সেই জেনারেলের স্ত্রী স্বামীর পদাঙ্ক অনুসরণ করে শেখ হাসিনাকে নিশ্চিহ্ন করতে চান। তাই গলা হাঁকিয়ে বলে বেড়াচ্ছেন, শেখ হাসিনাকে সরে যেতে হবে। এমনকি এটাও বলেছেন, শেখ হাসিনাকে নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ প্রধানের পদ থেকেও পদত্যাগ করতে হবে। শেখ হাসিনা যখন দেশে-বিদেশে ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছেন, বিশ্ব রাজনীতিতে অপরিহার্য ব্যক্তিত্ব হিসেবে নিজেকে সমাদৃত করতে পেরেছেন, তখন হিংসার বশবর্তী হয়ে বেগম জিয়া তার চাহিদামতো শেখ হাসিনাকে উপড়ে ফেলতে চাইছেন, সরকার ও রাজনীতি থেকে। অথচ দলকে ক্ষমতায় নিতে ব্যর্থ এবং আন্দোলনে অসফল হবার পর তিনি পদত্যাগ না করে পুত্রকে ক্ষমতার শিখ-ি বানিয়ে যেভাবে ছড়ি ঘোরাতে চান, তাতে সাড়া মেলে না জনবিছিন্নতার কারণে। যে ষড়যন্ত্র স্বাধীনতার পর থেকে চলে আসছে, সেই ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে বেগম জিয়া চাইছেন শেখ হাসিনামুক্ত আওয়ামী লীগ। লন্ডনে বসে দুর্নীতির মাতা-পুত্ররা মিলে নয়া ষড়যন্ত্র যে পাকাবেন, তা দেশবাসী বুঝতে পারেন। ২০৪০ সালের আগে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পারবে না বলে তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। কিন্তু জনগণ তার উচিত শিক্ষাই দিয়েছে। এখন মাতা-পুত্রের হুকুমমতো দেশ চলছে না। তাই তাদের হুঙ্কারে শেখ হাসিনা সরে যাবেন, আর তারা উন্নয়নের সব পথ রুদ্ধ করে দিয়ে লুটপাট আর দুর্নীতির নহর বহাবেন, দেশকে পাকিস্তানী ধারায় নিয়ে যাবেন, সে স্বপ্ন সুদূর পরাহত। একাদশ সংসদ নির্বাচনে জনগণই প্রমাণ করবে, কাকে সরে যেতে হবে।
×