ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আনন্দের একদিন

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ১৬ জুলাই ২০১৭

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আনন্দের একদিন

ভোরবেলা থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি আর রোদেও লুকোচুরি খেলা। সোনালি রোদেও খরতাপের ভেতরে বৃষ্টি ঝাপটা গায়ে লেগে আনন্দের পরিমাণ আরও বাড়িয়ে তুলেছে। ছাত্রছাত্রীদের হাতে হাতে রং-বেরঙের ব্যানার, প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন, সঙ্গে রোদ-বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচার অবলম্বন রঙিন ছাতা। কেউবা আবার রোদ- বৃষ্টিকে তোয়াক্কা না করেই আনন্দের মিছিলে শরিক হয়েছেন। ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা আর বর্ণিল কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে ৮ জুলাই পালিত হলো দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিদ্যাপীঠ পটুয়াখালী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭তম শুভ জন্ম দিন। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনটিতে উৎসবে-আড্ডায় মেতে উঠেছিল ক্যাম্পাসের সাবেক এবং বর্তমান শিক্ষার্থীরাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবারের সবাই। রঙে রঙে দিনটি রঙিন হয়ে উঠেছিল তাদের কাছে। বরিশাল বিভাগীয় শহর থেকে ২৫ কিমি দক্ষিণে এবং পটুয়াখালী জেলা শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার উত্তরে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কের ৫ কিলোমিটার পূর্বে দুমকি উপজেলা সদরের প্রাণ কেন্দ্রে ৮৯.৯৭ একর জমির ওপর অবস্থিত পবিপ্রবি ক্যাম্পাস। ১৭তম প্রতিষ্ঠা দিবস উৎসবের এই দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙ্গিনা রং-বেরঙের ব্যানার এবং ফেস্টুন দিয়ে সাজানো হয়েছে। শিক্ষক-কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীরা এককাট্টা হয়ে আনন্দ উৎসবে মুখর করেছিল বন্যাকবলিত দক্ষিণাঞ্চলের এ পাদপীঠকে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সকালে ক্যাম্পাসে বসেছিল নবীন-প্রবীণ শিক্ষার্থীদের মিলনমেলা, বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছিল ক্যাম্পাসকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো থেকে শিক্ষার্থীরা বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা নিয়ে একাডেমিক ভবন প্রাঙ্গণে জমায়েত হওয়ার পরে সকাল ১০টায় প্রশাসনকি ভবনের সামনে জাতীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় পতাকা উত্তোলন করেন এবং বেলুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা আকাশে উড়িয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ হারুনর রশীদ প্রতিষ্ঠা উৎসব অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এ সময় জাতীয় সঙ্গীত ও দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সৃজনী বিদ্যানিকেতনের ছাত্রীরা। এরপর সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে ভিসি এবং প্রোভিসি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে অনুষ্ঠিত হয় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রোভিসি, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক, প্রক্টর, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, রেজিস্ট্রার, হলগুলোর প্রভোস্টসহ সাংবাদিক, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন। শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করা উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ছাত্রছাত্রীদের ব্যানার, ফেস্টুন, টি-শার্ট ও ক্যাপ দেয়া হয়। বিভিন্ন হল থেকে আশা শোভাযাত্রা একাডেমিক ভবনের সামনে এলে তা বিশাল জনসমুদ্রে পরিণত হয়। ক্যাম্পাসের ভেতরে এবং দুমকি উপজেলার সামনে ও পীরতলা বাজারের যেদিকেই শোভাযাত্রা প্রদক্ষিণ হয়েছে সেদিকেই যেন উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়তে থাকে। এমনিতেই বর্ষপূর্তির আনন্দের ছোঁয়া সবার মনে ছড়িয়ে দিতে শেরে বাংলা হল, কবি সুফিয়া কামাল হল, একাডেমিক ভবন, প্রশাসনিক ভবন, জয়বাংলাসহ বিভিন্ন ভাস্কর্য ও গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোয় লাল, নীল, হলুদ আলোয় আলোকিত করা হয়। অনেক শিক্ষার্থী রাতের ওই আলোতে ছবি তোলার জন্য ভিড় জমায় প্রশাসন ভবন, শের-ই-বাংলা ও কবি বেগম সুফিয়া কামাল ছাত্রী হলসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ভবনের সামনে। শোভাযাত্রা শেষে একাডেমিক ভবনের সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনাসভা। আগেই ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট এ্যান্ড এ্যাডমিনিস্ট্রেশন অনুষদের ডিন অধ্যাপক আ. ক. ম. মোস্তফা জামানকে সভাপতি করে ৪৬ সদস্যবিশিষ্ট ১৭তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস কমিটি গঠন করা হয়। ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক আ. ক. ম. মোস্তফা জামানের সভাপতিত্বে ও সহযোগী অধ্যাপক এবিএম মাহবুব মোর্শেদের উপস্থাপনায় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ হারুনর রশীদ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রোভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর মোহাম্মদ আলী। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত, কৃষি অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. আবুল কাসেম চৌধুরী, বিএএম অনুষদের ডিন প্রফেসর বদিউজ্জামান, এএনএসবিএম অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোঃ রুহুল আমিন, উপ-রেজিস্ট্রার আরিফ আহমেদ জুয়েল, সহকারী অধ্যাপক শাহিন খান ও কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন প্রমুখ। অনুষ্ঠানে ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ হারুনর রশীদ বলেন, পবিপ্রবি দক্ষিণাঞ্চল তথা সমগ্র দেশের উচ্চশিক্ষা বিস্তারে যে অনন্য অবদান রেখে চলেছে তা দেশের মানুষ সারা জীবন মনে রাখবে। ইমাদুল হক প্রিন্স
×