ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

চরফ্যাশনে সন্ত্রাসীর হুমকিতে স্কুলে যেতে পারছেন না চার শিক্ষক

প্রকাশিত: ০৫:২৩, ১৬ জুলাই ২০১৭

চরফ্যাশনে সন্ত্রাসীর হুমকিতে স্কুলে যেতে পারছেন না চার শিক্ষক

নিজস্ব সংবাদদাতা, চরফ্যাশন, ১৫ জুলাই ॥ চরআইচা ৮নং ওয়ার্ড সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খসড়া গেজেটভুক্ত চার শিক্ষক নেছার উদ্দিন, শফি উদ্দিন, রুবিনা আফরোজ ও জান্নাতকে স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহল প্রাণনাশসহ সন্ত্রাসী হামলার হুমকি অব্যাহত রেখেছে। প্রাণনাশের আশঙ্কায় ওই শিক্ষকরা স্কুলে ক্লাস নিতে পারছেন না। ফলে ব্যাহত হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের লেখা পড়া। শনিবার বিকেল ৫টায় দক্ষিণ আইচা প্রেসক্লাবে সংবাদসম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নেছার উদ্দিন। তিনি জানান, নীতিমালা অনুযায়ী ২০১১ সালের ৩০ মে স্কুলের সভাপতি কর্তৃক নিয়োগ প্রাপ্তির পর স্কুল গৃহ নির্মাণ করে ক্লাস পরিচালনা করে আসছি। ২০১৩ সালের ১৮ নবেম্বর তৃতীয় ধাপে জাতীয়করণের ৬ষ্ঠ সভায় উপজেলা যাচাই-বাছাই কমিটি কর্তৃক শিক্ষক সংক্রান্ত তথ্য ছক “খ”তে আমাদের নাম শিক্ষক হিসেবে উল্লেখপূর্বক জাতীয়করণের জন্য সুপারিশ করা হয়। ২০১৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সহকারী পরিচালক সাইফুল্লাহ মুকবুল মোর্শেদ (মনি) সরেজমিনে বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেন। ওই বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি জেলা যাচাই-বাছাই কমিটির ১৮২ নং স্মারকমূলে বিদ্যালয় ও শিক্ষক জাতীয়করণের সুপারিশ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়। ওই সময় বিদ্যালয়ের নামে কোন মামলা-মোকদ্দমা সংক্রান্ত আপত্তি ছিল না। যার প্রেক্ষিতে ২০১৫ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি বিদ্যালয়টি জাতীয়করণের গেজেটভুক্ত হয়। বিদ্যালয়টি জাতীয়করণের প্রায় চার মাস পরে ২০১৫ সালের ১৭ মে এডিপিও খলিলুর রহমান আমাদের চার শিক্ষক হতে প্রতিবেদনের জন্য দুই লাখ টাকার ঘুষ দাবি করেন, তাকে আমরা পঞ্চাশ হাজার টাকা ঘুষ প্রদান করি। বাকি দেড় লাখ টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তিনি মোটা অংকের ঘুষের বিনিময়ে রাবেয়া, রাজিয়া, ফরহাদ, মোতাছিন নামের চারজনকে শিক্ষক হিসেবে অন্তর্ভুক্তির জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ প্রেরণ করেন। উক্ত প্রতিবেদনের বিপরীতে ২০১৫ সালের ২৮ জুন ও ২ জুলাই ভোলার ডিপিও সাইয়াদুজ্জামান দুইটি প্রতিবেদন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেন। তাতে এডিপিও খলিলুর রহমানের প্রতিবেদনকে ভুয়া ও মনগড়া বলে উল্লেখ করেন। এছাড়া এডিপিওর প্রতিবেদনটি ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে হওয়ায় এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে অধিকার ফিরে পেতে প্রধান শিক্ষক নেছার উদ্দিন হাইকোর্টে রীট পিটিশন দায়ের করেন। ২০১৭ সালের ২৭ এপ্রিল আমাদের নামে খসড়া শিক্ষক গেজেট প্রকাশ হয়। চলতি বছরের ৭ মে স্কুলের জমিদাতা ও ভুয়া শিক্ষকরা স্থানীয় সন্ত্রাসীদের দিয়ে আমাদের মারধর করে বিদ্যালয় হতে বের করে দেয় এবং প্রাণনাশসহ হুমকি অব্যাহত রেখেছে। এতে আমরা গেজেটভুক্ত প্রকৃত শিক্ষকরা খুন, গুম ও মামলার ভয়ে বিদ্যালয়ে যেতে না পেরে রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছি। এডিপিও খলিলুর রহমান তার রিরুদ্ধে আনীত অভিযোগকে বানোয়াট ও খামখেয়ালিপনা দাবি করে বলেন আমি সরেজমিনে যা পেয়েছি প্রতিবেদনে তাই উল্লেখ করেছি। আমার প্রতিবেদনে উভয়গ্রুপের শিক্ষকের নামই ছিল।
×