ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের রাজস্ব আদায় কমেছে

প্রকাশিত: ০৫:১১, ১৬ জুলাই ২০১৭

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের রাজস্ব আদায় কমেছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) মোট ২১০ কোটি ৯২ লাখ ৫৮ হাজার ৯২০ টাকার রাজস্ব আদায় করেছে। যা গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের তুলনায় ১০ কোটি ৯৩ লাখ ২১ হাজার ৬২৪ টাকা কম। শুধু তাই নয়; ২০১২-১৩ অর্থবছরের পর গত ৪ বছরে চসিকের রাজস্ব ক্রমান্বয়ে কমেছে। ৫ বছরের ব্যবধানে এই সিটি কর্পোরেশনের রাজস্ব কমেছে প্রায় সাড়ে ১২৯ কোটি টাকা। চসিকের রাজস্ব আদায় সংক্রান্ত উপাত্ত থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। এই উপাত্ত থেকে আরও জানা গেছে, ৫ বছর আগে ২০১২-১৩ অর্থবছরে চসিকের রাজস্ব আদায় হয়েছিল ৩৪৫ কোটি ৫৭ লাখ টাকা; যা ওই সময়ের লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৪৮ শতাংশ। ওই অর্থবছরে ৭২০ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার টাকার রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল চসিক। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে দেশের অন্যতম এই সিটি কর্পোরেশনের রাজস্ব আদায় হয়েছিল ৩৪০ কোটি ৪২ লাখ ৫০ হাজার টাকা; যা ওই সময়ের লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৬৭ শতাংশ। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে চসিকের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫০৭ কোটি ১০ লাখ ৭ হাজার টাকা। আগের অর্থবছরের তুলনায় ২০১৩-১৪ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা কমানোর পরও কমেছে রাজস্ব আদায়। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ২৪৭ কোটি ৪৫ লাখ ৭০ হাজার টাকার রাজস্ব আদায় করেছিল চসিক; লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৪৩ শতাংশ এবং এর আগের অর্থবছরের তুলনায় ৯২ কোটি ৯৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা কম। ওই বছর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৫৬৭ কোটি ৪১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে চসিকের রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ২২১ কোটি ৮৫ লাখ ৮০ হাজার ৫৪৪ টাকা। যা এর আগের অর্থবছরের তুলনায় ২৫ কোটি ৫৯ লাখ ৮৯ হাজার ৪৫৬ টাকা কম। আর ২০১৫-১৬ অর্থবছরের তুলনায় সদ্য সমাপ্ত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে চসিকের রাজস্ব আদায় ১০ কোটি ৯৩ লাখ ২১ হাজার ৬২৪ টাকা কমেছে। অর্থাৎ এ সময়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আয় হয়েছে ২১০ কোটি ৯২ লাখ ৫৮ হাজার ৯২০ টাকা। চসিকের রাজস্ব বিভাগের তথ্য অনুযায়ী সদ্য সমাপ্ত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে পৌরকর খাতে ১০৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকা; ট্রেড লাইসেন্সে ২০ কোটি ৮১ লাখ টাকা; ভূমি হস্তান্তরে ৫৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকা; সাইনবোর্ডে ৪ কোটি ৫৮ লাখ টাকা; এস্টেটে ২২ কোটি ১০ লাখ টাকা; বিবিধ খাতে ৩ কোটি ৯৯ লাখ টাকা আয় করেছে চসিক। রাজস্ব বিভাগের আটটি সার্কেলের মধ্যে বার্ষিক দাবির বিপরীতে আদায়ের হার মাত্র ২৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে পৌরকর খাতে ১০৪ কোটি ১৪ লাখ, ট্রেড লাইসেন্সে ২১ কোটি ৫৬ লাখ, ভূমি হস্তান্তরে ৫৬ কোটি ৭ লাখ, সাইনবোর্ডে ৬ কোটি ৪ লাখ, এস্টেটে ৩১ কোটি ২৩ লাখ, বিবিধ খাতে ২ কোটি ৭৮ লাখ টাকা আয় করেছিল চসিক। রাজস্ব আদায় কমার প্রসঙ্গে চসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ড. মুহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার অন্যতম কারণ, আগের অর্থবছরের তুলনায় পৌরকর ৫০ শতাংশ কমানো হয়েছে। আমাদের কর্মকর্তারা পঞ্চবার্ষিক কর পুনর্মূল্যায়নে ব্যস্ত থাকায় পৌরকর আদায়ে সময় কম দেয়া হয়েছে। সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরের শেষ দিনগুলোতে সরকারী ছুটি না থাকলে আদায়কৃত রাজস্বের পরিমাণ আরও বাড়ত। তিনি আরও জানান, গত কয়েক মাসে অতি বৃষ্টি, জলাবদ্ধতা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে রাজস্ব কর্মকর্তারা নগরবাসীর কাছে পৌঁছাতে পারেননি। আর সাইনবোর্ড অপসারণ করার কারণে ওই খাতে রাজস্ব আদায় বন্ধ হয়ে গেছে।
×