ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আপ্যায়িত ৩শ’ অতিথি

সম্পন্ন হলো অনাথ হাবিবার বিয়ে

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ১৫ জুলাই ২০১৭

সম্পন্ন হলো অনাথ হাবিবার বিয়ে

স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ॥ অনাথ কিশোরী হাবিবার বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। শুক্রবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মেড্ডায় শিশু পরিবারে তার বিয়ে সম্পন্ন হয়। জোহর নামাজের পরপরই হবু স্বামী জাকারিয়া প্রাইভেটকার যোগে শিশু পরিবারে চলে আসেন। এ সময় সুধীজনরা তাকে অভিনন্দন জানান। ২ লাখ ১ হাজার টাকা কাবিননামায় বিবাহ রেজিস্ট্রি হয়। উকিলের দায়িত্ব পালন করেন শহর সমাজসেবা প্রকল্পের সমন্বয়কারী আল মামুন সরকার। এ সময় জেলার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইকবাল হোসাইন, শহরের সুধীজনরা উপস্থিত ছিলেন। পরে সেখানেই খাবারের আয়োজন করা হয়। মোরগের মাংস, গরুর মাংস, ডিম, কাবাব, পোলাও, সাদা ভাত, সালাদ দিয়ে অতিথিদের আপ্যায়ন করা হয়। অন্তত ৩শ’ অতিথি আপ্যায়িত হন। হাবিবার হবু স্বামীর জন্য প্রাইভেটকারটি সাজানো হয় বিশেষভাবে। শুধু প্রাইভেটকার সাজানো খাতে ৭ হাজার টাকা খরচ হয়। মা-বাবাহীন হাবিবা বড় হয়েছে শিশু আশ্রমে। ৮ বছর বয়সে সে শিশু পরিবারে আসে। ক্রমে বড় হতে থাকে এখানে। নিবাসের নিয়ম মতে, ১৮ বছরের পর সেখানে থাকার নিয়ম নেই। তাই তাকে সরে যেতে হবে সেখান থেকে। কর্তৃপক্ষ তাকে ডেকে নিয়ে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করতে চাইলে কেঁদে ওঠে হাবিবা। নিজ শিশুকন্যার মতো তার ওড়নার আঁচল ধরে টানতে থাকে। কাঁদতে থাকে। হাবিবার এই চোখের পানি তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। মমতাময়ী নারী রওশন আরা দ্রুত ছুটে যান প্রতিষ্ঠানের সভাপতি জেলা প্রশাসকের কাছে। সেখানে তিনি তাকে আরও কয়েকদিন রাখার এবং চাকরি দেয়ার চেষ্টা করেন। পরে পুলিশ সুপারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার বিয়ের ব্যবস্থা করেন। হবু বরকে দেয়া হয় পুলিশে চাকরি। হাবিবার ‘বাবার’ ভূমিকায় আবির্ভূত হন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমান। তার ব্যক্তিগত উদ্যোগেই বিয়ের ব্যবস্থা হয়। ‘বাবা’ হিসেবে মেয়ের বিয়েকে স্মরণীয় করে রাখতে সব ব্যবস্থাই করেছেন পুলিশ সুপার। জেলার কসবা উপজেলা সোনাগাঁ গ্রামের বাসিন্দা ও জেলা পুলিশের কনস্টেবল মোঃ জাকারিয়া আলমের সঙ্গে শুক্রবার বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়েতে সরকারের বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তা, রাজনীতিক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ নানা শ্রেণী-পেশার তিন শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন। বিয়ের সব খরচাপতির ব্যবস্থা করেন পুলিশ সুপার। হাবিবার সঙ্গে বিয়ে দেয়ার জন্য জাকারিয়াকে পুলিশে চাকরির ব্যবস্থাও তিনিই করেছেন।
×