ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মিথ্যাচার করে বিজয় ঠেকাতে পারবে না বিএনপি ॥ ওবায়দুল কাদের

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ১৪ জুলাই ২০১৭

মিথ্যাচার করে বিজয় ঠেকাতে পারবে না বিএনপি ॥ ওবায়দুল কাদের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ বিএনপি মিথ্যাচার করে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয় ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বৃহস্পতিবার বিকেলে ধানম-িতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সম্পাদকম-লীর সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। ৫৭ ধারার বিষয়ে আওয়ামী লীগের প্রতিক্রিয়া বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, এ বিষয়ে সরকারের একজন মন্ত্রী আছে। তিনি ঐকমত্যের সরকার হোক আর (যেভাবে) যাই হোক; তিনিই ওই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন। বুধবার সংসদে তিনি একটা ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তার কথার বিপরীতে ভিন্নমত রাখার আমার কোন অবকাশ নেই। অপর এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যই হচ্ছেÑতারা সময় বুঝে ভারতভীতি, সময় বুঝে ভারতপ্রীতি। এখন যখন নির্বাচনের বাতাস বইছে তখন স্বাভাবিক কারণে তারা চেষ্টা করছে ভারতের একটু আশীর্বাদ বা ছায়া পাওয়া যায় কিনা? তাই একটু ভারতপ্রীতির আলামত বাইরে বাইরে আভাস দিচ্ছে। ভেতরের ব্যাপারটা বলতে চাই না। কিন্তু আমরা মনে করি, বাংলাদেশের জনগণই আমাদের শক্তির উৎস। আমাদের ক্ষমতায় বসাবে বাংলাদেশের জনগণ। কোন বিদেশী শক্তি আমাদের ক্ষমতায় বসাবে; এই আশা নিয়ে বিএনপির মতো চাতক পাখির ন্যায় অপেক্ষায় আমরা বসে নেই। সূত্র জানায়, এর আগে বৈঠকে মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্প্রতি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও বিবদমান কোন্দল নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। যেখানে গত বুধবারও আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে অনেক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। পুরো জেলায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। এমন পরিস্থিতিতে দলীয় সাধারণ সম্পাদকের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এর জবাবে ওবায়দুল কাদের বাহাউদ্দিন নাছিম ও জেলার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদককে দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করার পরামর্শ দেন। জানা গেছে, অধিক বিরোধপূর্ণ জেলার সমাধান করবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা নিজেই। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নেত্রীর ভিশন-৩০ ঘোষণাও শুনেছি। সে রকম সহায়ক সরকারের ঘোষণাও কি বলবেন, আমরা তো মুখে কুলুপ এঁটে দেয়নি। সবার সবকিছু বলার স্বাধীনতা আছে। টকশোতেও আমাদের বিরুদ্ধে যা খুশি বা অশ্রাব্য ভাষায় বলার অধিকারেও আমরা হস্তক্ষেপ করিনি। অনেক সময় আমাদের নেত্রীসহ আমাদের অনেককে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেও কেউ কেউ কথা বলছে। তারপরও কিন্তু আমরা ফ্রিডম স্পিচ এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করিনি। আমাদের নেত্রীকে আগে বেগম জিয়া ‘হাছিনা হাছিনা’ বলতেন, এখনও বলছেন। এখন তার অনুসারীরাও শেখ হাসিনা বলা ছেড়ে দিয়েছেন। তারাও তাদের নেত্রীকে অনুসরণ করে হাছিনা হাছিনা বলা শুরু করেছেন। এজন্য তো কেউ গিয়ে তাদের প্রেস বিফ্রিংয়ে বাধা দেয়নি। তারা তাদের বিদ্বেষপ্রসূত সেই মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, এই মিথ্যাচারই তাদের দুর্বলতার প্রতীক। এই মিথ্যাচার করে, আগামী নির্বাচনে প্রত্যাশিত বিজয় থেকে আওয়ামী লীগকে ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না। মিথ্যাচার করে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয় ঠেকানো যাবে না। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সম্মেলনের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল বলেন, দেশে এই মুহূর্তে বন্যা পরিস্থিতি বিরাজমান। তবে আমি আপনাদের এটুকু বলতে পারি, আশা করি, শীঘ্রই জানতে পারবেন ছাত্রলীগের সম্মেলন কবে হবে এবং খুব বেশি দেরি হবে না। তিনি বলেন, ছাত্রলীগের মিটিংয়ে যে আলাপ-আলোচনা হয়েছে, তর্ক-বিতর্ক হয়েছে; সেটা আওযামী লীগেও আমরা করি। একটু আগে সম্পাদকম-লীর মিটিংয়েও আমরা বিতর্ক করেছি। বিতর্কই হচ্ছে গণতন্ত্রের প্রাণ। বিতর্ক করতে হবে। কথা বলার অধিকার দিতে হবে। মুখ বন্ধ করা যাবে না। সবাই মন খুলে কথা বলুক। পাশাপাশি বন্যাকবলিত এলাকায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকার নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান কাদের। এছাড়াও আগামী ২০ জুলাই ব্রাক্ষণবাড়িয়া এবং ১৬জুলাই দক্ষিণ চট্টগ্রামে প্রতিনিধি সভার কথা জানান ওবায়দুল কাদের। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মাহবুবউল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, এনামুল হক শামীম, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, অসীম কুমার উকিল, হাবিবুর রহমান সিরাজ, আব্দুস সবুর, ফরিদুর নাহার লাইলী, ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরা, শামসুন্নাহার চাপা, দেলোয়ার হোসেন, হারুনুর রশীদ, ড. হাছান মাহমুদ, ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া ও আমিনুল ইসলাম আমিন।
×