ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ফুঁসে উঠছে যমুনা

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ১৪ জুলাই ২০১৭

ফুঁসে উঠছে যমুনা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ফুঁসে উঠছে উত্তরাঞ্চলের প্রধান নদী যমুনা। বৃহস্পতিবার থেকে নদীটির পানি বিপদসীমার ৮৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এক সপ্তাহ ধরে বন্যাকবলিত এলাকায় নদীগুলোর পানি কমার কোন লক্ষণ নেই। এদিকে নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে নদের পাড়ে তীব্র খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানি সঙ্কট দেখা দিয়েছে। গাইবান্ধায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতির কারণে ২ শিশুর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। দেখা দিয়েছে খাদ্য ও পানির সঙ্কটের। এছাড়াও বন্যাকবলিত হয়ে বন্ধ হয়ে গেছে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় সাড়ে ৫শ’ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, প্রধান সব নদীরগুলোর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত সমতলে কোন নদীর পানি কমার সম্ভাবনা তারা দেখছে না। যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে টাঙ্গাইলের ভুয়াপুরে নতুন করে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এলাকায় ৮ পরিবার এখন পর্যন্ত গৃহহারা। এছাড়াও একই কারণে হুমকির মুখে পড়েছে বঙ্গবন্ধু সেতু-তারাকান্দা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। সারিয়াকান্দির চরাঞ্চলে ২ দিনে নদী ভাঙ্গনে ৫শ’ পারিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে। জামালপুর, কুড়িগ্রাম এবং সিরাজগঞ্জে সাড়ে ৫শ’ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যাকবলিত হয়ে বন্ধ হয়ে গেছে। শিক্ষা কার্যত্রম ব্যাহত হওয়ায় দিশেহারা কমলমতি শিক্ষার্থীরা। সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে বন্যার্তরা পর্যাপ্ত ত্রাণ পাচ্ছেন না। এলাকার কয়েকশ’ একর ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, তাদের সমতলের ৯০টি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের মধ্যে বৃহস্পতিবার ৫৭টি কেন্দ্রের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে ১৪টি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তারা জানায়, যমুনাসহ ধরলা, ঘাঘট, ব্রহ্মপুত্র, আত্রাই ধলেশ্বরী কপোতাক্ষ, সুরমা কুশিয়ারা কংস নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তারা জানায়, সবচেয়ে বেশি পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে যমুনা নদীর পানি। এ নদীতে বুধবার সর্বোচ্চ ৭৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও বৃহস্পতিবার তা বেড়ে বিপদসীমার ৮৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বাহাদুরাবাদ ঘাট এলাকায়। এছাড়াও সিরাগঞ্জে এ নদীর পানি ৭৩ সেন্টিমিটার এবং কাজিপুরে ৬৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তারা জানায়, ব্রহ্মপুত্র যমুনা নদীর পানি সমতলে ২৪ ঘণ্টায় বৃদ্ধি পাবে। ৪৯ ঘণ্টার মধ্যে তা স্থিতিশীল হয়ে পড়তে পারে। অপরদিকে গঙ্গা, যমুনার নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলেও এখন তা বিপদসীমারও ওপরে ওঠেনি। তবে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্ককরণ কেন্দ্রের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান জানান, গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি সমতলে আগামী ৪৮ ঘণ্টা বৃদ্ধি পারে। এছাড়া সুরমা কুশিয়ারা নদীর পানি সমতলে ৪৮ ঘণ্টায় স্থিতিশীল থাকতে পারে। বিশেষজ্ঞরা জানান, ভারি বর্ষণের পাশাপাশি উজান থেকে নেমে আসার পানি কারণেই নদীগুলোতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। তারা জানান, বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন রাজ্যে ভারি বর্ষণ চলে। ফলে অসম, মণিপুর, অরুণাচল সিকিম আর পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাঞ্চল এবং ভুটানে ভারি বৃষ্টির কারণে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। ওইসব এলাকার বন্যার পানি গতিপথ বাংলাদেশ নদনদীসমূহ। এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাঞ্চলীয় এলাকা আলিপুরদুয়ার জেলায় সঙ্কোশ নদীর পানি বিপজ্জনক পর্যায়ে চলে গেছে। তোর্ষা নদীর পানির স্তরও বাড়ছে। সিকিম থেকে আসা অন্যান্য নদীর পানিও বাড়ছে দ্রুত। কয়েকদিন ধরেই আসামের বিভিন্ন নদী এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি চলছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উজানে বন্যার্ত এসব নদীর পানি একমাত্র গতিপথ দেশের নদীসমূহ। এ কারণে দেশের অধিকাংশ নদীর পানি এখন বিপদসীমারও ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, দেশের ওপর দিয়ে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় অবস্থায় রয়েছে। এ কারণে আগামীতে বৃষ্টির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। আর ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে নদনদী অববাহিকায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলেও সতর্ক করে দিয়েছেন তারা। জামালপুর ॥ জেলার বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। বন্যায় জেলার ইসলামপুর, মাদারগঞ্জ, মেলান্দহ ও সরিষাবাড়ী উপজেলায় দেড় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। এর মধ্যে ইসলামপুর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি বন্যা দেখা দিয়েছে। টানা সাতদিনের বন্যায় ইসলামপুরের সাতটি ইউনিয়নে দুর্গতদের মাঝে তীব্র খাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ত্রাণের জন্য বন্যাদুর্গতদের মাঝে হাহাকার বিরাজ করছে। বন্যাদুর্গত গ্রামগুলোয় সব নলকূপ তলিয়ে গেছে। দেখা দেয় বিশুদ্ধ খাবার পানির সঙ্কট। বন্যায় রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় পাঁচটি ইউনিয়নের ইসলামপুর উপজেলার যোগাযোগ সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এছাড়া মাদারগঞ্জ, মেলান্দহ ও সরিষাবাড়ী উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে বন্যা দেখা দিয়েছে। সারা জেলায় ২৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জলমগ্ন হয়ে পড়ায় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বুধবার রাত থেকে ইসলামপুর উপজেলায় আরও নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। দুর্গতরা পাশের উঁচু বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন। কারও বাড়িতেই রান্না করে খাবার জো নেই। শুকনো খাবার ও বিস্কুট চানাচুর খেয়ে জীবন ধারণ করছেন। গাইবান্ধা ॥ ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বৃহস্পতিবার জেলায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে। গত দু’দিনে বন্যার পানিতে ডুবে সদর উপজেলার কামারজানি ইউনিয়নে বুধবার রাতে স্বপ্না খাতুন এবং বৃহস্পতিবার দুপুরে ফুলছড়ি উপজেলার কাবিলপুরে পিনহা নামে দুটি শিশু মারা যায়। বন্যাকবলিত এলাকার পানিবন্দী মানুষরা খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানি সঙ্কট, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাসহ নানা সমস্যায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। গবাদি পশু, হাঁস-মুরগি নিয়েও তাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে নদী ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে সদর উপজেলার কামারজানি ইউনিয়নের গো-ঘাট এলাকায় অব্যাহত ভাঙ্গনে এখন বিপন্ন। বন্যায় ২৪১ হেক্টর জমির পাট, আউশ ধান, আমন বীজতলা ও শাকসবজি বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৮১ কি.মি. সড়কও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় ৪টি উপজেলার ১২৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। ভূঞাপুর, টাঙ্গাইল ॥ যমুনার পানি আকস্মিক বৃদ্ধির কারণে ভূঞাপুরের বিভিন্ন চরাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী এলাকা প্লাবিত হয়ে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে লক্ষাধিক মানুষ। ভাঙ্গনে গৃহহীন হয়ে পড়েছে প্রায় ৮ শতাধিক পরিবার। হুমকিতে বঙ্গবন্ধু সেতু-তারাকান্দা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। আতঙ্কে এলাকাবাসী। গত এক সপ্তাহের পানি বৃদ্ধিতে উপজেলার গাবসারা, অর্জুনা ও নিকরাইল ইউনিয়ন পুরোটাই, ভূঞাপুর পৌরসভা ও গোবিন্দাসী ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামে বিপদসীমার ৪৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে পানিবন্দী রয়েছে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। তলিয়ে গেছে শত শত একর ফসলি জমি। ভাঙ্গনে গৃহহীন হয়ে পড়েছে অর্জুনা, চুকাইনগর, কুঠিবয়ড়া, জগৎপুড়া, রাজাপুর, ফলদাপাড়া, রামপুর, বিহারী, বাসুদেবকোল, চন্দনী, রুলিপাড়াসহ অর্ধশতাধিক গ্রামের প্রায় ৮ শতাধিক পরিবার। হুমকির মুখে রয়েছে আরও নতুন কয়েকটি গ্রাম। নদী থেকে ৪০ ফুট দূরুত্ব রয়েছে কুঠিবয়ড়া বাজার ও বঙ্গবন্ধু সেতু-তারাকান্দা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। যে কোন সময় বাঁধটি চলে যেতে পারে যমুনা গর্ভে। বাঁধটি ভেঙ্গে গেলে প্লাবিত হবে ভূঞাপুর, গোপালপুর ও ঘাটাইল উপজেলার কয়েক লাখ পরিবার। সিরাজগঞ্জ ॥ বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। জেলার পাঁচ উপজেলার ৩০ ইউনিয়নের ২২৪ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। সিরাজগঞ্জ সদর, কাজীপুর, বেলকুচি, চৌহালী এবং শাহজাদপুর উপজেলার ১৬৬ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ প্রতিদিনই নতুন নতুন নতুন এলাকা বন্যাকবলিত হয়েছে। পাশাপাশি নদী ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। ফলে বন্যাকবলিত এলাকার দুর্ভোগ বেড়ে চলেছে। বেলকুচি ॥ দুই সপ্তাহ ধরে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে সদর ও বড়ধুল এই দুই ইউনিয়নের মানুষ পুরোপুরি পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। এছাড়া রাজাপুর, দৌলতপুর ও বেলকুচি পৌর এলাকার কিছু অংশের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এছাড়া এসব ইউনিয়নের শত শত একর ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। পানিবন্দীদের মাঝে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানি ও ওষুধের সঙ্কট। বুধবার সকালে সরকারীভাবে সামান্য ত্রাণ দেয়া হলেও বেসরকারী কোন ত্রাণ সহায়তা পৌঁছেনি এখনও। এদিকে মাঠ তলিয়ে যাওয়ায় বন্যার্ত এলাকায় গবাদিপশুর খাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে। কুড়িগ্রাম ॥ ধরলা ব্রক্ষপুত্র ও দুধকুমোর নদ-নদীর পাড়ে চলছে তীব্র খাদ্য ও পানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বন্যাকবলিত ধরলা, ব্রক্ষপুত্র, দুধকুমোর, তিস্তাসহ ১৬টি নদ-নদীর অববাহিকার ৪০৫টি চর-দ্বীপচরের পানিবন্দী অধিকাংশ মানুষ পুরোপুরি দিনমজুরির ওপর নির্ভরশীল। তাদের ঘরে মজুদ খাবার শেষ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। জেলার ৯টি উপজেলার ৬৫টি ইউনিয়নের নদ-নদী তীরবর্তী অধিকাংশ গ্রাম বন্যার পানিতে পুরো তলিয়ে রয়েছে। চারদিকে পানি আর পানি। গ্রামীণ কাঁচা-পাকা সড়কগুলো পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় অন্য অন্য গ্রামগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়েছে। ব্রক্ষপুত্র আর ধরলা নদীর প্রবল স্রোত বয়ে যাচ্ছে যাত্রাপুর ও পাঁচগাছি ইউনিয়নের ১৮টি ওয়ার্ডের সবকটি গ্রামে। এ দুটি ইউনিয়নে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ৬ হাজার পরিবার কর্মহীন হয়ে খাদ্য কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। দুঃসহ এক সঙ্কট পরিস্থিতি মোকাবেলা করছে তারা। একবেলা আধাপেটা খাবার জুটছে তো দু-তিন বেলা উপোস। দারুণ রকম কষ্টে পড়েছে গবাদি পশুগুলো। খাবার এবং থাকার অভাবে তাদের জীবনও হয়ে উঠেছে ঝুঁকিপূর্ণ। নীলফামারী ॥ তিস্তা নদীর পানিতে নীলফামারীর ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার ১০ ইউনিয়নে বিভিন্ন চর ও গ্রামের তিন হাজার পরিবার এখনও পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছেন। এদিকে উজানের ঢল ও বৃষ্টিপাত না থাকায় তিস্তা নদীর বন্যা পরিস্থিতি বেশ উন্নতি ঘটেছে। বগুড়া ॥ বগুড়ায় যমুনা নদীর পানি বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত না বাড়লেও বিপদসীমার ৫৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। চর এলাকায় তীব্র নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। গত দু’দিনে নদী ভাঙ্গনে বন্যাকবলিত সারিয়াকান্দির চরবেষ্টিত ৩টি ইউনিয়নের ৪৮০টি পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে। এসব পরিবারের অনেকেরই বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। অপরদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, গত ১২ ঘণ্টায় যমুনার পানি স্থিতি অবস্থায় রয়েছে। বগুড়ার যমুনা তীরবর্তী ৩ উপজেলা সারিয়াকান্দি সোনাতলা ও ধুনটের ৯২টি গ্রামের প্রায় ৭২ হাজার মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত্র হয়েছে সারিয়াকান্দি উপজেলা। এখানে বন্যাকবলিত হয়েছে ৫৮টি গ্রামের ১১ হাজার ৭২০টি পরিবার। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পদক্ষেপ এদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে দেশের বন্যার ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে বন্যার কারণে ১৪ জেলায় উঠতি ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার জন্য আমন মৌসুমে আমন উৎপাদনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার আগাম প্রস্তুতি হিসেবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের হার্টিকালচার সেন্টার, কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট এবং কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনে অধীনে প্রয়োজনীয় আমন বীজতলা তৈরি এবং চারা উত্তোলনপূর্বক কৃষকদের সহায়তা করার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এছাড়া পরীক্ষামূলকভাবে ১৪ জেলায় ৫৬ উপজেলায় কলার ভেলার ভাসমান ৭০০টি আমন ধানের বীজতলা তৈরির কর্মসূচী নেয়া হয়েছে। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে সম্ভাব্য বন্যার ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় পর্যাপ্ত রোপা আমন ধানের বীজ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের হাতে মজুদ রয়েছে। আপদকালীন সময়ে এসব বীজ বিতরণ করা হবে।
×