ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ফ্রান্সের জাতীয় দিবসে প্যারিসে তিন দেশের সরকার প্রধানের বৈঠক

বিতর্ক এড়াতে ফ্রান্সে ট্রাম্প

প্রকাশিত: ০৩:৪৪, ১৪ জুলাই ২০১৭

বিতর্ক এড়াতে ফ্রান্সে ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার প্যারিস পৌঁছেছেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তাকে জেতাতে রুশ হস্তক্ষেপ তীব্রতর হওয়ার পটভূমিতে তিনি সাময়িকভাবে অবসর পেতে এ সফর করছেন। এ বিতর্কে সর্বশেষ যুক্ত হয়েছে বড় ছেলে ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়রের নাম। সফরের সময় ট্রাম্প ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রনের মধ্যে ওয়াশিংটন-ইইউ সম্পর্ক, জলবায়ু, বাণিজ্য, সন্ত্রাসবাদ এবং সিরিয়া ও ইরাকে আইএসের বিষয়ে আলোচনা প্রাধান্য পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এএফপি। ট্রাম্পের এ সংক্ষিপ্ত সফর বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও জাকজমকে ঠাসা থাকবে। ১৪ জুলাই ফ্রান্সের স্বাধীনতা দিবস ও ঐতিহাসিক বাস্তিল দুর্গ পতন উপলক্ষে উৎসবে এবার ট্রাম্প প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেবেন। এর আগে তিনি নেপোলিয়ানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাবেন এবং আইফেল টাওয়ারে এক জমকালো ডিনার পার্টিতে অংশ নেবেন। ট্রাম্প ও ফ্রান্সের সদ্য নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রো চ্যাম্প এলিসিতে সৈনিকদের কুজকাওয়াজ প্রত্যক্ষ করবেন। এ সময় তারা প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ফ্রান্সের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের অংশগ্রণের এক শ’ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিশেষ ফলক উন্মোচন করবেন। জি ২০ সম্মেলন থেকে দেশে ফিরে বুধবার ট্রাম্প ছেলে ট্রাম্প জুনিয়রের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন। রুশ আইনজীবীর সঙ্গে কথোপকথনের বিষয়ে ইমেইল প্রকাশ করায় তিনি ছেলের স্বচ্ছতার দারুণ প্রশংসা করেন। গত নবেম্বরে হোয়াইট হাউস জয়ে ক্রেমলিন তাকে সহায়তা করেÑ এ ধরনের হৈচৈকে তিনি পলিটিক্যাল ‘উইচ হান্টের’ সঙ্গে তুলনা করে পুনরায় এর নিন্দা করেন। ৩৯ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রন আশা করছেন, তিনি ইতিহাসের গুরুত্ব ও ফ্রান্সের মহানুভবতা দিয়ে খামখেয়ালি ট্রাম্পকে বাগে আনতে পারবেন। লন্ডন, বার্লিন, ব্রাসেলস এবং প্যারিসে ইউরোপিয়ান নেতারা বিস্ময়চিত্তে ভাবছেন কিভাবে সবচেয়ে ভাল উপায়ে ট্রাম্পকে সামলানো যায়। তার জাতীয়তাবাদী ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতি ট্রান্সআটলান্টিক সম্পর্ককে বাধাগ্রস্ত করছে। ম্যাক্রো হোয়াইট হাউসের নতুন অধিকারীর সঙ্গে একটা মজবুত সম্পর্ক স্থাপনের আশা করছেন, যেটা তাকে মার্কিন নীতিকে প্রভাবিত করতে সাহায্য করবে। কমপক্ষে তাকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও ওয়াশিংটনের মধ্যকার গুরুতর বাধাসমূহ এড়াতে সাহায্য করবে। ইতোমধ্যেই তাদের মধ্যে জলবায়ু ও বাণিজ্যিক বিষয়সমূহ নিয়ে উদ্বেগ বিরাজ করছে। ট্রাম্প গত বছর খোলাখুলিভাবেই ইইউয়ের প্রতি নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখান এবং চলতি মার্চে এ্যাঞ্জেলা মেরকেলের সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতে করমর্দনের সময় তার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। প্যারিসের সায়েন্সেস পো বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষজ্ঞ বারট্রান্ড বাদাই ট্রাম্পকে ইঙ্গিত করে বলেন, যার কৌশলই পুরোপুরি রহস্যময় এবং যার নজর শুধু নিজ দেশের জাতীয় স্বার্থের প্রতি নিবদ্ধ তার সঙ্গে দাবা খেলা বেশ মুশকিল। যদি আপনি মনে করেন কোন বিষয়ে তার মত পরিবর্তন করতে পারবেন আপনার সে কল্পনা পাগলামির সমান। সিএনএনের নতুন ভিডিও ॥ মার্কিন টিভি নেটওয়ার্ক সিএনএন বুধবার এক ভিডিও প্রকাশ করেছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে যে, মার্কিন নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের অভিযোগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রধান সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের সঙ্গে ট্রাম্প দিনার করছেন। ২০১৩ সালের ১৫ জুন মিস ইউএসএ সুন্দরী প্রতিযোগিতা চলার সময় এ ভিডিওটি ধারণ করা হয় বলে সিএনএন দাবি করেছে। সিএনএন এটাকে ট্রাম্প ও আজারবাইজানি রুশ আগালারভ পরিবারের মধ্যে উষ্ণ সম্পর্ক আদান-প্রদানের এক নতুন আখ্যান হিসেবে বর্ণনা করেছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে যে, ট্রাম্প ধনকুবের আরাস আগালারভ, তার ছেলে পপস্টার এমিন ও তার পাবলিসিস্ট রব গোল্ডস্টোনের সঙ্গে প্রাণবন্ত আলোচনায় মশগুল রয়েছেন। গোল্ডস্টোনের সঙ্গে ট্রাম্প জুনিয়রের ইমেইল চালাচালির বিষয়টি সামনে আসায় নির্বাচনে ট্রাম্পকে জেতাতে রিপাবলিকান শিবিরের সঙ্গে মস্কোর আঁতাতের বিষয়ে চলতি তদন্তে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে।
×