ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বোলিং কোচ জহির খান, বিশেষ ভূমিকায় রাহুল দ্রাবিড়

শাস্ত্রীর শাস্ত্রেই আস্থা রাখছে ভারত

প্রকাশিত: ০৬:২৫, ১৩ জুলাই ২০১৭

শাস্ত্রীর শাস্ত্রেই আস্থা রাখছে ভারত

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ভারতের প্রধান কোচ হিসেবে রবি শাস্ত্রীকে নিয়োগের মতো এমন নাটকীয়তা দেশটির ক্রিকেট ইতিহাসে আর কখনই হয়নি। মঙ্গলবার দিনভর প্রভাবশালী সব গণমাধ্যমে পর্যন্ত একের পর এক ভিন্ন রকমের সব খবর বেরোতে থাকে। সকালে শোনা যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর শেষে অধিনায়ক কোহলি দেশে ফিরলেই চূড়ান্ত ঘোষণা দেবে শচীন-সৌরভদের কোচ বাছাই কমিটি। দুপুরেই বিশেষ সূত্রের বরাত, শাস্ত্রীই নতুন কোচ, আবার সন্ধ্যায় টুইটারে স্বয়ং বোর্ড (বিসিসিআই) সেক্রেটারি আমিতাভ চৌধুরীর সেটি অস্বীকার। তবে শেষ পর্যন্ত সাবেক ডিরেক্টর ও জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার শাস্ত্রীকেই বেছে নিয়েছে ক্রিকেটের পরাশক্তি। নতুন খবর, ২০১৯ বিশ্বকাপ পর্যন্ত বোলিং কোচ করা হয়েছে সাবেক তারকা পেসার জহির খানকে। এ সময় বিশেষ ভূমিকায় দেখা যাবে রাহুল দ্রাবিড়কে। ‘দ্য ওয়াল খ্যাত’ সাবেক এই ব্যাটসম্যান কেবল বিদেশ সফরের সময় দলের ব্যাটিং পরামর্শক হিসেবে কাজ করবেন। সবার চুক্তিই দুই বছরের জন্য। ‘আমি খুশি যে ছেলেদের মাঝে ফিরতে পারছি। আবার ভারতীয় ড্রেসিং রুমে ফিরছি, এটা ভেবেই উত্তেজিত। ছেলেদের সঙ্গে পুনর্মিলন হচ্ছে, এরচেয়ে সুখের আর কি হতে পারে!’ বলেন এই মুহূর্তে পরিবার নিয়ে লন্ডনে ছুটি কাটানো শাস্ত্রী। দীর্ঘমেয়াদী দায়িত্ব, লম্বা দৌড়ের পরিকল্পনা জানিয়ে তিনি আরও যোগ করেন, ‘নিজেদের সেরাটা দেয়া। ক্রিকেট দলগত খেলা। মাঠে টিম হয়ে খেলতে হবে, বাইরে টিম হয়েই চলতে হবে।’ শাস্ত্রীর অবশ্য কোহলিদের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা আগে থেকেই ছিল। ২০১৪ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ভারতের টিম ডিরেক্টরের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ২০০৭ সালে বাংলাদেশ সফরে ছিলেন দলের ম্যানেজারও। উল্লেখ্য, দারুণ সাফল্য সত্ত্বেও অধিনায়ক কোহলির সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে সম্প্রতি কোচের পদ থেকে পদত্যাগ করেন অনিল কুম্বলে। ভারত জাতীয় দলের কোচ পদের জন্য এক ডজন আবেদন জমা পড়েছিল। গ্রেট শচীন টেন্ডুলকর-সৌরভ গাঙ্গুলী ও ভিভিএস লক্ষণদের নিয়ে গঠিত কোচ বাছাই কমিটি সেখান থেকে বীরেন্দর শেবাগ, রবি শাস্ত্রী, লালচাঁদ রাজপুত, রিচার্ড পাইবাস ও টম মুডির ইন্টারভিউ নেয়। কুম্বলেকেও নিয়োগ দিয়েছিলেন শচীন-সৌরভদের কমিটি। কিন্তু অধিনায়কসহ সিনিয়র ক্রিকেটারদের সঙ্গে ঝামেলা হওয়ায় চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর হঠাৎই দায়িত্ব থেকে ইস্তফা দেন লিজেন্ডারি এই লেগস্পিনার। খবর বেরিয়ে ছিল কোহলির সঙ্গে প্রকাশ্য দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন কোচ। ফাইনালে চিরশত্রু পাকিস্তানের কাছে হেরে শিরোপা খোয়ায় ভারত। এরপর দলের সঙ্গে উইন্ডিজে না গিয়ে দেশে ফিরে আসেন কুম্বলে। শাস্ত্রীকে নিয়োগের ব্যাপারে নাটকের পেছনে কোহলির প্রভাব যে ব্যাপক সেটিও পরিষ্কার। কোহলিসহ সিনিয়ার ক্রিকেটারদের সঙ্গে তার সম্পর্ক খুবই ভাল। যে করে হোক তাকেই চাচ্ছিলেন অধিনায়ক। আর শচীন-সৌরভরা চাইছিলেন অধিনায়কের একগুইয়ে মনোভাব বদলাতে। আগেরদিনও সৌরভ বলেছিলেন, ‘কোচ কিভাবে কাজ করবেন, কোহলিকে সেটা বুঝতে হবে।’ শেষ পর্যন্ত শাস্ত্রীকে নিয়োগ দিলেও জহির-রাহুলদের অন্তর্ভুক্ত করে সৌরভরা এটাও বুঝিয়ে দিয়েছেন, সবকিছু কোহলি-শাস্ত্রীদের মন মতো হতে পারে না। কারণ বোলিং ও ব্যাটিং কোচ হিসেবে শাস্ত্রীর পছন্দ ছিলেন ভরত অরুণ ও সঞ্জয় বাঙ্গার।
×