ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

ফুল আর কথামালায় হায়াৎ মামুদের জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন

প্রকাশিত: ০৬:০১, ১৩ জুলাই ২০১৭

ফুল আর কথামালায় হায়াৎ মামুদের জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ‘আমি সুবক্তা নই। কোন অনুষ্ঠানে ঠিক সাজিয়ে কথা বলতে পারি না। পাছে কিভাবে কথা হারিয়ে যায়, সেই ভয় থাকে। খুব আনন্দের ব্যাপার যে, আজ আমরা অনেকেই জড়ো হয়েছি। আমার যত দোষ থাকুক, মানুষ যেন আমাকে ভালবাসে এটাই আমার প্রত্যাশা। পৃথিবীতে ভালবাসা ছাড়া কিছুই টিকে না। এই ভালবাসা নিয়েই যেন সকলে চলে যেতে পারি। সকলে ভাল থাকুক, ভালভাবে বাঁচুক এই প্রত্যাশা করি’- নিজের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে এভাবে অনুভূতি ব্যক্ত করেন শিশু সাহিত্যিক, অনুবাদক, প্রবন্ধিক শিক্ষাবিদ অধ্যাপক হায়াৎ মামুদ। জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে বুধবার বিকেলে অধ্যাপক হায়াৎ মামুদের ৭৮তম জন্মবার্ষিকীর আয়োজন করে সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন রঙ্গে ভরা বঙ্গ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণ করেন হায়াৎ মামুদের রাশিয়ার বন্ধু এলিনা ভাস ও নিজাম উদ্দিন। শুরুতে গানের মধ্যদিয়ে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী বুলবুল মহলানবীশ। তিনি পরিবেশন করেন রবীন্দ্রসঙ্গীত ‘এদিন আজি কোন ঘরে গো খুলে দিল দ্বার, আজি প্রাতে সূর্য ওঠা সফল হল কার’। পরে ‘ব্যাকরণে হায়াৎ মামুদ’ শীর্ষক সম্মাননাপত্র পাঠ করেন সংগঠনের সহ-সভাপতি ড. শওকত আরা হায়দার। এরপর হায়াৎ মামুদকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন সংস্কৃতিমন্ত্রী। পরে জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার পুরস্কার প্রদান করেন সংগঠনের সভাপতি হায়াৎ মামুদ। আঁকিবুঁকি আর্ট স্কুলের শিক্ষার্থীরা হায়াৎ মামুদকে একটি পোর্ট্রেট উপহার দেয়। ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানায় বাংলা একাডেমি ও অনিন্দ প্রকাশ। অনুষ্ঠানে হায়াৎ মামুদ গ্রাম পাঠাগার আন্দোলনকে শুভেচ্ছা হিসেবে কিছু বই প্রদান করেন। সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, হায়াৎ মামুদ চমৎকার একজন মানুষ। আমরা তাকে পেয়েছি আড্ডায়। অনেক প্রাণবন্ত তিনি। তিনি আনন্দে বাঁচেন ও আনন্দে থাকতে ভালবাসেন। তার সঙ্গে অনেক সময় কেটেছে আড্ডায়। সেখানে শিল্প সাহিত্য নিয়ে যেমন কথা হতো, তেমনি নানা রকম হাস্যরসও হতো। সেখানে তাকে আমরা পেয়েছি একজন সংস্কৃতিবান, সচেতন, সদালাপী ও প্রাণপ্রাচুর্যে ভরা মানুষ হিসেবে। সংস্কৃতিমন্ত্রী আরও বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর এদেশে যে কয়জন লেখক এ অন্যায়-অত্যাচার-অবিচারের বিরুদ্ধে শক্ত হাতে কলম ধরেছিলেন, তাদের মধ্যে হায়াৎ মামুদ অন্যতম। তিনি একজন আলোকিত মানুষ। তিনি যেমন সবসময় হাসিখুশি থাকতে ভালবাসেন, তেমনি যে কোন অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে তিনি আজীবন প্রতিবাদী। তিনি অসাম্প্রদায়িক, কল্যাণকামী ও মুক্তমনা একজন মানুষ। সভাপতির বক্তৃতায় শামসুজ্জামান খান বলেন, হায়াৎ মামুদ আমার বন্ধু। আমাদের বন্ধুত্বের বয়স ৫৮ বছর। তিনি অত্যন্ত সৃজনশীল একজন মানুষ। তার গদ্য লেখার হাত খুব চমৎকার। কবিতা তিনি তেমন লেখেননি। তবে যা লিখেছেন, তাতে মাধুর্য আছে। তার লেখালেখিতে আমরা সমৃদ্ধ হয়েছি এবং এখনও হচ্ছি। তার লেখা রবীন্দ্রনাথের কিশোর জীবনী খুবই অসাধারণ। সাহিত্য অঙ্গনে তিনি একজন প-িত এবং শিক্ষাবিদ হিসেবেও তিনি একজন বিচক্ষণ ব্যক্তি। তার সঙ্গে আমার অনেক আনন্দময় স্মৃতি রয়েছে। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর স্মরণসভা কাল জ্ঞানতাপস ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর ১৩২তম জন্ম ও ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক স্মরণসভার আয়োজন করা হয়েছে আগামীকাল শুক্রবার। স্মরণসভার আয়োজন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল এ্যালামনাই এ্যাসোসিয়েশন। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল প্রাঙ্গণে বিকেল ৪টায় আয়োজিত এ স্মরণসভায় প্রধান অতিথি থাকবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ শহীদুল্লাহ খন্দকার। প্রধান আলোচক থাকবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান। এর আগে এদিন সকাল ৯টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে অবস্থিত ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর সমাধিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ হবে। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ জন্মগ্রহণ করেন ১৮৮৫ সালের ১০ জুলাই এবং মৃত্যুবরণ করেন ১৯৬৯ সালের ১৩ জুলাই। বাংলাভাষার উৎকর্ষসাধন, ভাষার মর্যাদা সমুন্নত করা এবং ৫২’র ভাষা আন্দোলনে তার অবদান চিরস্মরণীয়। একুশে পদকের জন্য মনোনয়ন ও প্রস্তাব আহ্বান একুশে পদক প্রদান সংক্রান্ত নীতিমালা অনুযায়ী অন্যান্য বছরের ন্যায় ২০১৮ সালে সরকার কর্তৃক ভাষা আন্দোলন, শিল্পকলা (সঙ্গীত, নৃত্য, অভিনয়, চারুকলাসহ সকল ক্ষেত্রে), মুক্তিযুদ্ধ, সাংবাদিকতা, গবেষণা, শিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, অর্থনীতি, সমাজসেবা, রাজনীতি, ভাষা ও সাহিত্য এবং সরকার কর্তৃক নির্ধারিত অন্য কোন ক্ষেত্রে প্রশংসনীয় ও গৌরবোজ্জ্বল অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ব্যক্তি (জীবিত/মৃত), গোষ্ঠী, প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাকে একুশে পদক প্রদান করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে সরকারের সকল মন্ত্রণালয়/বিভাগ, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দফতর/সংস্থা, সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, সকল জেলা প্রশাসক এবং স্বাধীনতা পদক/একুশে পদকে ভূষিত সুধীবৃন্দকে ২ অক্টোবরের মধ্যে মনোনয়ন/প্রস্তাব সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে অনুরোধ জানিয়েছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। বুধবার সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি গণমাধ্যমকে অবহিত করে। একুশে পদকের জন্য মনোনয়ন/প্রস্তাব সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যাবলী, একুশে পদক নীতিমালা এবং মনোনয়ন প্রস্তাবের ফরম সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও তথ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েব সাইটে পাওয়া যাবে। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট ও তথ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকে প্রয়োজনীর তথ্য পাওয়া যাবে।
×