ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঠাকুরগাঁওয়ে যুবলীগ নেতার ছুরিকাঘাতে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা খুন

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ১৩ জুলাই ২০১৭

ঠাকুরগাঁওয়ে যুবলীগ নেতার ছুরিকাঘাতে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা খুন

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও, ১২ জুলাই ॥ সদর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সজিব দত্তের ছুরিকাঘাতে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের অর্থ সম্পাদক আবদুল মান্নান (৩৭) খুন ও ছাত্রলীগের সাবেক নেতা জুম্মন (৩২) আহত হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে এ ঘটনায় পুলিশ সন্দেহজনক যুবলীগের তিন কর্মীকে আটক করেছে। মঙ্গলবার ভোর রাতে শহরের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়েছে বলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেওয়ান মোহাম্মদ লালন আহম্মেদ নিশ্চিত করেছেন। আটকৃতরা হলোÑ খুনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত যুবলীগ নেতা সজিব দত্তের ভাই পিন্টু দত্ত (৩৫) ও যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শান্তর ভাই রতন (৪০) ও মুন্সিরহাট এলাকার ইউনুস আলীর ছেলে খাদেমুল ইসলাম (৪০)। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কয়েকদিন আগে সদর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সজিব দত্তের সঙ্গে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের অর্থবিষয়ক সম্পাদক আবদুল মান্নানের সঙ্গে সিগারেট খাওয়াকে কেন্দ্র করে হাতাহাতি হয়। এ সময় যুবলীগ নেতা সজিব দত্ত মান্নানকে পরে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পরবর্তীতে স্বেচ্ছাসেবকলীগের নেতা আবদুল মান্নান সজিব দত্তের বড় ভাই জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ দত্তকে বিষয়টি অবহিত করলে তিনি তার ভাইয়ের পক্ষ নিয়ে কথা বলে মান্নানকে শাসিয়ে সাবধান করে দেন বলে ওইসময় উপস্থিতি অনেকে বলেছেন। ওই ঘটনার জের ধরে যুবলীগ নেতা সজিব দত্ত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টায় আবদুল মান্নানকে শহরের মুন্সিরহাট এলাকায় দেখতে পেয়ে পেছন থেকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করতে থাকেন। একপর্যায়ে মান্নান মাটিতে লুটিয়ে যায়। এ সময় আবদুল মান্নানকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জুম্মনকে সজিব দত্ত ছুরিকাঘাত করে মোটরসাইকেল যোগে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন আবদুল মান্নান ও জুম্মনকে উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে আনার পথে মান্নান অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে পথিমধ্যে মারা যায়। আর জুম্মনকে ঠাকুরগাঁও হাসপাতাল থেকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ভর্তি করেন। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের অর্থবিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মান্নান খুনের ঘটনায় পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহত আব্দুল মান্নানের মৃত্যুতে স্ত্রী, সন্তান ও স্বজনদের আহাজারিতে এলাকার আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। পরিবারের স্বজন ও এলাকাবাসী খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত যুবলীগ নেতা সজিব দত্ত ও তার সহযোগীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন। নিহত আব্দুল মান্নানের মা রেজিয়া বেওয়া বলেন, আমার ছেলেকে যারা মেরেছে তাদের ফাঁসি চাই। মান্নানের মৃত্যুর পরে এখন তার স্ত্রী, সন্তানদের নিয়ে আমি কোথায় যাব? নিহতের স্ত্রী জেমসিন আক্তার জানান, আমার স্বামী ছিল পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী। দুই কন্যাশিশু নিয়ে এখন আমাকে পথে বসতে হবে। আমার স্বামীর হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই। পুলিশ বুধবার ভোর পর্যন্ত খুনের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে তিনজনকে আটক করছে বলে নিশ্চিত করেছেন। পুলিশ লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছেন। পুলিশ এখন পর্যন্ত খুনের সঙ্গে জড়িত মূল হোতার কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি।
×