ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

৪৬ বছরেও ন্যায়পাল নিয়োগ না হওয়ায় হাইকোর্টে রিট

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ১৩ জুলাই ২০১৭

৪৬ বছরেও ন্যায়পাল নিয়োগ না হওয়ায় হাইকোর্টে রিট

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ৪৬ বছরেও ন্যায়পাল নিয়োগ না দেয়ায় সংবিধানের ৭৭ অনুচ্ছেদ অনুয়ায়ী ন্যায়পাল নিয়োগের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। সুপ্রীমকোর্টের এক আইনজীবী এই রিটটি করেছেন। অন্যদিকে একই আইনজীবী সওগাত পত্রিকার সম্পাদক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন ও বেগম পত্রিকার সম্পাদক নূরজাহান বেগম এবং সাহিত্যিক রোকনুজ্জামান খান দাদা ভাইয়ের স্মৃতি বিজড়িত ১২৭ বছরের ‘নাসির উদ্দিন স্মৃতি ভবন’ হেরিটেজ হিসেবে সংরক্ষণ করার জন্য আইনী নোটিস পাঠিয়েছেন। এদিকে বিচারিক নিম্ন আদালতের বিচারকদের বদলি, পদোন্নতি ও শৃঙ্খলামূলক বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ সংক্রান্ত সুপ্রীমকোর্টের জেনারেল এ্যাডমিনিস্ট্রেশন কমিটি (জিএ) পুনর্গঠন করা হয়েছে। রিটকারী আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ বলেন, বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের বেঞ্চে শুনানি হতে পারে। বুধবার তিনি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় জমা দেয়া এই রিট আবেদনে সংবিধানের ৭৭ অনুচ্ছেদ ও ১৯৮০ সালের আইনের আওতায় ন্যায়পাল নিয়োগে সরকারের ‘নিষ্ক্রিয়তা’ প্রশ্নে রুল চেয়েছেন। স্পীকার, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইন সচিব ও রাষ্ট্রপতির সচিবকে রিটে বিবাদী করা হয়েছে। রিটকারী আইনজীবী সাংবাদিকদের বলেন, “সংবিধানের ৭৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ন্যায়পাল নিয়োগের বিধান রয়েছে। তাছাড়া ন্যায়পাল নিয়োগে ১৯৮০ সালে আইন হলেও সে আইন কার্যকর করা হয়নি।” সংবিধানের ৭৭ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “সংসদ আইনের দ্বারা ন্যায়পালের পদ-প্রতিষ্ঠার জন্য বিধান করিতে পারবেন।” “ন্যায়পাল আইনের ৩ ধারা অনুযায়ী সংসদের সুপারিশ অনুসারে রাষ্ট্রপতিকে ন্যায়পাল নিয়োগের ক্ষমতা দেয়া হয়। কিন্তু দীর্ঘ ৪৬ বছরেও সরকার ন্যায়পাল নিয়োগ দেয়নি। এতে সরকার সংবিধানের ৭৭ অনুচ্ছেদ এবং একইসঙ্গে ১৯৮০ সালের ন্যায়পাল আইনের ৩ ধারা লঙ্ঘন করেছে।” সরকারের এ ‘নিষ্ক্রিয়তা’ অবৈধ ঘোষণার আর্জি জানানো হয়েছে তার রিট আবেদনে। লিগ্যাল নোটিস সওগাত পত্রিকার সম্পাদক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন ও বেগম পত্রিকার সম্পাদক নূরজাহান বেগম এবং সাহিত্যিক রোকনুজ্জামান খান দাদা ভাইয়ের স্মৃতি বিজড়িত ১২৭ বছরের ‘নাসির উদ্দিন স্মৃতি ভবন’ হেরিটেজ হিসেবে সংরক্ষণ করার জন্য আইনী নোটিস পাঠানো হয়েছে। বুধবার দুপুরে নূরজাহান ও রোকনুজ্জামান খান দাদা ভাইয়ের কন্যা ফ্লোরা নাসরিন খানের পক্ষে স্বরাষ্ট্র সচিব, সংস্কৃতি সচিব, প্রতœতত্ত্ব বিভাগের মহাপরিচালক, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার, গে-ারিয়া থানার ওসি, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের চেয়ারম্যানকে এই নোটিস পাঠান আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভবনটি হেরিটেজ হিসেবে সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় হাইকোর্টে রিট করা হবে। নোটিসে বলা হয়, সওগাত সম্পাদক নাসির উদ্দিন, বেগম সম্পাদক নূরজাহান বেগম এবং শিশু সহিত্যিক রোকনুজ্জামান খান দাদা ভাই গে-ারিয়ার নারিন্দা এলাকার শরৎগুপ্ত রোডের বাড়িতে বসবাস করতেন। যেটি ‘নাসির উদ্দিন স্মৃতি ভবন’ নামে পরিচিত। ১৮৯০ সালের দিকে কিশোরগঞ্জের কোন এক হিন্দু জমিদার এটি তৈরি করেছিলেন। তাই ১২৭ বছরের এ বাড়িটিকে হেরিটেজ হিসাবে সংরক্ষণ করা যেতে পারে। সম্প্রতি নূরজাহানের ছোট মেয়ের জামাই এ বাড়ি ভেঙ্গে বহুতল ভবন তৈরির চেষ্টা করছে। বিষয়টি উল্লেখ করে বাড়িটি সংরক্ষণের জন্য ফ্লোরা খান ৬ জুলাই প্রতœতত্ত্ব অধিদফতরের কাছে আবেদন করেন। কিন্তু এতে তারা সাড়া দেননি। কিন্তু সংবিধানের ২৪ অনুচ্ছেদ অনুসারে বাড়িটি সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। জিএ কমিটি পুনর্গঠন বিচারিক নিম্ন আদালতের বিচারকদের বদলি, পদোন্নতি ও শৃঙ্খলামূলক বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ সংক্রান্ত সুপ্রীমকোর্টের জেনারেল এ্যাডমিনিস্ট্রেশন কমিটি (জিএ) পুনর্গঠন করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে এ কমিটি পুনর্গঠনের আদেশ জারি করা হয়। বুধবার সুপ্রীমকোর্টের রেজিস্ট্রার অফিস সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে নতুন কমিটিতে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন, হাইকোর্টের বিচারপতি মোঃ আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি মোঃ নূরুজ্জামান ও বিচারপতি সৌমেন্দ্র সরকার। এর আগের কমিটিতে বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন, বিচারপতি জিনাত আরা ও বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ছিলেন।
×