ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বহির্বিশ্বে এটাই প্রথম ॥ উদ্বিগ্ন ভারত

জিবুতিতে সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করছে চীন

প্রকাশিত: ০৫:০২, ১৩ জুলাই ২০১৭

জিবুতিতে সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করছে চীন

নিজদেশের বাইরে চীনের প্রথম সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করতে ‘আফ্রিকার শৃঙ্গ’ নামে পরিচিত এলাকার দেশ জিবুতির পথে চীনা সেনারা রওনা হয়েছে বলে রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে। খবর বিবিসি অনলাইনের। চীন জানিয়েছে, ঘাঁটিটি আফ্রিকা ও পশ্চিম এশিয়ায় শান্তিরক্ষা ও মানবিক সহায়তার কাজে ব্যবহৃত হবে। পাশাপাশি ঘাঁটিটি সামরিক সহযোগিতা, নৌ-মহড়া ও উদ্ধার তৎপরতায় ব্যবহার করা হবে। চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় গুয়াংজু প্রদেশের ঝিয়ানজিয়াং বন্দর থেকে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের বহনকারী কয়েকটি জাহাজ মঙ্গলবার জিবুতির উদ্দেশে রওনা হয়েছে। যদিও কতজন সেনাসদস্য বা কতটি জাহাজ জিবুতির পথে রয়েছে তার নির্দিষ্ট সংখ্যা বা কখন থেকে ঘাঁটিটি কাজ শুরু করবে তা জানানো হয়নি। মঙ্গলবার রাতে এক সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদনে সিনহুয়া জানায়, ‘জিবুতিতে একটি সাপোর্ট বেস স্থাপন করতে’ সামরিক বাহিনীর সদস্যদের বহনকারী জাহাজগুলো চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দর ঝানজিয়াং থেকে রওনা হয়েছে।চীনের নৌবাহিনীর কমান্ডার শেন জিনলং ‘জিবুতিতে ঘাঁটিটি তৈরি করার আদেশটি পড়ে শুনিয়েছেন’ বলে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। তবে কবে থেকে ওই ঘাঁটিটি আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করবে সে বিষয়ে প্রতিবেদনে কিছু বলা হয়নি। দু’দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সমঝোতা ও উভয় দেশের জনগণের অভিন্ন স্বার্থে ঘাঁটিটি স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয় বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। এতে আরও বলা হয়, আফ্রিকা ও পশ্চিম এশিয়ায় মানবিক ত্রাণ ও শান্তিরক্ষা এবং নৌবাহিনীর জাহাজগুলোকে সুরক্ষা দেয়া ইত্যাদি মিশনে চীনের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবে এই ঘাঁটিটি। ঘাঁটিটি দেশের বাইরে সামরিক সহযোগিতা, যৌথ মহড়া, সাগরে চীনা স্বার্থের সুরক্ষা ও জরুরী উদ্ধার তৎপরতার মতো দায়িত্বও পালন করতে পারবে। পাশাপাশি যৌথভাবে গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সমুদ্রপথের নিরাপত্তা বজায় রাখতে পারবে। ভারত মহাসাগরের উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত জিবুতিতে চীনের সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের এই পরিকল্পনায় উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছে ভারত। কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থিত জিবুতিতে গত বছর থেকে একটি সরবরাহ ঘাঁটি তৈরি করতে শুরু করে চীন। নির্দিষ্টভাবে সোমালিয়া ও ইয়েমেন উপকূলের সাগরে শান্তিরক্ষা ও মানবিক মিশনে অংশগ্রহণকারী চীনা নৌবাহিনীর জাহাজগুলোতে সরবরাহ অব্যাহত রাখাই এর উদ্দেশ্য। যদিও বেজিং এটিকে ‘সরবরাহ স্থাপনা’ বলে অভিহিত করছে। এটি বহির্বিশ্বে চীনের প্রথম নৌঘাঁটি। বুধবার এক সম্পাদকীয়তে রাষ্ট্রপরিচালিত গ্লোবাল টাইমস বলেছে, আনুষ্ঠানিকভাবে ‘সরবরাহ ঘাঁটি’ বলা হলেও এটি একটি সামরিক ঘাঁটি। নিশ্চিতভাবে এটি দেশের বাইরে গণমুক্তি ফৌজের প্রথম ঘাঁটি এবং সেখানে সেনা ঘাঁটিও থাকবে। এটি কোন বাণিজ্যিক সরবরাহ পয়েন্ট নয়। চীনের সামরিক স্থাপনা চীনের নিজস্ব নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ও বিশ্বের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করার কোন বিষয় এতে নেই। মাত্র আট হাজার ৯৫৮ বর্গমাইলের দেশ জিবুতি সুয়েজ খালের রুটে লোহিত সাগরের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রবেশপথের পাশে অবস্থিত।
×