ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

করবিনের দ্বারস্থ হওয়ায় সমালোচনার মুখে মে

প্রকাশিত: ০৫:০২, ১৩ জুলাই ২০১৭

করবিনের দ্বারস্থ হওয়ায় সমালোচনার মুখে মে

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে গত মঙ্গলবার সরকার পরিচালনায় নতুন নতুন ধারণা দিয়ে নীতিনির্ধারণে সহায়তা করার জন্য লেবার পার্টিসহ অন্যান্য দলের প্রতি আহ্বান জানাবেন বলে যে বক্তব্য রেখেছিলেন, তাতে রক্ষণশীল দলের পেছনের সারির পার্লামেন্ট সদস্যরা তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। খবর ইন্ডিপেনডেন্ট। আপাত দৃষ্টিতে প্রধানমন্ত্রীর এই আহ্বান রাষ্ট্র পরিচালনায় সকলের সহযোগিতা কামনার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বলা যেতে পারে, রাষ্ট্রনায়কোচিত ভূমিকার জন্য তাকে প্রশংসাও করা যেতে পারে। কিন্তু অতীতে বিশেষ করে নির্বাচনী প্রচারাভিযান চলাকালে টেরেসা মের উন্নাসিক আচরণ ও লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিনের প্রতি তার ব্যক্তিগত আক্রমণের কথা সকলেরই মনে থাকার কথা। বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করবেন বলে শতভাগ আস্থাশীল টেরেসা মে তখন তার বিরোধীদের ‘ব্রেক্সিটের’ পথে বাধা ও অন্তর্ঘাতমূলক চক্রান্তে জড়িত বলে অভিযোগ করেন। জেরেমি করবিনকে একজন আনাড়ি ও দুর্বল নেতা বলে উল্লেখ করে তিনি বলেছিলেন, করবিন ব্রেক্সিট নিয়ে আলোচনা করতে গেলে তার কাপড় খুলে পড়ে যাবে। সে সময় টেরেসার দলীয় সদস্যরা এ নিয়ে বেশ হাসি-ঠাট্টার রসদ খুঁজে পায়। কিন্তু করবিন কোন ব্যক্তিগত আক্রমণের জবাব না দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় তখন চুপ ছিলেন। এবার তার কাছেই টেরেসা সরকার পরিচালনায় গঠনমূলক সমালোচনা ও ধ্যানধারণা দিয়ে সহযোগিতা কামনা করা হলে টোরি দলের সদস্যদের আত্মসম্মানে দারুণ আঘাত লাগে। বিভিন্নজন বিভিন্নভাবে টেরেসার সমালোচনায় মুখর হয়ে ওঠে। টেরেসার এই পদক্ষেপের সমালোচনা করে ডেসমন্ড সোয়েন নামের এক সাবেক মন্ত্রী বিরোধী দলের নেতার সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখে চলার পরামর্শ দেন। তা না হলে অতিঘনিষ্ঠতা বিপদের কারণ হতে পারে বলে তিনি সতর্ক করে দেন। কেননা, সরকার পরিচালনায় টেরেসার ব্যর্থতা করবিনের জন্য প্লাস পয়েন্ট হিসেবে যোগ হবে। প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে যে এসব রাজনীতিক কূটচাল বোঝেন না, তা নয়। কিন্তু নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর পর তার নিজ দলেই তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে, এটি জানতে পেরে তিনি তার ক্ষমতা সংহত করার জন্য জেরেমি করবিনসহ অন্যদের তার পাশে রাখতে চাইছেন। ইতোমধ্যে তিনি খবর পেয়েছেন, আগামী গ্রীষ্মের আগেই ব্রেক্সিট বিষয়ক মন্ত্রী ডেভিড ডেভিস ও তার সমর্থকরা তাকে দলীয়প্রধানের পদ থেকে অপসারণ করার তৎপরতা শুরু করে দিয়েছে। টেরেসা মে তাই বিরোধীদলীয় সদস্যদের প্রতি নৈতিক সমর্থন কামনা করছেন।
×