ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

হাড়ে হাড়ে বুঝেছি!

প্রকাশিত: ০৩:৩৮, ১৩ জুলাই ২০১৭

হাড়ে হাড়ে বুঝেছি!

আমার পরিবারের সবার জ্বর। ১০-১২ দিন হয়ে যাচ্ছে তবুও ভাল হচ্ছে না। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করানো হচ্ছে। পরিচিত অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম শুধু আমার পরিবারের না সারাদেশের একই অবস্থা। অবশ্য সবার যে চিকুনগুনিয়া তা কিন্তু নয়। তবে জ্বর নামক ভাইরাসে সবাই আক্রানÍ। ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া ভাইরাসজনিত জ্বর যা এডিস মশার মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকে। এটি হলে সাধারণত জ্বর ১শ’ ডিগ্রীর ওপরে থাকবে সেই সঙ্গে হাড়ে হাড়ে প্রচুর ব্যথা। মাথা ব্যথা ত থাকবেই। অস্থিসন্ধি ফুলে ওঠা সেই সঙ্গে প্রচুর ব্যথা। ৩ থেকে ৪ দিনের মধ্যেই চিকুনগুনিয়া ভাল হয়ে যাওয়ার কথা। সাধারণ চিকিৎসাতেই ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া সেরে যায় তবে হেমোরেজিক ডেঙ্গু হলে যথেষ্ট ভয়ের কারণ থাকে। শরীরের বিভিন্ন জোড় বা জয়েন্টে প্রচুর ব্যথা হয় এবং ভাল হওয়ার পরও অনেক সময় দীর্ঘদিন ধরেই এই ব্যথা সহ্য করতে হয়। অনেক পরিবারে এবারের ঈদের পুরো আনন্দটাই মাটি হয়ে গেছে এই ভাইরাসের প্রভাবে। শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধা কেউ বাদ নেই। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে সাধারণত দীর্ঘদিন শরীর দুর্বলতায় ভুগতে হয়। তবে মৃত্যু হতে পারে এমনটা যদিও কোন ডাক্তার বলেনি কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে তাই হলো কুমিল্লার লাকসামের সাংবাদিক সামছুল করিম দুলাল এর সে চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরন করলেন। চিকুনগুনিয়া মারাত্মক আকার ধারণ করে মস্তিষ্কে প্রভাব পড়লে তিনি মাত্র ৪২ বছর বয়সেই সবাইকে কাঁদিয়ে পৃথিবীর মায়া ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হলেন। মানুষ মরণশীল। মরবে এটাই স্বাভাবিক তবে এমন তরুণ বয়সে জ্বরের কারণে মৃত্যুর কাছে হার মানতে হবে তা খুব সহজেই কেউ মেনে নিতে পারবে না। চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হলে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোন ওষুধ খাওয়া একেবারেই ঠিক নয়। অযথা এ্যান্টিবায়োটিক সেবনে কোন লাভ নেই। সর্বোচ্চ প্যারাসিটামল ট্যাবলেট খাওয়া যেতে পারে। সেই সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে পানি, স্যালাইন, লেবুর রস ও ডাবের পানি খাওয়া উচিত। দিনের বেলা ঘুমালেও মশারি ব্যবহার করতে হবে। মশার আবাসস্থল, আশপাশে ফেলে রাখা পাত্র, কলসি, বালতি, ড্রাম ইত্যাদিতে যেন পানি জমে না থাকে সেই দিকে সবার বিশেষ নজর রাখতে হবে। বাড়ির আশপাশের খালবিল, ডোবানালা অপরিষ্কার থাকলে অবশ্যই তা পরিষ্কার করাতে হবে। এমনিতেই বিভিন্ন দুর্যোগের শিকারে আমরা মারাত্মকভাবে নাজেহাল। তার ওপর আবার মশার উপদ্রবে দেশজুড়েই আতঙ্ক। তথ্য সূত্রে জানা যায় বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর মশার উপদ্রব অনেক বেশি। রাজধানীতে মশক নিধনে বছরে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করলেও শহরবাসী পাচ্ছে না তেমন কোন প্রতিকার। দুই সিটিতেই মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ শহরবাসী। মশার ওষুধ ছিটাতে সংশ্লিষ্ট মহলের যথেষ্ট গাফিলতি রয়েছে বলে নগরবাসীর অভিযোগ রয়েছে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে এই ভাইরাসের আক্রমণ থেকে কেউ বাদ পড়বে না। এমতাবস্থায় রাজধানীসহ দেশের জেলা উপজেলাগুলোতেও সরকারি উদ্যোগে মশা নিধনের ওষুধ ছিটানোর প্রয়োজন বলে মনে করছি। গাজীপুর, ঢাকা থেকে
×