মশা নিধনে সংশ্লিষ্ট বিভাগ সব চেষ্টাই করেছেন, কিন্তু তাদের চেষ্টা বিফলেই গেছে। যে জন্য দিনে-রাতে সারাক্ষণ মশার উৎপাত। রক্ত খেয়ে খেয়ে এক সময় কানের ধারে এসে গুণগুনিয়া গান শুনিয়ে চলে যায়। ওদের সামান্য মশা বললে ভুল হবে, এরা কিলারদের চেয়েও মারাত্মক। মানুষ বিপদে পড়লে তা করবেই। আমরা তো জানি, তাদের নিয়ন্ত্রণেই চিকিৎসক, নার্স, ব্রাদার ও অন্য স্বাস্থ্যকর্মীরা। তাদের এলাকায় এলাকায়, বাড়িতে বাড়িতে, ফ্ল্যাটে ফ্ল্যাটে যাওয়ার পরামর্শও তো দিতে পারেন। চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে চিকিৎসকরাও এলাকায় এলাকায় গিয়ে সাধারণ মানুষকে পরামর্শ দিতে পারে । আমরা তো জানি স্বাস্থ্য অধিদফতর এবং চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা সবাই মিলেমিশে থাকবেন মানবসেবায়। রাজধানীবাসী কী সেটা সেভাবে দেখছেন? নিশ্চয়ই না। প্রসঙ্গক্রমে বলতে বাধ্য হচ্ছি, শৈশবে ‘ডাক্তার’ নামে ছবিতে দেখেছিলাম, ছবির নায়ক মেডিক্যাল কলেজে ফাইনাল পরীক্ষা দিয়ে ট্রেনে বাড়ি ফিরছিলেন ঠিক তখনই শুনলেন, এক গ্রামে অর্ধেক লোক কলেরায় মারা গেছে। এ কথা শুনে তখনই সে ছুটে গেলেন ওই গ্রামে। নায়ক অমরনাথ (পংকজ কুমার মল্লিক) সঙ্কল্প নিলেন, তিনি গ্রামের আর একটি মানুষকেও কলেরায় মরতে দেবেন না। পণ করে কলেরা প্রতিরোধ করার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র নিয়ে ওই গ্রামেই বসবাস করেছিলেন। ঠিক ঠিকই একদিন কলেরা রোগ-প্রতিরোধও নির্মূল করলেন তিনি। পরবর্তীতে ওই নায়ক গ্রামে ‘পল্লী মঙ্গল সেবা সদন’ও গড়ে তুললেন মানব সেবার জন্য। বাস্তবে আজ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে এমনটি কী আর আছে? ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া হলে জনগণ না হয় নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যোগাযোগ করলেন। কিন্তু স্বাস্থ্য অধিদফতরের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদেরও তো কিছু দায়িত্ব নিয়ে জনগণের পাশে দাঁড়াতে হয়। এতে তাদের সুনাম হবে বৈকি। তার পরেও চিকুনগুনিয়া বা ডেঙ্গুতে মরলেও তখন আপত্তি ও অনুশোচনা থাকার কথা নয়। কেননা, বিপদে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা যে ছিলেন পাশে! তারা খোঁজখবর নিয়েছেন- এর চেয়ে বড় পাওয়া আর কিই বা হতে পারে। এ জন্য তাদের গ্রামে তো নয়, বরং খোদ রাজধানীতে থেকে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া থেকে রক্ষার জন্য প্রতিটি অলিগলিতে সবার ঘরে ঘরে গিয়ে কী প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেন না? খুব কাছে চিকিৎসক উপস্থিত হলে তো সবার মনে চিকুনগুনিয়া নিয়ে যে আতঙ্ক রয়েছে তা কিছুটা হলেও দূর হতো।
রূপনগর, ঢাকা থেকে
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: