ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আরডিএ চেয়ারম্যানের নিয়োগ নিয়েও প্রশ্ন!

প্রকাশিত: ০৬:৩৭, ১২ জুলাই ২০১৭

আরডিএ চেয়ারম্যানের নিয়োগ নিয়েও প্রশ্ন!

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ) চেয়ারম্যান পদে অধ্যক্ষ বজলুর রহমানের নিয়োগ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তার নিয়োগে বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। প্রথমে এক বছরের চুক্তিতে তাকে ওই পদে নিয়োগ দেয়া হয়। পরে আবারও দুই বছরের জন্য বাড়ানো হয় চুক্তির মেয়াদ। চুক্তির মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানোর জন্য ইতিমধ্যে তদবির শুরু করেছেন বজলুর রহমান বলে জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নিয়োগবিধিতে চেয়ারম্যান পদে সরকারী কর্মকর্তা ছাড়া বজলুর রহমানের মতো বেসরকারী কলেজের কোন শিক্ষককে নিয়োগ দেয়ার সুযোগ নেই। এ প্রেক্ষিতে ইতিমধ্যে বজলুর রহমানের নিয়োগ চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে রিট দাখিলের প্রস্তুতি নিয়েছেন সুপ্রীমকোর্টের এক আইনজীবী। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ২৮ আগস্ট বজলুর রহমানকে রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান পদে চুক্তিভিত্তিক ও শর্তসাপেক্ষে এক বছরের জন্য নিয়োগ দেয়া হয়। ২০১৫ সালের ২ সেপ্টেম্বর বজলুর রহমানের চুক্তির মেয়াদ পরবর্তী দুই বছরের জন্য বাড়ানো হয়। চুক্তির শর্তাবলী অনুযায়ী আগামী ৩১ আগস্ট বজলুর রহমানের চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব সেবাষ্টিন রেমা স্বাক্ষরিত বজলুর রহমানের নিয়োগ প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয় এ নিয়োগ কিছু শর্ত ও চুক্তির মাধ্যমে চেয়ারম্যানের ক্ষমতা ও সুযোগ সুবিধা নির্ধারিত। সূত্রগুলো থেকে জানা গেছে, রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ) নিয়োগ প্রবিধানমালা বা বিধি যা ২০০৬ সালের ২০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ গেজেটের অতিরিক্ত সংখ্যায় আইন হিসেবে জারি হয়, তাতে উল্লেখ রয়েছে ‘আরডিএর চেয়ারম্যান হিসেবে সরকার কর্তৃক অতিরিক্ত সচিব বা যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার কোন কর্মকর্তাকে প্রেষণে বদলির মাধ্যমে নিয়োগ করতে হবে। তবে বজলুর রহমানের ক্ষেত্রে সে শর্ত মানা হয়নি। নিয়োগবিধিমালা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, আরডিএর চেয়ারম্যান পদে অতিরিক্ত সচিব বা যুগ্ম-সচিব পদাধিকারী কর্মকর্তা ছাড়া আর কারও নিয়োগের কোন সুযোগ নেই। আরডিএর এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, চেয়ারম্যান পদে বজলুর রহমানের চুক্তিভিত্তিক এই নিয়োগ পুরোপুরি অবৈধ। আদালতে তাঁর নিয়োগ চ্যালেঞ্জ করে মামলা করলে নিয়োগ বাতিল হয়ে যাবে। এদিকে নিয়োগের সরকারী প্রজ্ঞাপনে ‘মোঃ বজলুর রহমান’ লেখা হলেও আরডিএ ভবনের দোতলায় চেয়ারম্যানের দফতরের দরজার ওপর লেখা রয়েছে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ মোঃ বজলুর রহমান’। আরডিএর একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, চেয়ারম্যানের দফতরের দরজায় নামের আগে একাধিক টাইটেল লাগিয়ে বজলুর রহমান নিজেকে জাহির করেছেন। বজলুর রহমান কোন এক বেসরকারী কলেজের বাংলার শিক্ষক ছিলেন কিন্তু অধ্যক্ষ ছিলেন কিনা তাও নিশ্চিত করতে পারেননি এই কর্মকর্তা। এদিকে আরডিএর বনলতার প্লট কেলেঙ্কারির পর আলোচনায় আসে বজলুর রহমান। বড় আয়তনের সব প্লট নিজের নামে ও কর্মকর্তাদের নামে নিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছেন তিনি। দুদক তার দুর্নীতি তদন্তে প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। মামলার অনুমতি চেয়ে দুদকের সদর দফতরেও পাঠানো হয়েছে। সর্বশেষ রবিবার বজলুর রহমানকে অপসারণের দাবিতে নগরীতে বিক্ষোভ ও সমাবেশে হয়েছে।
×