ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যয় হবে ৩২৫০ কোটি টাকা

চট্টগ্রামের জন্য এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প অনুমোদন

প্রকাশিত: ০৬:৩১, ১২ জুলাই ২০১৭

চট্টগ্রামের জন্য এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প অনুমোদন

হাসান নাসির, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রাম নগরীতে ৩ হাজার ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হবে সাড়ে ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। এতে নগরীর যানজট পরিস্থিতির উন্নতির পাশাপাশি উন্মোচিত হবে দক্ষিণ চট্টগ্রামের অপার সম্ভাবনার দ্বার। এ মেগা প্রকল্পের বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে সরকারের বিবেচনায় আসে নিকট ভবিষ্যতে শিল্পসমৃদ্ধ দক্ষিণ চট্টগ্রামের সঙ্গে বন্দরনগরীর কানেক্টিভিটি স্থাপন। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্ব্ েএকনেক সভায় চূড়ান্তভাবে অনুমোদিত হওয়ার পর এ নিয়ে আর কোন অনিশ্চয়তা নেই। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক)। চউক সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জুলাই থেকে আগামী তিন বছরে অর্থাৎ ২০২০ সালের জুনের মধ্যে শেষ করা হবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ। দ্রুততার সঙ্গে দরপত্র আহবান, ঠিকাদার নিয়োগ এবং সার্বিক প্রাথমিক কাজগুলো সম্পন্নের পর শুরু হয়ে যাবে কর্মযজ্ঞ। চট্টগ্রাম নগরীর মুরাদপুর থেকে লালখানবাজার পর্যন্ত সাড়ে ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ একেবারেই শেষ পর্যায়ে। এর একপাশে যানবাহন চলাচল শুরু হয়ে গেছে। নতুন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শুরু হয়ে লালখানবাজারে এসে আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের সঙ্গে মিলিত হবে। এতে নগরীর প্রধান সড়কটিতে যানজটজনিত ভোগান্তি অনেকটাই দূর হবে, এমনই আশা করছেন চউকের বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের কর্মকর্তারা। চউক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম মঙ্গলবার জনকণ্ঠকে জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা আগেই পাওয়া গিয়েছিল। সে অনুযায়ী সমীক্ষাসহ প্রাথমিক বেশকিছু কাজ আগেই শেষ করে রাখা হয়েছে। ফলে কাজ শুরু করতে দীর্ঘসূত্রতায় পড়তে হবে না। চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শুরু হওয়া এ ফ্লাইওভারের ৯টি জংশনে মোট ২৪টি র‌্যাম্প থাকবে। ফলে যানবাহনগুলো এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠানামা করতে পারবে বেশ সহজেই। ২০২০ সালের মধ্যে এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রাম নগরীতে যানজট দূর হবে। কেননা, এরইমধ্যে শেষ হয়ে যাবে সিটি আউটার রিং রোড প্রকল্পের কাজ। তিনি বলেন, শুধু চট্টগ্রাম নগরীই নয়, এর মাধ্যমে দক্ষিণ চট্টগ্রামের সঙ্গে বন্দরনগরীর কানেক্টিভিটি সৃষ্টি হবে। দক্ষিণ চট্টগ্রামে আগামী ৫ বছরে প্রায় একলাখ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ হবে। এরমধ্যে রয়েছে বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল, শিল্প কারখানা, বিদ্যুত কেন্দ্র, পর্যটন কেন্দ্র এবং মহেশখালীতে ডিপ সী পোর্ট ও এলএনজি টার্মিনাল। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প অনুমোদন দেয়ার ক্ষেত্রে সরকার ভবিষ্যতে এ সম্ভাবনার বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার মেয়াদের শুরু থেকেই চট্টগ্রামের উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। কেননা, এ চট্টগ্রামেই রয়েছে দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর; যা আমদানি রফতানি বাণিজ্যের সিংহদ্বার হিসেবে বিবেচিত। এ বন্দরকে বলা হয় দেশের অর্থনীতির প্রাণ। তাছাড়া সরকারের বর্তমান পলিসি চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে উন্নয়ন অংশীদারিত্ব স্থাপন। আর অর্থনৈতিক সম্পর্ককে পূর্বমুখী করতে হলে চট্টগ্রামের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ঘটানো আবশ্যক। পূর্বদিকের দেশগুলোর আগ্রহও চট্টগ্রামকে ঘিরে। এ চট্টগ্রামেই ওইসব দেশের বিনিয়োগকারীরা শিল্প স্থাপনে আগ্রহী। আনোয়ারায় প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে চীনা অর্থনৈতিক জোন। এছাড়া মীরসরাই থেকে ফেনীর সোনাগাজী পর্যন্ত সমুদ্র উপকূলীয় এলাকায় দেশের বৃহত্তম অর্থনৈতিক জোনে বিনিয়োগে আগ্রহী এদেশগুলোর শিল্পোদ্যোক্তারা।
×