ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

চালের দাম কমছে ধীরগতিতে

প্রকাশিত: ০৪:০০, ১২ জুলাই ২০১৭

চালের দাম কমছে ধীরগতিতে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ঘোষণা অনুযায়ী রাজধানীর খুচরা বাজারে এতদিনে চালের দাম কমার কথা ছিল ৬ টাকা। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে চালের দাম কমেছে মাত্র ১ থেকে ২ টাকা। শনিবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, শেওড়াপাড়া, মহাখালী, কাওরানবাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। চাল আমদানিতে ২০ জুন নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক (আরডি) ও সম্পূরক শুল্ক (এসডি) প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয় সরকার। এতে চালের শুল্ক হার ২৮ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নেমে আসে। এছাড়া বিনা মার্জিনে চাল আমদানির ঋণপত্র খোলার সুযোগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এসব সুবিধা নিয়ে ভারত থেকে হাজার হাজার টন চাল আমদানি হচ্ছে। তবে এর সুফল শতভাগ পাচ্ছেন না ক্রেতারা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আমদানি শুল্ক কেজিপ্রতি ৬ টাকা কমানো হয়েছে। অথচ খুচরা বাজারে চালের দাম কমেছে মানভেদে ২ টাকা পর্যন্ত। ব্যসায়ীদের অতি মুনাফালোভী প্রবণতার কারণেই চালের দাম ধীরে কমছে বলে মনে করেন ক্রেতারা। রাজধানীর শেওড়াপাড়া, মহাখালী, কাওরানবাজার ঘুরে দেখা যায়, স্বর্ণা, আটাশ পাইজাম, চায়না ইরির মতো ভালমানের মোটা চাল আগের চেয়ে ২ টাকা কমে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকায়। আর নিম্নমানের মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৭ টাকা। প্রতি কেজিতে ২ টাকা কমেছে মিনিকেট ও নাজিরশাইলের মতো সরু চালেও। এসব চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৬ থেকে ৬০ টাকায়। এ বিষয়ে শেওড়াপাড়া বাজারের খুচরা চাল বিক্রেতা আমিনুল ইসলাম বলেন, ঈদের পরে সব ধনের চালের দাম ১ থেকে ২ টাকা কমেছে। পাইকারি বাজারে চালের দাম কমার কারণে তারাও কম দামে বিক্রি করছেন। শেওড়াপাড়া বাজারের ক্রেতা বোরহান উদ্দিন বলেন, দেশে কোন পণ্যের দাম একবার বেড়ে গেলে তা আর কমে না। চালের ক্ষেত্রেও মনে হয় তাই হচ্ছে। ঈদের আগে টিভিতে দেখলাম বাণিজ্যমন্ত্রী বললেন অল্প কিছুদিনের মধ্যে চালের দাম কেজিতে ৬ টাকা কমবে। কিন্তু ঈদের প্রায় ১৫ দিন পার হলেও বাজারে চালের দাম কমেছে মাত্র ১ থেকে ২ টাকা। ব্যসায়ীদের অতি মুনাফালোভী প্রবণতার কারণেই চালের দাম কমছে না বলে মনে করেন তিনি। এদিকে সরকারী বাজার নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) শনিবারের প্রতিবেদনে খুচরা বাজাদরের মূল্য তালিকায় দেখা গেছে, রাজধানীর বাজারগুলোতে মোটা চাল বিক্রি হয়েছে ৪৩ থেকে ৪৬ টাকা, গত সপ্তাহে যা ছিল ৪৬ থেকে ৪৮ টাকা। পাজাম এবং লতা উন্নত মানেরটা বিক্রি হয়েছে ৪৮ থেকে ৫০ টাকায়, গত সপ্তাহে যা ছিল ৫০ থেকে ৫২ টাকা। পাজাম ও লতা নিম্ন মানেরটা বিক্রি হয়েছে ৪৭ থেকে ৪৮ টাকায়, গত সপ্তাহে যা ছিল ৪৮ থেকে ৫০ টাকা। নাজিরশাইল ও মিনিকেট উন্নতমানেরটা বিক্রি হয়েছে ৫৬ থেকে ৫৮ টাকায়, গত সপ্তাহে যা ছিল ৫৮ থেকে ৬০ টাকা। এছাড়া সরু চাল বিক্রি হয়েছে ৫৪ থেকে ৫৮ টাকায়, গত সপ্তাহে যা ছিল ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের চালের আড়ত মেসার্স লক্ষ্মী ট্রেডার্সের ব্যবস্থাপক হারুন অর রশিদ জানান, ভারত থেকে আমদানি করা চাল পাইকারি বাজারে ৪১ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। শুল্ক কমার আগে এর দাম ছিল ৪৫ টাকা। খুচরা বিক্রেতারা কেজিতে অন্যূন ২ টাকা লাভ করে এ চাল বিক্রি করছেন। তিনি জানান, সবচেয়ে মোটা হিসেবে পরিচিত গুটি চাল পাইকারি বাজারে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কয়েকদিন আগে এটা বিক্রি হয়েছে ৪৫ টাকা কেজি দরে। দেশে উৎপাদিত সব চালের দাম একই হারে কমেছে বলে তিনি জানান। তবে পাইকারি বাজারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে খুচরা বাজারে চালের দাম কমছে না বলেও মনে করেন তিনি।
×