ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর বিজনেস ফোরামে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু

বাংলাদেশে বিনিয়োগে সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ীদের সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস

প্রকাশিত: ০৬:৩৫, ১১ জুলাই ২০১৭

বাংলাদেশে বিনিয়োগে সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ীদের সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশে বিনিয়োগে সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ীদের সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। সোমবার দুপুরে বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর বিজনেস ফোরামের উদ্বোধনকালে তিনি বলেন, সিঙ্গাপুর বাংলাদেশের বিশ্বস্ত বন্ধু। বিশ্বস্ত বন্ধু হিসেবেই আমরা সিঙ্গাপুরের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে চাই। আশা করছি, সিঙ্গাপুর এদেশের সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রে বিনিয়োগে এগিয়ে আসবে। মন্ত্রী বলেন, দুই দেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ভারসাম্য সিঙ্গাপুরের অনুকূলে রয়েছে। তা সত্ত্বেও গত এক দশক ধরে দ্ইু দেশের মধ্যে বাণিজ্য বেড়ে চলেছে। বিশেষ করে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দুই দেশের বাণিজ্যে গতি সঞ্চার হয়েছে। বিনিয়োগ প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, সিঙ্গাপুর বাংলাদেশের নেতৃত্বস্থানীয় বিনিয়োগকারী। সে হিসাবে আমরা আমাদের নিরাপত্তা, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ, পর্যটন এবং বিদ্যুত ও জ্বালানি খাতে সিঙ্গাপুরের বিনিয়োগ চাই। বিশেষ করে, পর্যটন খাতে দক্ষ মানব সম্পদ উন্নয়নে আমাদের সিঙ্গাপুরের সহযোগিতা প্রয়োজন। সিঙ্গাপুরের বিনিয়োগ বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশে সিঙ্গাপুরের বিনিয়োগ ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। দেশটির সরাসরি ও যৌথ বিনিয়োগের মাধ্যমে এদেশে ২৫ হাজার ৩৮৭ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া সিঙ্গাপুর বাংলাদেশী কর্মীদের একটি অনুকূল গন্তব্য। বাংলাদেশের রেমিটেন্সের একটি বড় উৎসও হচ্ছে এই দেশটি। সিঙ্গাপুর থেকে প্রতিবছর রেমিটেন্স বাড়ছে। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই এবং সিঙ্গাপুর বিজনেস ফেডারেশন (এসবিএফ) যৌথভাবে এই বিজনেস ফোরামের আয়োজন করে। এতে আরও বক্তব্য রাখেন সিঙ্গাপুর বিজনেস ফোরামের চেয়ারম্যান এস এস টিও, এফবিসিসিআইয়ের ভাইস-প্রেসিডেন্ট মুনতাকিম আশরাফ, বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী আমিনুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ বিজনেস চেম্বার অব সিঙ্গাপুরের প্রেসিডেন্ট মির্জা গোলাম সবুর। এসবিএফ চেয়ারম্যান এস এস টিও দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্যিক পরিস্থিতি তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশে এখন অনুকূল বিনিয়োগ পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। গত দুই বছর ধরে দেশটি সাত শতাংশের ওপর জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করে চলেছে। দেশটির অর্থনৈতিক ভিত্তিও বেশ শক্ত অবস্থানে রয়েছে। বড়চেয়ে বড় কথা হলো, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশে একটি বিশাল ভোক্তা শ্রেণী সৃষ্টি হয়েছে। যা বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। তিনি বাংলাদেশে সিঙ্গাপুরের বিনিয়োগ অবস্থা তুলে ধরে বলেন, সিঙ্গাপুর বাংলাদেশে নেতৃত্বস্থানীয় বিদেশী বিনিয়োগকারী। ইতোমধ্যে আমরা এদেশে ১৬শ’ ৩০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। এদেশের অবকাঠামো খাতে সিঙ্গাপুরের উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ রয়েছে। আগামী দিনগুলোতে এদেশে সিঙ্গাপুরের বিনিয়োগ আরও বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এদেশে বিনিয়োগের সম্ভাবনাময় খাত খুঁজে দেখতে সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ীরা এসেছে। আশা করছি, তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগের নতুন নতুন খাত খুঁজে বের করবে। বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী আমিনুল ইসলাম বলেন, সিঙ্গাপুর ব্যবসা ও শিক্ষায় অনেক এগিয়ে গেছে। বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়নে সিঙ্গাপুর মডেল হিসেবে অনুসৃত হতে পারে। বিশেষ করে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করতে সিঙ্গাপুর সহায়তা করতে পারে। তিনি বলেন, সিঙ্গাপুর আকারে ছোট দেশ হলেও অর্থনৈতিকভাবে অনেক বড়। ওই দেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য উন্নয়নে আমরা বেশ গুরুত্ব দিচ্ছি। এ উদ্দেশে আমাদের একটি প্রতিনিধি দল আগামী মাসে সিঙ্গাপুর যাবে। মির্জা গোলাম সবুর বলেন, বাংলাদেশে কিছু ব্যবসায়ী সিঙ্গাপুরে ব্যবসা করছে। তারা দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক উন্নয়নে সহায়তা করতে প্রস্তুত। তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ যত বৃদ্ধি পাবে সম্পর্ক তত জোরদার হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর দুই দেশের মধ্যে সরকারী-বেসরকারী পর্যায়ে সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তিনটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এগুলো হলো- সিঙ্গাপুর বিজনেজ ফেডারেশন ও বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি, এফবিসিসিআই ও সিঙ্গাপুর বিজনেস ফেডারেশন এবং বাংলাদেশ বিজনেস চেম্বার অব সিঙ্গাপুর (বিডিচেম)।
×