ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পাট থেকে পলিথিন

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ১১ জুলাই ২০১৭

পাট থেকে পলিথিন

(গতকালের পর) বাংলাদেশের বড়-ছোট সকল এনজিওর সঙ্গে পাটের বহুমুখী পণ্যের উৎপাদন ও প্রযুক্তি হস্তান্তরের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা বিশেষ করে আড়ংয়ের অন্তর্ভুক্ত গোষ্ঠী, শত এনজিওর কেন্দ্রীয় সংস্থা, আমরা করি, তরঙ্গ, পদাতিক, বাস্তে শিখি, করদি জুট, হিট বাংলাদেশ, আড়ং, মেনু লাইট সেন্ট্রাল কমিটি, পাট সমিতি, ডিএসকে, হ্যান্ডিক্র্যাফট কাউন্সিল, উবিনীগ, প্রবর্তনা, মানুষের জন্য করি, কুমুদিনী হ্যান্ডিক্র্যাফট, ঋসিজ সংস্থা, মুক্তির আলো, মি. বকুল, মহিলা পল্লী উন্নয়ন সংস্থা, বৃন্তা ফ্যাশন ওয়ার, সিডস, কলিসূচী শৈলী, মা ফ্যাশন, নকশী মেলা, জননী, দি সোর্স, শিল্পী বগুরা, সোহাগ জুট এ্যান্ড হ্যান্ডিক্র্যাফট, টাচ হ্যান্ডিক্র্যাফট, ডক্টরস ন্যাচারাল হ্যান্ডিক্র্যাফট এ্যান্ড ওরনামেন্টস, ফেয়ার ট্রেড ক্র্যাপ্ট, বি এ্যান্ড বি লেদার, মামনী জুট প্রডাক্টস। এ ছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ ও উত্তর অঞ্চলের ক্ষুদ্র জাতিসত্তাদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করে কুটির ও তাঁত শিল্পের মাধ্যমে বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদনের কাঁচামাল প্রযুক্তি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা এবং বাংলাদেশ কুটির শিল্প সংস্থা (বিসিক) এর বিভিন্ন প্রগ্রামে অংশগ্রহণ। বিদেশে যেমন কলকাতা, দিল্লী, নেদারল্যান্ডস, সুইডেন, বেলজিয়াম, ফ্রান্স, নেপাল, কাঠমান্ডু, জার্মানি, ব্রিটেন, দুবাই, পন্ডিচুরি ও অস্ট্রেলিয়া প্রভৃতি দেশে বহুমুখী পাট পণ্যের মেলায় অংশগ্রহণ করার জন্য উদ্যোক্তাদে সহয়তা প্রদান করা হয়। তেমনিভাবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে, বিভিন্ন বিশ^বিদ্যালয়ে, বিভিন্ন গবেষণাগারে পাট ও পরিবেশ বিষয়ে যারা গবেষণা ও উন্নয়নমূলক কর্মকা-ে নিয়োজিত আছেন তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা, পাট বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য ও তত্ত্ব প্রদান করা হয়। তেমনিভাবে বহুমুখী পাটজাত পণ্য প্রচার ও বিপণনের জন্য বিভিন্ন রকম লিফলেট, পোস্টার, বুকলেট প্রদান করা হয়। বিদেশী গবেষক, পরিবেশবিদ, উন্নয়নকর্মী, শিল্পপতি-উদ্যোক্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করা। প্রথম প্রকল্প অনুসারে ২০টি বৃহৎ বহুমুখী পাটশিল্প স্থাপন করার কথা ছিল, তাই প্রকল্পের নির্দেশনা মতো প্রতিটি পাট শিল্পপতিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা। আমাদের প্রচেষ্টায় প্রথম নয় মাসে নরসিংদীতে বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদনকারী স্কাইল্যন ফাম-(ঝশুষধহ ্ ঋধস) শিল্প প্রতিষ্ঠা লাভ করে। বহুমুখী পণ্য যেমন শপিংব্যাগ, ডেকোরেটিড হোম প্রডাক্ট, প্রটেক্ট সিট, নার্সারি সিট ও পট, ফ্লোর ম্যাট, ফার্নিশিং জাপানে রফতানি শুরু করে। এ ছাড়া সাদাত কুমিল্লায় এবং জনতা জুট মিল ঘোড়াশালে জেডিপিসির অর্থায়নে এবং প্রযুক্তির মাধ্যমে লিনেলিয়াম, নোনওভেন, সোয়েল সেভারসহ পাটের সুতা ও পাটবস্ত্রের বিভিন্ন রঙে রঞ্জিত করে প্রডাক্ট উৎপাদনের সহযোগিতা করা। তেমনিভাবে জাপানী মিৎসুবিসি ও জনতা জুট মিলের মাধ্যমে মটরকারের বিভিন্ন অংশ গ্লাস ফাইবারের পরিবর্তে জুট কম্পোজিট ব্যবহারের উৎপাদন বহুমুখী গবেষণা করার ব্যবস্থা করে দেয়া হয়। একইভাবে সোনালি আঁশ জুট মিলকে রুপটপ গর্ডেনিং (জড়ড়ভ ঞড়ঢ় এধৎফবহরহম)-এর জন্য বিশেষ ধরনের জুট জিওটেক্সটাইলস জাপানে বিপণনের জন্য যোগাযোগ করে দেয়া হয়। তেমনিভাবে ফরিদপুরে এইচ স্পিনিং ও মিনহাজ জুট মিলে পাটের চিকন সুতা উৎপাদন এবং বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদন ও বাণিজ্যিকীকরণের জন্য স্বল্প সুদে ব্যাংক লোন ও অনুদান প্রদান করা হয়। এ ছাড়াও ঢাকার কেরানীগঞ্জের জুট মিল, নরসিংদী মদিনা জুট মিলের বহুমুখী পাট পণ্য উৎপাদন ও বিপণনের ব্যবস্থায় সহযোগিতা করা হয়। ঢাকা বাগদাত কার্পেট, বেঙ্গল কার্পেট, ইসমাঈল কার্পেট প্রযুক্তিগত উন্নয়নের জন্য প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হয়। জেডিপিসির দ্বীতিয় পর্যায় আইজেএসজি/সিএফসি অর্থায়নে ঝসধষষ ঝপধষ ঊহঃবৎঢ়বহবৎংযরঢ় উবাবষড়ঢ়সবহঃ অহফ উরাবৎংরভরপধঃরড়হ ঙভ ঔঁঃব টংবং প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারতে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। উক্ত প্রকল্পের মাধ্যমে মূলত এসএমই সেক্টরে নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি করা, প্রযুক্তির প্রশিক্ষণ, ব্যাংকিং ও ফান্ড ম্যানেজ করা, বাজার এবং বাজার প্রচারের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা। উপরে উল্লিখিত ৩০০০ উদ্যোক্তাকে প্রাথমিকভাবে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে গ্লাসরুট লেভেলে (এষধংং জড়ড়ঃ খবাবষ) বহুমুখী পাটশিল্প গড়ে তুলতে প্রচেষ্টা গ্রহণ করেন যেমন : প্রবর্তনা/উবিনীগ (বিশেষ ধরনের শপিংব্যাগ, মিষ্টি ওয়াটার (গরংঃু ধিঃবৎ) পাটের ও সিল্কের মিশ্রণে অত্যন্ত চিকুন উঁচু মূল্যের বিদেশের রফতানিযুক্ত পরিধেয় বস্ত্র) নরসিংদীর নারায়ণপুরের জনাব অজিত কুমার, মুহাম্মদ আলী, কাজী মাহবুব, ইউনুস, ফজলু, ছালাম, বাবুরহাট, ডাঙ্গা ও কালীগঞ্জের অনেক উদ্যোক্তাকে এর সঙ্গে যুক্ত করা হয়। তেমনিভাবে মহিলা উদ্যোক্তা মিসেস নাসরীন আওয়াল (সভাপতি, ওয়েব, ঢাকা), মিসেস আনজুয়ারা (ওয়েব, রাজশাহী), মিসেস মাহমুদা বেগম সরিফা (বহুমূুখী মহিলা কল্যাণ সমিতি, রংপুর), মিসেস রুনা লায়লা (সমিত ইন্টারন্যশনাল, বারিধারা), প্রবাহ মহিলা উন্নয়ন সংস্থা (আটঘরিয়া পাবনা)-সহ রাজশাহীর আশরাফ কলী, নাছিমা খাতুন, সফুরা, রানী, সিলেটের হিমাংসু মিত্র, জনাব কালামান সিং, অনিতা দাস গুপ্ত, জনাব জুয়ারদার, রূপসা ডাইং এ্যান্ড প্রিন্টিং, ফতুল্লা এ্যান্ড প্রিন্টিং প্রমুখের সঙ্গে পাটের বহুমুখী পণ্য বিশেষ করে পাটের ব্যাগ, বিভিন্ন সেমিনার/সিম্পোজিয়াম বিভিন্ন ব্যাংকের এজিএম, বিভিন্ন স্কুল, বিভিন্ন কলেজ, বিভিন্ন ইউনিভার্সিটি, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রদান, বাংলা একাডেমির বইমেলাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে উপহার হিসেবে দেয়ার ব্যাপারে প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হয়। এমনকি পাটের জায়নামাজসহ হজযাত্রীদের পাটের ব্যাগ দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়। মোবাইল-মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন স্কুল, কলেজে বহুমুখী পাটপণ্যের পরিচিতিকরণ। উপরে উল্লিখিত বিভিন্ন ধরনের ছোট-বড় এনজিও, নন-এনজিও মহিলা-পুরুষভেদে ছোট কুটির শিল্প, তাঁতী, উপজাতি নির্বিশেষে বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদনের কারিগরি প্রশিক্ষণ ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন ও ব্যাংকিং বিষয়ে ট্রেনিং প্রদান করে ২৫০ জনকে নির্ধারিত করে বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদনের শিল্প স্থাপনের জন্য উল্লিখিত আইজেএসজি প্রজেক্টের মধ্যমে বেসিক ব্যাংকে গচ্ছিত সিএফসির বাংলাদেশের অনুদানের টাকা নগণ্য সুদে প্রদানের ব্যবস্থা করা হয় (৫০-৬০ কোটি টাকা)। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের সর্বোচ্চ কর্তাব্যক্তির অজ্ঞতা, ভুল সিদ্ধান্তের ফলে সম্পূর্ণ প্রকল্পটি ভেস্তে যায়। অথচ পাশাপাশি ভারতের অংশে বহুমুখী পাটপণ্যের ব্যাপক উন্নয়ন শুরু হয় এবং বিদেশের বিপুল পরিমাণ উত্তর উত্তর বাজার দখল করে চলেছে। রাশেদুল হক মুন্না (ক্রিয়েশন), সোহাগ, ইব্রাহিম মিয়া, কহিনূর (তরঙ্গ), দি সোর্স, সেলিম (শতরঞ্জি), মাহফুজ, তোফাজ্জেল, খলিল, মনির, ইমন, ঈসানা, জনি (গ্রীন ব্যাগিং), রেজভি (নালিতা) আরও অনেকে যুক্ত ছিলেন। জানি না তাদের কতজন বেঁচে আছেন এবং উন্নয়ন করে চলেছেন। সোনালী জুট মিল, বাংলাদেশের প্রখ্যাত বহুমুখী পাট উৎপাদনকারী শিল্প হলেও এটাকে আরও বিস্তৃত করার প্রেক্ষিতে ব্যাংক লোন প্রদান করলেও কি অজানা কারণে সেটা সম্প্রসারণ করেনি তা আমাদের জানা নেই, তেমনি করে সুপ্রিম জুট মিল, পূবালী জুট মিল, নওপাড়া জুট মিল, স্পাহানী জুট মিল, ইকোফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিসহ অনেক জুট মিল ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রুপ জেডিপিসির সহযোগিতা গ্রহণ করেনি এবং বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদনে এগিয়ে আসেনি। বিআইডিসির সহায়তায় স্বাধীনতার আগে বাংলাদেশে বাঙালীদের মালিকানা সরকারের সহায়তায় বেশকিছু পাটকল গড়ে ওঠে। মুক্তিযুদ্ধের পর সকল জুট মিল জাতীয়করণ করা হয়, পরবর্তীকালে বিজিএমসির তত্ত্বাবধায়নে অবাঙালীদের জুট মিলগুলো অন্তর্ভুক্ত রেখে বাকি বাঙালীদের মালিকানায় সকল জুট মিল বিরাজষ্ট্রীকরণ করে তাদের তত্ত্বাবধানে ছেড়ে দেয়া হয়। জমিসহ নানা রকম সুবিধা প্রদান করা হয়। মূলত নতুন ও অনভিজ্ঞ বিধায় শিল্প পরিচালনায় যথার্থ ব্যবস্থা সৃষ্টি করতে পারেনি। ফলে পরিচালনা, উৎপাদন, বিপণন ক্ষেত্রে আধুনিক ও যুগোপযোগী কোন কর্মপন্থা গ্রহণ করতে ব্যর্থ হন, এই সেক্টরে সৃষ্টি হয় এক অস্বাভাবিক অবস্থা। সরকারী ও বেসরকারী পর্যায় এ বিষয়ে চিন্তাশীল অভিজ্ঞ লোকের খুবই অভাব। কোন সমস্যা দেখা দিলে এটার মূলে না গিয়ে যেনতেনভাবে ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করে। মূলত এ সেক্টরের সর্বক্ষেত্রে শিক্ষিত, অভিজ্ঞ, ট্রেনিংপ্রাপ্ত জনবলের অভাব। সারা বিশে^ দিন দিন পরিবেশ সংরক্ষণ ও জলবায়ু বিবর্তন রোধে পাটের ব্যবহার বহুলভাবে পরিচয় লাভ করেছে। সিনথেটিক, ধাতব ও নন -ডেস্ট্রাক্টিভ অনবায়নযোগ্য উপাদানের পরিবর্তে নবায়নযোগ্য উপাদান গবেষণা ও উন্নয়নের বিষয়ে অনেক সাড়া পড়েছে, ফলে বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদনের বিষয়ে বিশ^ব্যাপী বিশেষ করে উন্নত বিশে^ গবেষণা ও উন্নয়নমূলক কাজ শুরু করেছে নিজ নিজ স্বার্থে। এ বিষয়ে নানা রকম বিরূপ কর্মকা-ের কথা শোনা যায়। অথচ আমাদের দেশে পূবালী জুট মিলসহ অনেক জুট মিল বন্ধ হচ্ছে অথবা উৎপাদন কমিয়ে দিচ্ছে। আবার কেউ কেউ বহুমুখী পাটপণ্য শিল্প স্থাপনের জন্য সরকারী জুট মিল লিজ নিয়ে হাউজিং/ স্টোরিং প্রভৃতি কাজে ব্যবহার করছে (ঈড়-ড়ঢ়বৎধঃরাব ঔঁঃব, কালিগঞ্জ)। লেখক প্রায় ৪০ বছর বিভিন্ন পর্যায়ে এই সেক্টরে কার্যরত থাকায় পাট পরিবারের একজন হিসেবে এখনও কোন কোন কাজে সংশ্লিষ্ট আছেন। এই দীর্ঘ সময়ে তিনি সব সময় শুনে এসেছেন পাটশিল্পে লস যাচ্ছে। পাট কৃষকরা কখনও পাটের ন্যায্যমূল্য পাই না, এমন কি হাটে বিক্রি করতে না পেরে পুড়িয়ে দিয়েছে এমন নজিরও ছিল। তবে আদমজী বন্ধের পর, এটার যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করে দেশের নানা স্থানে ৩০-৪০টি ছোট ছোট পাটকল চালু হয়েছে এবং তারা সকলেই লাভজনক ব্যবসা করছেন। পাট একটি কৃষিজ পণ্য, শিল্পের কাঁচামাল। তাই পাটচাষী ও পাট শিল্পপতির স্বার্থ বিপরীতমুখী। পাটশিল্পের সূচনা থেকে এই সমস্যা সমাধানের প্রচেষ্টা চলে। এমনকি অধুনালুপ্ত আইজেও/আইজেএসজি/এফএও প্রভৃতি ফোরামে বহু আলোচনা/স্টাডি (ঝঃঁফু)/ বাফার স্টক (ইঁভভবৎ ঝঃড়পশ) ইত্যাদি চিন্তা থাকলেও কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। পাট এ অঞ্চলের পণ্য হলেও ঐতিহাসিকভাবে এটার মূল্য নির্ধারণ হয় ইউরোপের একটি গোষ্ঠী দ্বারা। ইউরোপের ফ্লাক্সে দুর্লভ দেখা গেলে ইংল্যান্ডের ডান্ডিতে বাণিজ্যিকভাবে পাট শিল্প গড়ে ওঠে । মূলত, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি থেকে ব্রিটিশ ব্যবসাহীরা কাঁচাপাট ডান্ডিতে রফতানি করত। মূলত বস্তা/গ্যানিব্যাগ/সুতা, হেসিয়ান, ডানলভ ইত্যাদি ১৩-১৪টি পরিবহন ও প্যাকেজিং সামগ্রী উৎপাদন করে দেশ-বিদেশে রফতানি করত। এসব ব্যবসায়ীর সিন্ডিকেট পাট বিষয়ে সকল কিছু নির্ধারণ করত। ১৯৬৩ সালে ব্রিটিশ জুট ট্রেড এ্যাসোসিয়েশনের গবেষণা কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যায়। তবে ১৯৩৯ সালে কলকাতা ও ঢাকায় প্রাথমিকভাবে পাটের গবেষণা শুরু হয়। লেখক ইংল্যান্ডে পাটের ওপর গবেষণায় থাকাকালীন সময়ে পাটের ইতিবৃত্তি জানতে চেষ্টা করেন এবং বিশিষ্ট পাট গবেষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করার সুযোগ পান। কটন টেক্সটাইলের অপূর্ব উন্নয়ন ঘটলেও জুট টেক্সটাইলস কেন পিছিয়ে আছে। পাট ইউরোপে বা অন্য কোন উন্নত দেশের সম্পদ নয়। এতে তাদের কোন অগ্রাধিকার নেই। পাটের বিষয়ে আমাদেরই চিন্তা-ভাবনা করতে হবে। গত শতাব্দীর শেষ দিকে সিনথেটিকের এর বাহুল্য, পরিবহন ব্যবস্থায়, সিলিও (ঝরষড়), কন্টিনারাইজেশন (ঈড়হঃরহবৎরুধঃরড়হ) প্রভৃতি কারণে দেশ-বিদেশে মূলত উন্নত দেশগুলোতে পাটের ব্যবহার ভীষণভাবে হ্রাস পায়। ১৯৯৩ সালে নেদারল্যান্ডসের দি হ্যাগে আন্তর্জাতিক পাট সম্মেলন হয়। পাটের প্রচলিত পণ্যের সঙ্গে সঙ্গে বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদন, বিপণন ও গবেষণার জন্য সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ক্রমশ...
×