ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার মিথ্যা মামলাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ১১ জুলাই ২০১৭

সরকার মিথ্যা মামলাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশে কোন সরকার নেই উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মন্তব্য করেছেন এক ব্যক্তির শাসন, দুঃশাসন চলছে। ক্ষমতায় টিকে থাকতে সরকার মিথ্যা মামলাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। বিএনপির বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে ভয় দেখিয়ে কোন লাভ হবে না। বিএনপি এতে ভয় পায় না। মামলায় ভয় পাওয়া কিছু নেই উল্লেখ করেন তিনি। সোমবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনের ভাসানী ভবনে নগর বিএনপি (উত্তর) সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম ২০১৭ উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, বিরাজনীতিকরণের মাধ্যমে দেশকে গণতন্ত্র ও রাজনীতির বাইরে নিয়ে যেতে সরকার উঠে-পড়ে লেগেছে। এদের চরিত্র দ্বিমুখী। মুখে গণতন্ত্রের কথা বললে কাজে তারা বিশ্বাস করে না। পেশীশক্তিকে তারা বিশ্বাস করে। জিয়াউর রহমান সম্পর্কে তারা কটু কথা বলে। অথচ জিয়াউর রহমানই আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছেন। এ সময় তিনি উল্লেখ করেন, আওয়ামী লীগ চুতর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে ৭২-র সংবিধানে বিচারপতি অভিসংশনের ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে দিয়েছিল। দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এ সরকারের প্রধান অস্ত্র হচ্ছে মিথ্যা মামলা। তাই আসুন ঐক্যবদ্ধ হই। এখন নিজেদের মধ্যে কোন ভেদাভেদ নেই। একটাই কাজ এই সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা। প্রধানমন্ত্রীর অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না বলেও তিনি উল্লেখ করেন। এ কারণেই বিএনপি সহায়ক সরকারে অধীনে আগামী নির্বাচনের দাবি করছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না এই দাবি অতীতে আওয়ামী লীগের ছিল। দেশের রাজনীতিতে সংস্কৃতি চালু হয়েছিল যে, নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জনগণ যাকে ইচ্ছে তাকে ভোট দিতে পারত। কিন্তু আওয়ামী লীগ অনির্বাচিতভাবে ক্ষমতায় এসে সেই তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিল করেছে। তাই সরকারকে বলব দাম্ভিকতা ও অহংকার ছেড়ে মানুষের কথা চিন্তা-ভাবনা করে আলোচনার ব্যবস্থা করুন। কারণ সবাই এখন সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চায়। এদিকে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির এক অনুষ্ঠানে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী মন্তব্য করেন বিচার বিভাগের ওপর হস্তক্ষেপ নিশ্চিত হয়নি বলেই আজ আওয়ামী লীগের এত হতাশা ও ক্ষোভ। ষোড়শ সংশোধনী বাতিল হওয়ায় সংসদে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। আসলে তাদের কাছে ৭২ এর সংবিধান বিষয় নয়। তারা চেয়েছিল বিচার বিভাগকে নিজেদের মতো করে নিতে। সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে বিএনপির কারাবন্দী যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীর মুক্তির দাবিতে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এসব কথা বলেন। একই দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আসলাম চৌধুরী মুক্তি পরিষদের মানববন্ধনে পুলিশ বাধা দেয়ায় তাৎক্ষণিক ডিআরইউতে এই প্রতিবাদ সভা আয়োজন করা হয়। এ অনুষ্ঠানে রিজভী আরও বলেন, এই সরকার শহীদ প্রসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাসনকালকে অন্যায় এবং অন্যায্য বলছে। জিয়াউর রহমানের জন্ম না হলে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বাঁশিতে ফুঁ দেয়ার লোক মিলত না। একদলীয় শাসনের পরিবর্তে বহুদলীয় গণতন্ত্রের রাজনীতি বাংলাদেশে থাকত না। তিনি বলেন, ইসরাইলের এক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলার অপরাধে আসলাম চৌধুরীকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। পৃথিবীর বহু আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের লোক আসে। সেখানে অনেকের সঙ্গেই কথা হয়। তাহলে আসলাম চৌধুরীর অন্যায়টা কি? অনুষ্ঠানে অধ্যাপক জসীম উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জম হোসেন আলাল, কাদের গনি চৌধুরী, শফিউল বারী বাবু, আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল, সুশীল বড়ুয়া প্রমুখ।
×