ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শহীদের বিরুদ্ধে স্ত্রীর অভিযোগ বিসিবিতে

প্রকাশিত: ০৬:৪১, ১০ জুলাই ২০১৭

শহীদের বিরুদ্ধে স্ত্রীর অভিযোগ বিসিবিতে

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ক্রিকেটারদের ‘নারীঘটিত’ কা- যেন শেষই হচ্ছে না। একটি ঘটনা শেষ হতেই আরেকটি ঘটনা হাজির হয়। এবার যেমন পেসার মোহাম্মদ শহীদের বিরুদ্ধেও ‘নারীঘটিত’ অভিযোগ উঠেছে। সেই অভিযোগটি আবার খোদ শহীদের স্ত্রী ফারজানা আক্তারই দিয়েছেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কাছে অভিযোগটি করেছেন ফারজানা। দুপুরে হঠাৎ করেই বিসিবির কার্যালয়ে হাজির ফারজানা। বিসিবি সভাপতি বরাবর লিখিত অভিযোগ এনেছেন। তা দিয়েছেনও। দুই ছোট সন্তানকে নিয়ে বিসিবির দোয়ারে এসেছেন। চান সমস্যার সমাধান। বিসিবিও আশ্বস্ত করেছে সমাধানের। সেই সমাধান ত্বরিত গতিতে হয়েছেও। শহীদ এবং ফারজানার সঙ্গে সাংসারিক জীবনে ‘নারীঘটিত’ বিষয় নিয়ে যে ঝামেলা হয়েছে তা আপাতত মিটেছে। সাংবাদিকদের ফারজানা অবশ্য কোনভাবেই বিসিবি সভাপতির কাছে দেয়া অভিযোগ নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি। তিনি শুধু জানিয়েছেন, ‘বিসিবিকে জানানো হয়েছে। বিসিবি সভাপতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। ওরা ওর বাবাকে (শহীদ) ডেকে সব সমস্যার সমাধান করে দেবে বলেছেন।’ শহীদের বিরুদ্ধে ফারজানার অভিযোগ কী? তা অবশ্য মুহূর্তেই জানাজানি হয়ে যায়। ফারজানা এ বিষয়ে খোলাখোলিভাবে কিছু বলতে চাননি। সংসার বাঁচাতে চান বলেই জানিয়েছেন, ‘আমি আমার অভিযোগগুলো লিখিত দিয়েছি। যেটা হয়েছে, তার সব ওনাদের (বিসিবি) কাছে জানানো হয়েছে। ওনারা বলেছেন, সমস্যার সমাধান করে দেবেন। যদি সমাধান না হয়, বিচার না হয়, আমি বলব। ওনারা আশ্বাস দিয়েছেন দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে।’ তবে অভিযোগপত্র থেকে সব জানা হয়ে গেছে। শহীদের বিরুদ্ধে তার অভিযোগ ‘নারীঘটিত’। ফারজানা তার অভিযোগে জানিয়েছেন, ২০১১ সালে দু’জনের বিয়ে হয় পারিবারিকভাবে। তখন শহীদদের আর্থিক অবস্থা ভাল ছিল না, তবে সংসার ছিল সুখের। কিন্তু ২০১৫ সালে জাতীয় দলে অভিষেকের পর থেকে শহীদ বদলে যেতে শুরু করেন। এ সময় একাধিক নারী ভক্তের সঙ্গে শহীদের ঘনিষ্ঠতা হয়েছে বলে দাবি ফারজানার। এ নিয়ে সাংসারিক অশান্তি চরমে উঠলে বাধ্য হয়ে ফারজানা মুন্সিগঞ্জে বাবার বাড়িতে চলে আসেন। বিষয়টি পারিবারিকভাবে সমাধানের চেষ্টা করা হলেও সব ব্যর্থ হয়েছে। এ কারণে বিসিবির দ্বারস্থ হয়েছেন ফারজানা। ফারজানার অভিযোগ, তাদের ১১ মাস বয়সী মেয়ে আরোহীকে এখনও শহীদ কোলে পর্যন্ত নেননি। ছেলে সন্তান আরাফের বয়স এখন আড়াই বছর। বিসিবি যে সমস্যার সমাধান মুহূর্তেই করে দিয়েছে তা শহীদের কণ্ঠ থেকেই পরিষ্কার, ‘সিইও স্যার (বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী) আমাদের মীমাংসা করে দিয়েছেন। বিষয়টার মীমাংসা হয়ে গেছে। আমার স্ত্রী এখন বাড়ি চলে যাবে।’ যতই সমাধান হয়ে যাক শহীদের বিষয়টি আবার বিসিবিকে ভাবাচ্ছে। এ নিয়ে গত দুই বছরের মতো সময়ে জাতীয় দলের চার ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে নারীঘটিত অভিযোগ উঠল। যা সত্যিই ভাববার বিষয়। এসব বিষয়গুলো আন্তর্জাতিক মিডিয়াতেও প্রচার হয়। তাতে করে দেশের ক্রিকেটের ভাবমূর্তি হচ্ছে ক্ষুণœœ। ক্রিকেটকে বলা হয় ‘জেন্টেলম্যান গেম’। ‘ভদ্রলোকের খেলা’। বাংলাদেশের মানুষের জন্য ক্রিকেট গর্বের। কিন্তু এ খেলার খেলোয়াড়রা দিন দিন সেই গর্বে যেন কালি মেখে দিচ্ছেন। এরআগে ফৌজদারি অভিযোগের কারণে জাতীয় দলের তিন ক্রিকেটারের জেলহাজতে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। একজন ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে তার বাড়ির শিশু গৃহকর্মীর বিরুদ্ধে পাশবিক নির্যাতনের অভিযোগও উঠেছিল। যাদের বীরের আসনে বসানো হয়েছে তারাই কিনা সেই আসনকে কলঙ্কিত করছেন। এবার শহীদের ‘নারীঘটিত’ কা-ে তা আবার সামনে চলে আসল।
×