ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সেমিনারে অভিমত

চার জাতের বিটি বেগুন চাষ হচ্ছে দেশে, যেতে হবে অন্য ফসলেও

প্রকাশিত: ০৬:২২, ১০ জুলাই ২০১৭

চার জাতের বিটি বেগুন চাষ হচ্ছে দেশে, যেতে হবে অন্য ফসলেও

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশে ধান, গম, ভুট্টা, ডাল, তৈলবীজ, সবজি ও ফলমূলের চাহিদা ২০৩০ সালের মধ্যে আড়াই কোটি টন বাড়বে। কিন্তু প্রচলিত চাষ পদ্ধতি ও ক্রমহ্রাসমান কৃষিজমি ব্যবহার করে এসব খাদ্যশস্যের উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব নয়। বিকল্প পদ্ধতি হিসেবে বিশ্বজুড়ে জৈবপ্রযুক্তির মাধ্যমে উদ্ভাবিত ফসলের (বায়োটেক ক্রপ) চাষ বাড়ছে। বিটি জাতের ফসল চাষ করে বিশ্বের এমন ২৬ দেশের মধ্যে ২০১৬ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ২৩তম। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকির মুখে থাকা বাংলাদেশে বিটি ফসলের চাষ নিয়ে পরিবেশবাদী ও প্রকৃতিবাদীরা যেসব আপত্তি তুলছেন সেগুলোও বিবেচনায় নিতে হবে। খাদ্যশস্যের ক্ষেত্রে বিটি প্রযুক্তির ঢালাও ব্যবহার করার আগে এ বিষয়ে বাংলাদেশের বৈজ্ঞানিক জ্ঞান ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা আরও বাড়াতে হবে। রবিবার রাজধানীতে ‘গ্লোবাল স্ট্যাটাস অব কমার্শিয়ালাইজড বায়োটেক/জিএম ক্রপস : ২০১৬’ শীর্ষক সেমিনারে এসব তথ্য ও পরামর্শ দেয়া হয়। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বার্ক) কনফারেন্স রুমে এ সেমিনার হয়। বার্ক এবং ইন্টারন্যাশনাল সার্ভিস ফর দ্য এ্যাকুইজিশন অব এগ্রি-বায়োটেক এ্যাপ্লিকেশন (আইসা) যৌথভাবে এই সেমিনারের আয়োজন করে। বার্কের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ জালাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ফজলে ওয়াহিদ খন্দকার। সেমিনারে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন অধিদফতর ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শীর্ষ কর্মকর্তা ও বিজ্ঞানীরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সচিব ফজলে ওয়াহিদ খন্দকার বলেন, এসডিজির এক নম্বর লক্ষ্য (ক্ষুধা ও দারিদ্র্য বিমোচন) অর্জন করতে হলে কৃষি খাদ্যশস্যের উৎপাদন বাড়ানোর বিকল্প নেই। এ জন্য পরিবেশসম্মত ও পুষ্টিমানসমৃদ্ধ খাদ্যশস্য উৎপাদনে আমাদের জোর দিতে হবে। গত তিন বছরে বিটি জাতের ফসল চাষে দেশের কৃষকরা লাভবান হয়েছেন। প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশে উচ্চফলনশীল চার জাতের বিটি বেগুনের বাণিজ্যিক চাষ হচ্ছে। শীঘ্রই আরও তিন জাতের উচ্চফলনশীল বিটি বেগুন, বিটি আলু এবং বিটি ধান মাঠ পর্যায়ে পৌঁছে দেয়া হবে। এছাড়া বিটি জাতের তুলা এবং টমেটো নিয়েও গবেষণা চলছে। সেমিনারে আইসার তৈরি বিশ্বজুড়ে বিটি বা জিনগতভাবে পরিবর্তিত জাতের বিভিন্ন ফসলের বাণিজ্যিক চাষের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ ও তিনটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। সেমিনারের একটি প্রবন্ধে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. দিলআফরোজা খানম জানান, ২০৩০ সালে ধানের চাহিদা বর্তমানের চেয়ে অতিরিক্ত ৫১ লাখ টন, গমের ২৫ লাখ টন, ভুট্টার ১৭ লাখ টন, ডালের ২৮ লাখ টন, তৈলবীজের ৮ লাখ টন, সবজির এক কোটি ২৫ লাখ টন এবং ফলমূলের ১৬ লাখ টন বৃদ্ধি পাবে। ধান, গম, আলু, বেগুন, ডাল, টমেটোর মতো প্রধান খাদ্যশস্যগুলোর দেশী জাতের চাষ প্রাকৃতিক ও নানা রোগবালাইয়ের কারণে বাধাগ্রস্ত হয়। বিটি জাতের ফসল রোগ প্রতিরোধে সক্ষম এবং উচ্চফলনশীল। বিটি জাতের ফসলের চাষের ব্যাপারে এখনও অসচেতনতা ও অপপ্রচার রয়েছে। সরকারী উদ্যোগে কৃষকদের এ ব্যাপারে সচেতন করা হচ্ছে।
×