ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বহুজাতিক কোম্পানি বাজারে আনতে বৈঠক ১৩ জুলাই

প্রকাশিত: ০৩:৪১, ১০ জুলাই ২০১৭

বহুজাতিক কোম্পানি বাজারে আনতে বৈঠক ১৩ জুলাই

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পুঁজিবাজারে সরকারী ও বহুজাতিক কোম্পানি আনতে আগামী ১৩ জুুলাই বৈঠকে বসছে অর্থ মন্ত্রণালয়। বৈঠকে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই), ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশসহ (আইসিবি) সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। সরকারী কোম্পানিসহ বাংলাদেশে ব্যবসা করা বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে কীভাবে পুঁজিবাজারে নিয়ে আসা যায় সে বিষয়ে আলোচনা হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। জানা যায়, বার বার সময় দেয়ার পরও নানা জটিলতায় পুঁজিবাজারে সরকারী কোম্পানি তালিকাভুক্তি সম্ভব হয়নি। এছাড়া বাজার উন্নয়নে বহুজাতিক কোম্পানি আনার উদ্যোগ নেয়া হলেও কার্যত কোন ফল দেখা যাচ্ছে না। তবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানির পাশাপাশি বহুজাতিক কোম্পানিরও ভাল শেয়ার পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির নির্দেশনা দিয়েছেন। তার নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। এর আগে ২০১০ সালে পুঁজিবাজারে রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানির শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির ঘোষণা দিয়েছিল সরকার। কিন্তু বাজার ধস এবং মন্দায় বাজারে কোম্পানি তালিকাভুক্তিতে অগ্রগতি হয়নি। সর্বশেষ অর্থ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে রাষ্ট্রীয় মালিকানার বিভিন্ন কোম্পানিকে ছাড়া সংক্রান্ত হালনাগাদ তথ্য জানানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বৈঠকে পুঁজিবাজারে শেয়ার বিক্রির বিষয়ে তারা প্রস্তুত রয়েছে কিনা কিংবা কোন পর্যায়ে আছে কোম্পানিগুলোকে তাও জানাতে বলা হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সরকারী ৩৪ কোম্পানিকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির উদ্যোগ নেয়া হয়। তবে সে সময় ওই উদ্যোগ বেশিদূর এগোয়নি। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০১০ সালে বাজারে ভাল শেয়ারের ভয়াবহ সঙ্কট দেখা দেয়। এরপর সঙ্কট কাটাতে সরকারী কোম্পানিকে বাজারে আনার উদ্যোগ শুরু হয়। ২০১০ সালের ১৩ জানুয়ারি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে অর্থ মন্ত্রণালয়ে এক বৈঠকে সরকারী কোম্পানির ৫১ শতাংশ শেয়ার সরকারের হাতে রেখে বাকি শেয়ার পাবলিকের মধ্যে ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তখন কোম্পানিগুলোকে ২০১০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেয়ার ছাড়তে সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ২০১১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি আরেকটি বৈঠক করেন অর্থমন্ত্রী। ওই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার কথা জানিয়ে কোম্পানিগুলোকে শেয়ার ছাড়ার তাগিদ দেয়া হয়। কিন্তু সে নির্দেশনার প্রতিফলন দেখা যায়নি। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বিএসইসি এ বিষয়ে তাদের পর্যবেক্ষণ দিয়েছে। যেসব বিদেশী কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নয় তাদের নগদ লভ্যাংশের ওপর বর্ধিত কর হার আরোপ করা যেতে পারে। বিদেশী কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশে ব্যবসা করার জন্য আরজেএসসি থেকে নিবন্ধন সনদ নিতে হয়। এ নিবন্ধনের সময় শর্তারোপ করে বিদেশী কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্ত করার শর্তারোপ করা যেতে পারে। জানা গেছে, ঢাকার শেয়ারবাজারে ২৯৬টি কোম্পানি তালিকাভুক্ত রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ১১টি বহুজাতিক কোম্পানি। যা বাজার মূলধনের মাত্র ৭ শতাংশ। অথচ বাংলাদেশে প্রায় ৪১টি বহুজাতিক কোম্পানি রয়েছে। এগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির জন্য নানা উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
×