ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

‘এসডিজি বাস্তবায়নে শুধু অর্থ পাচার নয়, অর্থের অপচয়ও বন্ধ করতে হবে’

প্রকাশিত: ০৭:০০, ৯ জুলাই ২০১৭

‘এসডিজি বাস্তবায়নে শুধু অর্থ পাচার নয়, অর্থের অপচয়ও বন্ধ করতে হবে’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বা এসডিজি বাস্তবায়নে শুধু অর্থ পাচার নয়, অর্থের অপচয়ও বন্ধ করতে হবে। অর্থ পাচার রোধে দ্বৈত নাগরিকত্ব ও মালয়েশিয়ার মতো দেশের আবাসন ব্যবস্থাকে নিরুৎসাহিত করতে হবে। জোর গলায় বলতে হবেÑ বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের নিষ্পাপ শিকার। এবং সেই দায় আদায়ে বহিঃবিশ্বকে চাপে রাখতে হবে। বিভিন্ন সংস্থার শর্তপূরণে গণমানুষের সঙ্গে সম্পৃক্ত খাতগুলোতে বিনিয়োগ কমানো যাবে না। বরং শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুত, পানি, আইসিটি ও কৃষি খাতে সরকারী বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। শনিবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে ‘অসমতা নিরসনে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করতে হবে : দরিদ্র, অসমতা ও জলবায়ু পরিবর্তনপীড়িত দেশগুলোর লড়াইয়ে সহায়তার জন্য ধনী দেশগুলোকে অবশ্যই বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব সংক্রান্ত বাধ্যবাধকতা স্বীকার করতে হবে’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে ২১টি উন্নয়ন সংস্থার পক্ষে এসব কথা বলা হয়। আগামী ১০ থেকে ১৯ জুলাই নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘের হাই লেভেল পলিটিক্যাল ফোরামে (এইচএলপিএফ) বাংলাদেশের এসডিজি বাস্তবায়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হবে। আর এ বিষয়ে মতামত জানাতেই সুশীল সমাজের আয়োজনে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে আয়োজকদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ইক্যুইটিবিডির সৈয়দ আমিনুল হক। তিনি বলেন, প্রতিবছর অর্থ পাচার বাড়ছেই। যে কোন মূল্যে অর্থ পাচার বন্ধ করতে হবে। করের মাধ্যমে সরকারী আয় বাড়াতে হবে, তবে তা ভ্যাটের মাধ্যমে নয়। রাজস্ব সংগ্রহের ক্ষেত্রে অবশ্যই আয়করকে প্রাধান্য দিতে হবে। একই সঙ্গে এসডিজি বাস্তবায়নে বাংলাদেশের বৈশ্বিক সাহায্য প্রয়োজন। আয়োজকদের পক্ষে ৫টি দাবি তুলে ধরে আমিনুল হক বলেন, আঞ্চলিক বৈষম্য এবং অসমতাকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রাধান্য দিতে হবে। দেশের সম্পদ চুরির ঘৃণিত পথগুলো বন্ধ এবং অবৈধ অর্থ পাচার প্রতিরোধ করতে হবে। অবকাঠামো নির্মাণের ক্ষেত্রে উন্নয়ন এবং গণমানুষের সুরক্ষার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। জলবায়ুর নেতিবাচক প্রভাব থেকে মানুষকে বাঁচাতে হবে। বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের নিষ্পাপ শিকার, এটা সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিতে হবে এবং দায় আদায়ে আরও সোচ্চার হতে হবে। একই সঙ্গে গণতন্ত্রকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। আলোচনায় অংশ নিয়ে আয়োজক সংগঠনের অন্য নেতারা আরও বলেন, সরকার বেশকিছু ক্ষেত্রে প্রশংসনীয় অগ্রগতি দেখিয়েছে। তবে তার তুলনায় সরকার বেশি আত্মতুষ্টিতে ভুগছে, এটা ঠিক নয়। এসডিজির প্রতিবেদন উপস্থাপন উপলক্ষে সরকার যে চ্যালেঞ্জ শনাক্ত করেছে তাকে আমরা স্বাগত জানাই। তবে যে কোন চ্যালেঞ্জ বাস্তবায়নে দেশে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। শুধু অর্থ পাচার নয়, অর্থের অপচয়ও হচ্ছে। এসডিজি বাস্তবায়নে অর্থের অপচয়কে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছি। মালয়েশিয়া যদি আবাসন ব্যবস্থাকে বেশি প্রাধান্য দেয়, তবে বাংলাদেশ তা একা মোকাবেলা করতে পারবে না। যদি ২ কোটি টাকায় বাড়ি ও নাগরিকত্ব পাওয়া যায়, মানুষ সেদিকে ছুটবেই। এ ব্যবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য আন্তর্জাতিক ফোরামে কথা বলতে হবে। এতে ইক্যুইটিবিডির রেজাউল করিমের চৌধুরীর সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেনÑ বিএনএনআরসির এ এইচ এম বজলুর রহমান, উন্নয়ন ধারা ট্রাস্টের আমিনুর রসুল বাবুল, বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের বদরুল অলম, দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থার রফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের জায়েদ ইকবাল খান ও কোস্ট ট্রাস্টের মোস্তফা কামাল আকন্দ।
×