ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

গঠন হয়েছে কর্মজীবী ল্যাকটেটিং মাদার সহায়তা ফান্ড

সন্তানের পরিপূর্ণ বিকাশে এবার শহুরে গর্ভবতী মায়েরাও সহায়তা পাচ্ছেন

প্রকাশিত: ০৫:১৩, ৮ জুলাই ২০১৭

সন্তানের পরিপূর্ণ বিকাশে এবার শহুরে গর্ভবতী মায়েরাও সহায়তা পাচ্ছেন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কর্মজীবী ল্যাকটেটিং মাদার সহায়তা তহবিল কর্মসূচী মা জাতির জাতীয় স্বীকৃতি। কর্মজীবী দরিদ্র মা ও শিশুর স্বাস্থ্য, পুষ্টির উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার গৃহীত এ কার্যক্রমের আওতায় শহর অঞ্চলের মায়েদের গর্ভস্থ সন্তানের পরিপূর্ণ বিকাশ সাধনে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। এ লক্ষ্যে ২০১০-১১ অর্থবছর হতে শুরু হয় এ কার্যক্রম। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৭-১৮ অর্থবছরে মাসিক ভাতা ৫০০ টাকায় অপরিবর্তিত রেখে ভাতাভোগীর সংখ্যা ২ লাখে উন্নীত করা হয়েছে। বুধবার মহিলা বিষয়ক অধিদফতরে মাল্টিপারপাস হলরুমে মহিলাবিষয়ক অধিদফতর আয়োজিত কর্মজীবী ল্যাকটেটিং মাদার সহায়তা তহবিল কর্মসূচীর অধীন সকল এনজিওর মাঠপর্যায়ের প্রতিনিধদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়। সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, ‘বাংলাদেশের জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকই শিশু। শিশুরা জাতীয় সম্পদ। এই সম্পদকে যথাযথভাবে সুরক্ষা করা গেলে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। একজন সুস্থ মা-ই পারে একটি সুস্থ শিশুর জন্ম দিতে। শূন্য থেকে ৫ বছরের মধ্যে শিশুর ৮০ শতাংশ বিকাশ সাধিত হয়। শহরাঞ্চলের কর্মজীবী দরিদ্র মায়েরা যাতে পুষ্টিকর খাবার খেতে পারে সে জন্য কর্মজীবী ল্যাকটেটিং মাদার সহয়তা তহবিল কর্মসূচী চালু করা হয়েছে।’ মহিলাবিষয়ক অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর,ও চট্টগ্রামের গার্মেন্টস এলাকায় অবস্থিত কর্মজীবী ল্যাকটেটিং মা এবং সকল সিটি কর্পোরেশন ও পৌর এলাকার কর্মজীবী ল্যাকটেটিং মায়েদের মাসিক ৫০০ টাকা হারে ২৪ মাসব্যাপী মোট ১ লাখ ৮০ হাজার ৩০০ মা’কে এ ভাতা প্রদান করা হয়েছে। সরকারের মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ২২ এনজিও-সিবিও এবং বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ ভাতাভোগী মায়েদের স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও আয়বর্ধক প্রশিক্ষণ প্রদান করে। ২০১০-২০১১ হতে ২০১১-২০১২ অর্থবছরে দুই বছর মেয়াদে ৭৭ হাজার ৬০০ উপকারভোগীকে প্রতি মাসে মাথাপিছু ৩৫০ টাকা হারে ভাতা প্রদান শুরু হয় এ কার্যক্রমে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ভাতাভোগীর সংখ্যা ১ লাখে উন্নীত হয়। ভাতার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ৫০০ টাকা। মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন এনজিওদের কাজের স্বচ্ছতা দাবি করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গঠন ও এসডিজি বাস্তবায়নে জিও এবং এনজিওর সমন্বয় খুবই জরুরী। ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে এনজিওদেরও দায়বদ্ধতা আছে। সরকারের অর্থায়নে যে সকল এনজিও কাজ করছে তাদের কাজের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। তারা তাদের কাজের জন্য জনগণের কাছে দায়বদ্ধ।’ সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাছিমা বেগম এনডিসি। এ সময় তিনি এনজিওরা কর্মজীবী মাকে যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রদান করছে কিনা সে বিষয়ে মনিটরিংয়ের জন্য জেলা ও উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, প্রয়োজনে স্কাইপির মাধ্যমে আমি সরাসরি প্রশিক্ষণ কার্যক্রম মনিটরিং করব।’ উল্লেখ্য, আগে গ্রামাঞ্চলের হতদরিদ্র মায়েদের ভাতা প্রদান করা হতো কিন্তু শহরাঞ্চলে কর্মজীবী মায়েদের কোন ভাতা প্রদান করা হতো না। কর্মজীবী ল্যাকটেটিং মাদার সহয়তা তহবিল কর্মসূচীর মাধ্যমে ২০১০-১১ অর্থবছর হতে কর্মজীবী দরিদ্র মায়েদের ভাতা ও প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। দেশের সব সিটি কর্পোরেশন, জেলা সদর, উপজেলা সদর ও পৌরসভায় এ কর্মসূচী চালু আছে। এই কর্মসূচীর আওতায় প্রতি মাকে মাসে ৫শ’ টাকা করে দেয়া হয় এবং কর্মজীবী মায়েদের মাতৃস্বাস্থ্য, শিশুস্বাস্থ্য, মাতৃদুগ্ধপান, স্যানিটেশন, প্রজনন স্বাস্থ্য, টিকা, পরিবার পরিকল্পনা, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ প্রভৃতি বিষয়ে সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। বছরে ২ কিস্তিতে ৬ মাস পরপর এই ভাতাভোগীরা এই অর্থ সংগ্রহ করেন।
×