তারাখসা গ্রাম
কাজী মাজেদ নওয়াজ
তারাভরা রাতের ওপারে
তুমি আজ একা, এক তারাখসা গ্রাম।
তোমার দুচোখে এখন আকাশভরা নীরবতা
তোমার চোখের বিদ্যুতে ভেঙে পড়ছে এ্যারোপ্লেন
আকাশে, পাহাড়ে
আমরা আকাশে যাব। আমরা পাহাড়ে যাব। যেখানে-
অন্ধকার জ্বলে সবুজ জোনাকি হয়ে, উড়ন্ত-স্থির ফড়িং হলুদাভ...
** তার অভিষেকের অপেক্ষায়
শামসুর রহিম ফারুক
এ কেমন খেয়ালী যাপন তোমার?
কোথাও যে নেই তুমি! যেন-
অন্তরালে ডুবে আছ উর্বর শস্যভূমি।
তোমার অভিষেকের আয়োজনে
রাজপথে সমবেত কোটি জনতা;
সুদীর্ঘ কাল পতাকা শোভিত শকটে,
অপেক্ষায় আছে পুষ্পিত তরুণীকুল
পরিপাটি সাজানো প্রত্যাশী মঞ্চে,
বসে আছে অগ্রজ সুধীজন।
এ কেমন বিলাসী সময় তোমার?
কেউ কোনোদিন দেখেনি তোমাকে।
মিছিলের বজ্র সেøøাগানে কিংবা
ঘাতকের মৃত্যুঘণ্টা যেখানে বাজে
ফাঁসির মঞ্চ ঘিরে তুমি তো জাগনি রাত
তোমাকে পায়নি মঙ্গার কালে
সোহ্রাওয়ার্দীর সবুজ উদ্যানে
তুমি তো দাওনি অমোঘ বাণী;
এ কেমন নিভৃতচারিতা তোমার?
তোমার আবাহনে
নেমে আসুক কাক্সিক্ষত সুললিত বর্ষণ;
তোমার উচ্চারণে
থেমে যাক নষ্ট কোলাহল;
তোমার কবিতায়
জেগে উঠুক মৃতপ্রায় নদীমাতৃকা।
** একটি পাহাড় ধসের অরাজনৈতিক গল্প সায়মন স্বপন
লাস্ট আপডেট কত?
‘স্যার, এক শ’ তের, আরও সম্ভাবনা আছে।’
তেমন কিছু নয়, এটা ফি-বছরই হয়ে থাকে।
কিছু চাল-ডাল দিয়ে মিডিয়া কাভারেজ করো
স্পট ভিজিটের জন্য কজনকে খবর দাও
সাথে গ্লিসারিন রেখ আর
এ বছর আরও কিছু পাহাড় কাটার চুক্তিনামা তৈরি করো।
নতুন চুক্তিটাও করে রেখ ইটভাটা-মালিকের সাথে।
খেয়াল রেখÑ রেটটা যেন আগের থেকে বেশি হয়, খরচা আছে বেশ।
** তৃষ্ণার্ত গ্লাস
আসিফ নূর
তৃষ্ণার্ত গ্লাসের গলা অসহ্য নির্বাক,
তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এক পুকুরের আলাভোলা জল।
গ্লাসটি উপচে নয়- পলকে ভেসেই গেলো
স্র্রোতের সোয়ারি হয়ে নদীপথে মোহনার টানে।
বিরান দুখিনী গ্লাস, চেয়েছিলো দুইঢোক জল,
এখন সে ভাসে-ডোবে সমুদ্রের জোয়ার-ভাটায়।
** মধু মহাকবি
পৃথ্বীশ চক্রবর্ত্তী
তোমারই কথা বলে যায় কল কল
করে, প্রবাহিত সেই কপোতাক্ষ নদ
তোমার পরশ পেয়ে ধন্য এর জল
সাগর দাঁড়ির মাটি; শ্যাম-জনপদ-
শৈবালরূপ ইংরেজি ত্যাগে মনোবল
কমল কানন পেলে স্বাদুজল হ্রদ
প্রিয় বাংলা ভাষাতেই পেয়েছিলে ফল
লিখেছিলে মহাকাব্য ‘মেঘনাদ বধ’।
অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক তুমি
আধুনিক কবিতার স্বপ্নদ্রষ্টা রবি
তুমি চতুর্দশপদী কবিতার কবি
তোমার চরণ ছুঁযে যায় চুমি চুমি
কপোতাক্ষ; স্মরে যায় মাতা বঙ্গভূমি
মধু মহাকবি তুমি হৃদয়ের ছবি।
** অগ্নিকাব্য-১
তছলিম হোসেন হাওলাদার
বুকের ভেতর অগ্নিকু-, জ্বালিয়ে রাখি ছোট্ট পিদিম
ওই আলোতেই জীবন বাজি
খুঁড়িয়ে চলি রাত্রি-নিশিথ।
মাঝে মধ্যে একরত্তি আগুন চুরি করে
ছুড়ে মারি অন্ধকারে
লোকে বলে তাতেই নাকি লঙ্কা পুড়ে।
পুড়ুক লঙ্কা, কী সে ক্ষতি
মানব এখন দানব হয়ে লড়ছে রণে, পরস্পরে
আমি চাইছি নতুন মানুষ, নতুন সমাজ নতুন জাতি।
শীর্ষ সংবাদ: