কবিতা কেন লিখি জানি না। ভেতর থেকে কে যেন লিখতে বলে। শৈশবে যখন সুর করে কবিতা পড়তাম; তখন থেকেই কবিতার প্রেমে পড়ে যাই। সেই প্রেম এখনো বয়ে বেড়াই। মনের মধ্যে কতগুলো শব্দ-বাক্য জড়ো হলেই খাতায় লিখে ফেলি। আমি কবিতার ব্যাকরণ জানি না। ফলে তা যথার্থ কবিতা হয় কি না তা-ও জানি না। বন্ধুদের কেউ কেউ কবিতা বলে, কেউ বলে অকবিতা। আমি কবি হওয়ার জন্য লিখি না। আমার কিশোরী প্রেমিকার জন্য লিখি। যৌবনের ভালোবাসার জন্য লিখি। ভালোবাসার যে কথাগুলো তাকে বলতে পারি না; তা-ই লিখে জানিয়ে দেই। স্লোগানে স্লোগানে দেশকে ভালোবাসার যে কথাগুলো বলতে পারি না; তা-ই কবিতা লিখে জানিয়ে দেই। অন্যায়ের প্রতিবাদ যখন থিতু হয়ে আসে; তখন কবিতা লিখি। এই যে ভালোবাসি- তাই হয়তো কবিতা লিখি। ভবিষ্যতেও লিখবো- কবিতা হোক বা না হোক।
পা-ুলিপি
রাতের পা-ুলিপি অগোছালো রেখে
ঘুমিয়ে পড়ে ক্লান্ত কলম,
চড়কার প্রবল বাতাসে ওড়ে
এলোমেলো গল্পগুলো।
কাক
কাকের চিৎকারে ভাঙে অলস ঘুম
আমাকে কিছু কোকিল দাও-
বেজন্মা কাক তাড়াবো
কোকিলের মধুর সুরে।
অথবা-
আমাকে আরো কিছু কাক দাও;
এ শহরে আমার ঘুম ভাঙুক
কাকের চিৎকারে।
মুখোমুখি
তুমিও থাকো
আমিও থাকি
দু’জনই মুখোমুখি
অথচ
দেখা হয় না অনন্তকাল...
শহর- দুই
এই শহরে আমি কিছু দুঃখ পুষি,
তবুও দেখো বেজায় খুশি।
এক জীবন এক ভাবে কেটে যাবে,
আঁধার শেষে রাত পোহাবে।
কঠিন সময় আসবে যখন শহরজুড়ে,
এই শহরে আমি হবো ভবঘুরে।
তোমার বদনপুস্তক
আমি বদনপুস্তকে রোজ তোমাকে দেখি-
দেখি তোমার উচ্ছ্বাস- প্রাণখোলা হাসি,
অথচ তোমাকে আমি ছুঁতে পারি না।
এমনকী পারি না হাসতে বা কাঁদতে,
কখনো ক্ষোভে কিংবা আবেগে মন্তব্যও নয়।
প্রতিদিন তোমার আঙিনায় ঘুরে আসি
তুমি ব্যস্ত সেজে থাকো,
হয়তো কারো সঙ্গে গল্প করো-
চুপিসারে ডাকলেও শোনো না।
তোমার বদনপুস্তক রোজ পাঠ করি-
তোমাকে তোমার সঙ্গে মেলাতে পারি না;
অথচ তোমার একটি কথাও মনে রাখি না।
ঘুড়ি
তুমি ওড়াও ঘুড়ি- হাতে নিয়ে অদৃশ্য নাটাই,
আমিও ওড়াতে পারি মেঘ- নাটাইবিহীন...
বিনিময়
আমার কাছে আকাশ আছে,
তুমি চাইলে বৃষ্টি নিতে পারো।
আমার কাছে মেঘ আছে,
তুমি চাইলে বজ্র নিতে পারো।
আমার কাছে নদী আছে,
তুমি চাইলে জল নিতে পারো।
আমার কাছে মাটি আছে,
তুমি চাইলে ঘর তুলতে পারো।
আমার কাছে প্রেম আছে,
তুমি চাইলে আঘাত দিতে পারো।