ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আকিল জামান ইনু

জাদুঘরে ‘ব্যর্থতা’

প্রকাশিত: ০৭:০৪, ৭ জুলাই ২০১৭

জাদুঘরে ‘ব্যর্থতা’

জাদুঘর নিয়ে সাধারনের আগ্রহের অন্ত নেই। এই আগ্রহকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে জাদুঘর। কখনও বা একক বিষয় নিয়ে। কখনও আবার একই অঙ্গে বহুরূপ, অর্থাৎ হরেক বিষয়ে। জাদুঘর মূলত সাফল্যের গল্প। তবে কেউ কেউ ভাবতেই পারেন ব্যর্থতাই বা বাদ যাবে কেন? এমনই একজন মানুষ স্যামুুয়েল ওয়েস্ট। বলা যায় ব্যর্থতায় আসক্ত একজন মানুষ। ব্যক্তি জীবনে উদ্ভাবন বিষয়ে গবেষক ও মনোবিজ্ঞানী। তিনি মূলত বিভিন্ন সফল প্রতিষ্ঠানের ব্যর্থ উদ্ভাবন নিয়ে গবেষণা করেন। আর সেখান থেকেই ব্যর্থ উদ্ভাবন নিয়ে জাদুঘর স্থাপন। সম্প্রতি সুইডেনে স্থাপন করেছেন এই অভিনব জাদুঘর। বিষয় ব্যর্থতা। অর্থাৎ অনেক আশা জাগিয়ে বাজারে আসা জায়ান্ট কোম্পানির ধরাশায়ী পণ্যের জাদুঘর ‘দ্য মিউজিয়াম অব ফেইলিয়র’কে বলা হয়েছে ওয়েস্টের ব্রেইন চাইল্ড। এখানে ঠাঁই করে নিয়েছে কোলগেট, হারলে ডেভিডসন বা বিকসের পণ্য। তবে কেবল ব্যর্থতাই নয়, ওয়েস্টের বক্তব্য একটু ভিন্ন। তার ভাষায়, চারপাশের সবাই সাফল্য চায়। এটি তাকে অসুস্থ করে তোলে। তার মতে প্রতিটি ব্যর্থতাই ইউনিক। আর সাফল্য তো স্বাভাবিক। সত্যিকারে সাফল্য কিন্তু ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নেয়। তার ব্যর্থতা নিয়ে জাদুঘরে যাত্রা শুরু হয়েছে হেলসিংবার্গ, সুইডেনে এ বছরের জুনে। কোকা-কোলা ব্ল্যাক বহুল আলোচিত পানীয় কোম্পানী কোকা-কোলার একটি ব্যর্থ পন্য কফি ফ্লেভার কোকা-কোলা ব্ল্যাক। বাজারে এ পন্যটির অস্তিত্ব টিকে ছিল মাত্র দুই বছর। এটি এমন এক ব্যর্থতা যা জাদুঘরে ঠাঁই পেয়েছে। নোকিয়া এন-গেজ নোকিয়ার এই পণ্যের ব্যর্থতার কারণ এর ডিজাইন। ২০০৩-এ বাজারে আসা এই স্মার্টফোনে গোমিং অপশনের কথা বলা হয়েছিল জোরেশোরে। কিন্তু বাস্তবে খুব কম গেমই খেলা গেছে এ ফোনে। তাই এর জায়াগা এই জাদুঘরে। কোলগেট-বীফ লামাঙ্গা ১৯৮০-এর দশকে ফ্রোজেন ডিনার বাজার ধরতে কোলগেট নিয়ে আসে বীফ লামাঙ্গা। কিন্তু মানুষ টুথপেস্ট কোম্পানির এই ফ্রোজেন পিজা ক্রয়ে কোন আগ্রহ দেখায়নি। ডিজিটাল ক্যামেরা অনেক আশা জাগিয়ে বাজারে আসে কোডাক ডিজিটাল ক্যামেরা। ধারণা করা হয়েছিল এটির মাধ্যমে কোডাকের বাজার আরও সম্প্রসারিত হবে। শেষ পর্যন্ত ২০১২তে দেউলিয়াত্ব বরণ করে নেয় কোডাক। টুইটার পিক নোকিয়ার এনগেজের মতো ‘টুইটার পিক’ও আরেক ব্যর্থতার ইতিহাস। ২০০৮-এ বাজারে আসে এই সিঙ্গেল ইউজ টুইটিং ডিভাইস। এটির স্ক্রীন টুইটার নির্ধারিত বর্ণ ধারণের জন্য যথেষ্ট ছিল না। আর এক সঙ্গে খুব কম সংখ্যক মেসেজ আদান প্রদান করা যেত। লিন্ডা ইভান্সের মাস্ক বিখ্যাত অভিনেত্রী লিন্ডা ইভান্স সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য এই মাস্কটি বাজারে ছাড়েন ১৯৯৯ সালে। সে সময় বলা হয় এটি মাসে কয়েকটি ইলেকট্রিক্যাল শকের মাধ্যমে সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে।
×