ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জীবন ভাসছে লোনাজলে

প্রকাশিত: ০৬:০২, ৭ জুলাই ২০১৭

জীবন ভাসছে লোনাজলে

নিজস্ব সংবাদদাতা, কুতুবদিয়া, কক্সবাজার, ৬ জুলাই ॥ বেড়িবাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় অরক্ষিত হয়ে আছে সম্ভাবনাময় দ্বীপ কুতুবদিয়া। বেড়িবাঁধের ল-ভ- অবস্থার কারণে উত্তর ধুরুংয়ের কাইচার পাড়া, পূর্ব-পশ্চিম চরধূরুং, কালারমার পাড়া, কৈয়ারবিলের মলমচর, লেমশীখালীর পেয়ারাকাটা, বড়ঘোপের অমজাখালী থেকে দক্ষিণ মুরালিয়া, আলী আকবর ডেইলের দক্ষিণ-পশ্চিম তাবালেরচর, বায়ু বিদ্যুত ও আনিচের ডেইল গ্রাম এলাকায় সাগর-লোকালয় একাকার হয়ে থাকায় জোয়ারে উঠছে পানি ভাটিতে নামছে। ফলে এলাকার মানুষের নেই মাথাগোঁজার ঠাঁই। পুকুর ও খাল-বিল সর্বত্রই লবণ পানি। হচ্ছে না হাল-চাষবাদ। রাস্তা-ঘাটের বেহালদশা। সুস্থ জীবন-যাপনের নেই কোন পরিবেশ। লবণাক্ত বালিরস্ত জমে পরিত্যক্ত হয়ে পড়ছে বহু চাষের জমি। সাগরে মাছ শিকার ও লবণ চাষ করেই কোনমতে সংসার চলছে গ্রামবাসীর। এভাবে জোয়ার-ভাটার দোলাচলে ধুকে-ধুকে চারটি বছর জীবন কাটছে ওসব গ্রামের প্রায় লক্ষাধিক মানুষের। বিভিন্ন মিটিং-সমাবেশে বেড়িবাঁধ নির্মাণে বরাদ্দের কথা শুনা গেলেও কার্যকরী কোন সুরাহা না হওয়ায় ইতোমধ্যেই দ্বীপ ছাড়ছে বহুলোক। এদিকে বেড়িবাঁধ নির্মাণ-সংস্কারে চলতি অর্থবছরের ৯২ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে নিশ্চিত করে আগামী শুষ্ক মৌসুমেই কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন কুতুবদিয়া-মহেশখালীর সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক। গত বছর বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘রোয়ানু’ পরবর্তী সময়ে বেড়িবাঁধের ভাঙন এলাকা পুনঃসংস্কারে পানি উন্নয়ন বোর্ড ‘সাত প্যাকেজে বরাদ্দকৃত পাঁচ কোটি’ টাকার কাজ ঠিকসময়ে এবং যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হলে কিছুটা হলেও রক্ষা হতো বলে জানিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা নুরুচ ছাফা, উত্তর ধুরুং ইউপি চেয়ারম্যান আ স ম শাহরিয়ার চৌধুরী। বর্তমানে অন্য এলাকায় ৫ প্যাকেজের কাজ কোনমতে ঢিমেতালে শেষ করলেও উত্তর ধুরুংয়ের কাইচারপাড়া থেকে পূর্ব-পশ্চিম চরধূরুং পর্যন্ত ২টি প্যাকেজের কাজ এখনও শুরু করতে পারেনি। বার বার তাগাদা দেয়া সত্ত্বেও ওই কাজের ঠিকাদারী সংস্থা ‘আলম এন্ড ব্রাদার্স এবং ইরাব এন্টারপ্রাইজ’ কানে তুলছে না বলে জানিয়েছেন পাউবো’র এসও এলটন চাকমা ও নিকেল চাকমা। ফলে ওই খোলা অংশ হয়ে গত ঈদ-উল ফিতরের আগে ভরাকাটালের জোয়ারের অথৈ পানিতে গোটা উত্তর ধুরুং ইউনিয়ন প্লাবিত হয়ে ঈদের আনন্দ ম্লান করে দেয় ৬০/৭০ হাজার মানুষের। মোট ৪০ কিমি. বেড়িবাঁধের অধিকাংশ এলাকা বিধ্বস্ত হওয়ায় দ্বীপ ও দ্বীপবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অন্তত ৫শ’ কোটি টাকার বরাদ্দ দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি স্থানীয়দের।
×