ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী

সরকারী কর্মচারীরা জনগণের সেবক হলেই উন্নয়ন সম্ভব

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ৭ জুলাই ২০১৭

সরকারী কর্মচারীরা জনগণের সেবক হলেই উন্নয়ন সম্ভব

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ দেশকে এগিয়ে নিতে আমলাদের আরও আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমাদের উন্নয়নের বড় লক্ষ্য আয় বৈষম্য দূর করা, ধনী ও গরিবের বৈষম্য দূর করা এবং উন্নয়নটা শুধু শহরে হবে না, উন্নয়নটা একেবারে গ্রাম থেকে উঠে আসবে। গ্রামের সাধারণ মানুষ, তৃণমূল পর্যায়ের সকল মানুষ সবরকম নাগরিক সুবিধা যাতে পায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। প্রতিটি রাজনৈতিক দলেরই (যারা ক্ষমতায় যেতে চায়) দেশকে সামনে এগিয়ে নেয়ার জন্য একটি কার্যকর অর্থনৈতিক নীতি থাকা উচিত এবং দেশের আমলাতন্ত্রকেও সেভাবে লক্ষ্য অর্জনে আন্তরিকতার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে হবে। আমরা তখনই দেশকে সামনে এগিয়ে নেয়ার লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হব যখন আপনারা (সরকারী কর্মচারীরা) জনগণের সেবক হিসেবে ঠিকভাবে কাজ করবেন। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার কার্যালয়ে সকল মন্ত্রণালয় বিভাগ ও দফতরের সচিবদের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি ২০১৭-১৮ (এ্যানুয়াল পারফর্মেন্স এগ্রিমেন্ট-এপিএ) স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার হিসেবে মনে করি যে, একটা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকবে, দেশটাকে আমরা কিভাবে আরও উন্নত সমৃদ্ধ করতে পারি। দেশকে বর্তমান বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল আখ্যায়িত করে শেখ হাসিনা বলেন, আপনাদের কর্মফলই আমাদের মর্যাদার আসনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি হচ্ছে সিভিল প্রশাসনের একটি অভ্যন্তরীণ কর্মকৌশল। এটি দেশের জনগণের কল্যাণে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত উন্নয়ন কর্মকা-কে নিয়ে যেতে সরকারী কর্মচারীদের জন্য একটি দাফতরিক দায়বদ্ধতার স্মারক। এটির মাধ্যমে জনগণের কাছে সরকারের স্বচ্ছতা, দায়বদ্ধতা এবং জবাবদিহি নিশ্চিত হয়। আমাদের জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হয়। সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার পাশাপাশি সরকারী সম্পদের সদ্ব্যবহার এবং প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং বিভাগের সঙ্গে এই নিয়ে চতুর্থবারের মতো বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর করে সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসেবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং মন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসেবে ৫১টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবরা এই চুক্তি স্বাক্ষর করেন। বাজেট পাস হওয়ার পর পরই এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এর ফলে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য আরও বেশি সময় হাতে পাওয়া যাবে। তিনি এই বর্ষা মৌসুমে উন্নয়ন প্রকল্পের সমস্ত পেপারওয়ার্ক সম্পন্ন করে ফেলার জন্যও সরকারী কর্মচারীদের নির্দেশনা প্রদান করেন। যাতে বর্ষা শেষ হলেই মাঠ পর্যায়ে প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া যায়। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এবং জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোঃ শফিউল আলম, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (নিরাপত্তা বিভাগ) ফরিদ উদ্দীন আহমেদ চৌধুরী এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) এনএম জিয়াউল আলম অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, সরকারী বিভিন্ন দফতরের প্রধানরা এবং জ্যেষ্ঠ সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের উন্নয়নের বড় লক্ষ্য আয় বৈষম্য দূর করা, ধনী ও গরিবের বৈষম্য দূর করা এবং উন্নয়নটা শুধু শহরে হবে না, উন্নয়নটা একবারে গ্রাম থেকে উঠে আসবে। গ্রামের সাধারণ মানুষ একেবারে মাঠ পর্যায়ের মানুষ সবরকম নাগরিক সুবিধা যাতে পায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনাটা মাথায় রেখেই তিনি সরকারী কর্মচারীদের দায়িত্ব পালনে আরও আন্তরিক হওয়ার অনুরোধ জানান। তিনি এ সম্পর্কে আরও বলেন, আমরা, আমাদের প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক চাহিদা পূরণ। সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা চাই। প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের দায়িত্বগুলো যেন কার্যকর হয় তার ব্যবস্থা করবেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কারণ ’৯৬ সালের আগের চিত্রটা যদি দেখেন তাহলে দেখবেন তার পরে কিন্তু ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। আমরা আওয়ামী লীগই কিন্তু বেসরকারী খাতকে উন্মুক্ত করে দিয়েছিলাম। লক্ষ্য ছিল একটাই আরও বেশি কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করা, সে জন্য বেসরকারী খাতকে আমরা আরও বেশি সুযোগ করে দিয়েছি। কিন্তু সরকারকেও এখানে থাকতে হবে। কারণ, কোন ক্ষেত্রেই কোন স্বেচ্ছাচারিতা হোক আমরা তা চাই না। সংবিধানের ১৩ অনুচ্ছেদের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংবিধানের ১৩ অনুচ্ছেদে স্পষ্ট বলা আছে সরকারী, বেসরকারী এবং কো-অপারেটিভ। কারণ, মাত্র ৫৪ হাজার বর্গমাইলের চেয়ে কিছু বেশি জায়গায় ১৬ কোটি মানুষের বাস। সেখানে কো-অপারেটিভের মাধ্যমে চাষবাস করা, ফসল উৎপাদন করা এবং সেভাবে কার্যক্রম হাতে না নিলে কিন্তু আমরা খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি বা দেশকে উন্নয়নের পথে নিয়ে যেতে পারব না। সেটাও বাস্তব। আর এই বাস্তবতার ভিত্তিতেই আমাদের সংবিধানে জাতির পিতা এটা দিয়ে গেছেন। সেভাবেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। জনগণের কাছে সরকারের দায়বদ্ধতার প্রশ্নেœ তিনি বলেন, এখানে একটা জিনিস মনে রাখতে হবে আমরা সংসদ সদস্য হিসেবে যখন নির্বাচিত হয়ে আসি, আমাদেরও দায়বদ্ধতা থাকে সংসদের কাছে। আর সংসদ সদস্যদের ভোটেই পালামেন্টারি কমিটির নেতা নির্বাচিত হন। যিনি হন প্রধানমন্ত্রী। এখানে কেবিনেট সদস্যসহ সকলে সংসদের কাছে দায়বদ্ধ। আর সংসদ সদস্যরা দায়বদ্ধ জনগণের কাছে। তিনি বলেন, আমাদের সংবিধানের ৭ম অনুচ্ছেদে স্পষ্ট বলা আছে, প্রজাতন্ত্রের মালিক জনগণ। কাজেই প্রজাতন্ত্রের মালিক যেহেতু জনগণ সেই জনগণের কাছে আমরা দায়বদ্ধ এবং আমাদের সেই জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন নির্বাচন হবে আমরা কিন্তু সেই জনগণের কাছেই যাব। আওয়ামী লীগ সরকার এসব বিষয়ে যথেষ্ট সচেতন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা কিন্তু নির্বাচনী ইশতেহার ভুলে যাই না বরং আরও ভাল কি করা যায় সেটাই চিন্তা করি। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ২৪ শতাংশ অর্জন এবং মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা প্রায় সাড়ে ৬ ভাগের ওপরে বাজেট বাড়াতে সক্ষম হয়েছি। বাংলাদেশ কখনও ৪ লাখ কোটি টাকার বাজেট দেবে এটা কখনও কেউ ভাবতেই পারেনি। এই সংখ্যাটা শুনলেই মাথা গরম হয়ে যাওয়ার কথা যে, এত বড় বাজেট আমরা দিতে পারব কিভাবে। কিন্তু আমরা এটা দিতে পেরেছি। এখন এটা আমাদের বাস্তবায়নের সময়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আমরা সরকার হিসেবে কাজ করব। কিন্তু এই সরকারী কাজগুলো বাস্তবায়ন করবে কারা? এটা ধাপে ধাপে একদম তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছায়। সেখানে আমাদের অগ্রাধিকার কি, সেটাকে সুনির্দিষ্ট করা। আর সেটাকে বাস্তবায়নের জন্য করণীয় নির্ধারণ করতে হয় এবং এ জন্য সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব বণ্টনের প্রয়োজন পড়ে। তিনি বলেন, আমাদের সংবিধানের ৩৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হচ্ছেন আপনারা সরকারী কর্মচারীরা। এখানে কিন্তু কর্মচারী বলা আছে। সে ক্ষেত্রে আপনাদেরও দায়বদ্ধতা রয়েছে। দায়বদ্ধতা রয়েছে সংবিধানের কাছে দায়বদ্ধতা রয়েছে জনগণের কাছে। কারণ, জনগণ মাথার ঘাম পায়ে ফেলে যা কামাই করে সেটা দিয়েই আজকে সকলের বেতন-ভাতা, যা কিছু তা হচ্ছে। জনগণের শ্রমেরই এই ফসল। প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতার বক্তৃতার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, জাতির পিতা বলেছিলেন, সমস্ত সরকারী কর্মচারীকেই আমি অনুরোধ করি, যাদের অর্থে আমাদের সংসার চলে তাদের সেবা করুন। যাদের অর্থে আজকে আমরা চলছি তাদের যেন কষ্ট না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন। যারা অন্যায় করবে তাদের কাঠোর হস্তে দমন করবেন। কিন্তু সাবধান একটা নিরপরাধ লোকের ওপর যেন অত্যাচার না হয়। জাতির পিতার বক্তৃতার অপর এক অংশ উদ্ধৃত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারী কর্মচারী ভাইয়েরা আপনাদের জনগণের সেবায় নিজেদের উৎসর্গ করতে হবে এবং জাতীয় স্বার্থকে সবকিছুর উর্ধে স্থান দিতে হবে। এখন থেকে অতীতের আমলাতান্ত্রিক মনোভাব পরিহার করে নিজেদের জনগণের খাদেম বলে বিবেচনা করতে হবে।’ অর্থাৎ খাদেম বা সেবক হিসেবেই তিনি সরকারী কর্মচারীদের নিজেদের উৎসর্গ করতে বলেছেন। তার এই কথাগুলো আমাদের সবসময় মনে রাখতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দেশে ফিরে আসার পর ১ ফেব্রুয়ারি পুরাতন গণভবনে (বর্তমান রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন সুগন্ধা) সরকারী কর্মচারীদের উদ্দেশে দেয়া ভাষণে জাতির পিতা এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধুর ভাষণের অপর এক উদ্ধৃতিতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘এই বাংলার মাটি থেকে ‘করাপশন’ (দুর্নীতি) উৎখাত করতে হবে। ‘করাপশন’ এই বাংলার কৃষক করে না। ‘করাপশন’ আমার বাংলার মজুর করে না। ‘করাপশন’ করি আমরা শিক্ষিত সমাজ, যারা তাদের টাকা দিয়ে লেখাপড়া করেছি।’ আজকের দিনটিকে বিশেষ তাৎপর্যম-িত উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের দিনটি বিশেষ দিন। কারণ, নতুন বাজেট দেয়ার সঙ্গে সঙ্গেই, বাজেট পাস করলাম ২৯ জুন আর আজ (বৃহস্পতিবার) ৬ জুলাই আমরা কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর করতে পারলাম। আর জুন-জুলাইতে বর্ষাকাল সেহেতু এ সময় পেপার ওয়ার্কসগুলো যেন শেষ করে শীতের প্রায় ৬ মাস যেন ফিল্ডওয়ার্ক করা যায় সে জন্য আমাদের বাজেট প্রণয়নের জন্য সংবিধানে এই সময়টি রাখা হয়েছে। এই সময়েই তিনি মাঠ পর্যায়েও কর্মসম্পাদন চুক্তিগুলো সেরে ফেলার জন্য সংশ্লিষ্ট সচিবদের পরামর্শ দেন। প্রধানমন্ত্রীর এ দিনের ভাষণে ঘুরেফিরেই আসে বিএনপি-জামায়াত সরকারের দুর্নীতি এবং সরকার পতনের আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য সৃষ্টি এবং মানুষ হত্যার অভিযোগ। সরকারের ধারাবাহিকতা বিঘিœত হওয়ায় কিভাবে বিএনপি-জামায়াত সরকার জনগণের জন্য নেয়া উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন বন্ধ করে দেশকে পেছনে ঠেলে দেয় বলেও যে অভিযোগ রয়েছে তাও আলোচিত হয়। প্রধানমন্ত্রী এসবের তীব্র সমালোচনাও করেন। ভাষণে-জাতি হিসেবে আমরা যে, যে কোন ধরনের চ্যালেঞ্জ গ্রহণে পারদর্শী। মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ী জাতি হিসেবে বর্তমান বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে আমাদের সেই সক্ষমতার সানন্দ উত্তোরণে সকলকে সচেষ্ট হওয়ারও আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনকারী একটি জাতি। যে কোন চ্যালেঞ্জ প্রহণ করতে সবসময় আমরা প্রস্তুত। যত দুরূহ কাজই হোক না কেন সেটা করার মতো ক্ষমতা বাঙালীরা রাখে। এই বিশ্বাস আমার আছে। বিএনপি না থাকায় সংসদ সম্পর্কে ধারণা পাল্টেছে ॥ শেখ হাসিনা বিডিনিউজকে জানায়, বিএনপির অনুপস্থিতিতে আইনসভায় কার্যকর বিরোধী দল নেই বলে সমালোচনা থাকলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ওই দলটি না থাকায় জাতীয় সংসদ সম্পর্কে মানুষের বিরূপ ধারণায় পরিবর্তন এসেছে। যুব মহিলা লীগের ১৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার গণভবনে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘যতদিন বিএনপি পার্লামেন্টে ছিল, যে সমস্ত নোংরা ভাষা, যে সমস্ত খিস্তি-খেউর তারা করত- এটা কোন ভদ্র মানুষ শুনতে পারত না। অন্তত এটুকু বলতে পারিÑ ২০১৪-এ তারা নির্বাচনে আসেনি, আজকে ২০১৭ তে যারা বিরোধী দলে আছে, অন্তত এ ধরনের নোংরা ভাষা কেউ ব্যবহার করে না। পার্লামেন্ট সম্পর্কে মানুষের যে একটা বিরূপ মনোভাব গড়ে উঠত সেটার কিন্তু পরিবর্তন হয়েছে।’ বক্তব্যে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যদের প্রশংসা করেন শেখ হাসিনা। পক্ষান্তরে বিএনপিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, আর এরা যে কাদের নিয়ে আসে আমি জানি না। আমরা চাই একটা সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক ধারা এদেশে অব্যাহত থাক, বলেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। দুর্নীতি মামলায় আদালতে হাজির না হয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বারবার সময় চাওয়ার সমালোচনা করেন তিনি। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনের সদস্যদের অভিনন্দন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে একাত্তরের পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর মতো অত্যাচার শুরু করেছিল। বিএনপি-জামায়াতের ওই অত্যাচারের বিরুদ্ধে যুব মহিলা লীগ তখন মাঠে নেমেছিল। এজন্য তাদের অভিনন্দন। একইসঙ্গে সংগঠনকে আদর্শরূপে গড়ে তুলতে এবং নেতাকর্মীদের মানুষের জন্য কাজ করতে নির্দেশ দেন তিনি। যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তার ও সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
×