ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

যোগাযোগ অবকাঠামোর অপরিকল্পিত ও ঝুঁকিপূর্ণ নির্মাণ;###;রাষ্ট্রের অর্থের অপচয়;###;সমন্বিত পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করার তাগিদ

সেতু আছে, সড়ক নেই

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ৭ জুলাই ২০১৭

সেতু আছে, সড়ক নেই

রাজন ভট্টাচার্য ॥ মাঝ নদীতে নির্মাণ করা হয়েছে সেতু। দুই পাশে নেই সংযোগ সড়ক। তাই সেতুটি কোন কাজেই আসছে না এলাকাবাসীর। ময়মনসিংহ সদর উপজেলার রামভদ্রপুর গুচ্ছগ্রাম এলাকার খড়িয়া নদীর ওপর ২০১৪ সালে নির্মাণ করা হয় সেতুটি। কিন্তু সংযোগ সড়ক না থাকায় বর্ষাসহ অন্য সময়ে ফুলপুর ও সদর উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ নৌকায় বা পানি ভেঙ্গে নদীটি পার হচ্ছেন। সদর উপজেলা প্রকৌশল কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, পরিষদের রাজস্ব তহবিলের অর্থে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। ৩০ ফুট দৈর্ঘ্য সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয় প্রায় আট লাখ টাকা। নকলা, ফুলপুর ও সদর উপজেলার কয়েক হাজার মানুষের চলাচলের সুবিধার কথা চিন্তুা করেই নির্মাণ করা হয় সেতুটি। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, সেতুটি নদীর মাঝে নির্মাণ করা হয়েছে। তাই নির্মাণের পর থেকেই সেতুটি অকেজো। সারাদেশে এরকম সেতুর সংখ্যা অসংখ্য। নদী, খাল কিংবা বিলের মাঝখানে সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। সড়কের কোন পরিকল্পনা হয়নি। যদিও এরকম সেতুর সঠিক কোন পরিসংখ্যান নেই। প্রকৌশলী ও স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংযোগ সড়ক ছাড়াই সেতু নির্মাণের পেছনে নানামুখী কারণ রয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছেÑ স্থানীয় সংসদ সদস্যরা নির্বাচনী অঙ্গীকার পূরণে চাপ সৃষ্টি করে সড়ক ছাড়াই ইচ্ছেমতো সেতু নির্মাণে বাধ্য করান। ফলে নির্মিত সেতু মানুষের উপকারে আসে না। এছাড়া সড়কের পরিকল্পনা ছাড়াই সেতু নির্মাণ, পরিকল্পনা ছাড়াই আর্থিক বরাদ্দ কাজে লাগানোর মানসিকতা, প্রয়োজনীয় জমি না পাওয়া, মামলা সংক্রান্ত জটিলতা, ঠিকাদারসহ সরকারী সংশ্লিষ্ট বিভাগের অনিয়ম দুর্নীতিই সমস্যার মূল কারণ। সঙ্কট সমাধানে সমন্বিত পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, জনপ্রতিনিধিদের উচিত রাষ্ট্রীয় অর্থ যেন অপচয় না হয় সেদিকে খেয়াল রেখে উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা। সেই সঙ্গে সড়কের পরিকল্পনা ছাড়া সেতু নির্মাণে অনুমতি না দেয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন তারা। সূত্রে জানা গেছে, সরকারের একাধিক মন্ত্রণালয় সেতু নির্মাণ করে থাকে। এর মধ্যে রয়েছে, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। বিভাগসমূহের মধ্যে রয়েছেÑ এলজিইডি, জেলা পরিষদ, ইউনিয়ন পরিষদ, সড়ক ও জনপথ, পানি উন্নয়ন বোর্ড। এর মধ্যে প্রায় সব মন্ত্রণালয়ের সেতু নির্মাণ কাজে এরকম চিত্র পাওয়া গেছে। তবে স্থানীয় সরকার ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় কাজে এমন সমস্যা সবচেয়ে বেশি। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) সারাদেশে সেতু ও কালভার্টের সংখ্যা ১৩ লাখ। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের নির্মিত সারাদেশে সেতুর সংখ্যা ৩ হাজার ১৪৬ ও কালভার্টের সংখ্যা ১৫ হাজারের বেশি। প্রতিবছরই বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যোগাযোগ ব্যবস্থান উন্নয়নে সড়কের পাশাপাশি সেতু ও কালভার্ট নির্মাণে নতুন নতুন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। সড়ক বিভাগের প্রকৌশলী এম সাহাবুদ্দিন খান পরামর্শ দিয়ে বলেন, সেতু নির্মাণ করার ক্ষেত্রে সবার আগে সড়কের পরিকল্পনা নিশ্চিত করার বিকল্প নেই। সমন্বিত পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরুর তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, সড়ক না থাকলে কোথাও সেতু নির্মাণের অনুমোদন দেয়া হলে রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয় হবে। মানুষের স্বার্থে কোন কাজে আসবে না। সংযোগ সড়ক ছাড়া সড়ক বিভাগের কোন সেতু নেই দাবি করে তিনি বলেন, এক সময় এই বিভাগের ৫১টি সেতু এরকম ছিল। তারপর ‘অসমাপ্ত সেতু সমাপ্তকরণ প্রকল্প’ নিয়ে এগুলোর কাজ শেষ করা হয়। তিনি বলেন, সরকারের বিভিন্ন বিভাগ সেতু নির্মাণ করে থাকে। অনেক সময় দেখা যায় মামলা সংক্রান্ত জটিলতায় সেতুর কাজ বন্ধ থাকে। সড়ক ও জনপথ ছাড়া অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো দানের জমিতে সড়ক নির্মাণ করে থাকে। সেতু হয় খাস জমিতে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় মানুষ দানের জমি দিতে চান না। আবার কাজ শুরুর পর অনেকে জমির বিনিময়ে অর্থ দাবি দাবি করেন। ফলে সমস্যার সৃষ্টি হয়। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের ২০১৪-১৫ সালের যোগাযোগ ও স্থানীয় সরকার সেক্টর বাস্তবায়ন, পরীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইইএমইডি) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাস্তবায়নের ভিত্তিতে প্রকল্পের স্কিম নির্ধারণ না করা, সংযোগ সড়ক ছাড়াই শুধু সেতু ডিপিপিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ফলে সংযোগ সড়ক ছাড়াই সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। কাজেই সেতু নির্মাণ করে সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। প্রতিবেদনের সুপারিশে বলা হয়, প্রতিটি সেতু নির্মাণের সঙ্গে যথাযথ এ্যাপ্রোচ নির্মাণের বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এক হাজার ১৮২ কোটি ২৪ লাখ টাকার ২৮ দশমিক ৫০০ মিটার ব্রিজ/কালভার্টসহ পুল নির্মাণ করার কথা মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়ে বুয়েটের অধ্যাপক ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ শামসুল হক বলেন, এলজিইডি বেশিরভাগ কাজই তড়িঘড়ি করে সম্পন্ন করে। কারণ অর্থবছরের মধ্যে কাজ শেষ করার একটা চাপ থাকে। এছাড়া পরিকল্পনা অনুযায়ী সেতু নির্মাণের যে জায়গা পাওয়ার কথা, অনেক সময় তাও পাওয়া যায় না। ফলে সংযোগ সড়ক ছাড়াই সেতু নির্মাণ করতে হয় সংস্থাটিকে। এভাবেই অপরিকল্পিত ও ঝুঁকিপূর্ণভাবে নির্মাণ হচ্ছে আমাদের যোগাযোগ অবকাঠামো। জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুশান্ত কুমার পাল জনকণ্ঠকে বলেন, নানা কারণে সেতু নির্মাণের কাজ ঝুলে থাকে। কোন কোন ক্ষেত্রে এ্যাপ্রোচ রোড ছাড়াই সেতু নির্মাণ হয়। মাঠ পর্যায়ের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেন, রাজনৈতিক চাপে মাঠ পর্যায়ের প্রকৌশলীরা সেতু নির্মাণ করতে বাধ্য হন। কারণ স্থানীয় সংসদ সদস্যরা নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি রক্ষার জন্য যেখানে সেখানে সেতু নির্মাণ করাতে বাধ্য করান। অথচ সড়কের কোন ব্যবস্থা হয় না। যা মানুষের কোন উপকারেও আসে না। এছাড়া জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত জটিলতার কারণেও অনেক সময় সেতুর কাজ শেষ হলেও সড়ক হয় না। তিনি বলেন, সম্প্রতি সরকারের পক্ষ থেকে অসমাপ্ত সেতুর তালিকা করা হয়েছিল। সংযোগ সড়ক নেই এলজিইডির এমন সেতুগুলোর কাজ প্রকল্পের মাধ্যমে শেষ করা হয়েছে। তবে নতুন নতুন কিছু সেতু সংযোগ সড়ক ছাড়াই নির্মাণ হয়ে থাকতে পারে। সড়ক ও জনপথের প্রকৌশলী জাওয়েদ আলম জনকণ্ঠকে বলেন, রাস্তার পরিকল্পনা আগে করে কাজ করায় সড়ক বিভাগে অসমাপ্ত সেতু এখন আর পাওয়া যাবে না। তিনি বলেন, তবে সরকারের কিছু বিভাগের সেতু দেখা যায় উদ্দেশ্য ছাড়াই নির্মাণ করা হয়। সরকারী বরাদ্দ আসে তা কাজে লাগাতে ইচ্ছেমতো সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ হচ্ছে। যা কারিগরি দিক থেকে মোটেও সঠিক নয়। কিভাবে ব্রিজগুলো মানুষকে সুবিধা দেবে তা চিন্তা করেই নির্মাণ করা উচিত বলেও মনে করেন এই প্রকৌশলী। সড়ক ছাড়াই ৭৫ লাখ টাকার সেতু গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার ঘাঘর ইউনিয়নের রতাল গ্রামে সড়ক ছাড়াই একটি খালের ওপর নির্মাণ করা হয়েছে সেতু। ঘাঘর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সামনের এ সেতুর এক প্রান্ত গোপালগঞ্জ-কোটালীপাড়া-পয়সারহাট সড়কের সঙ্গে সংযুক্ত। আর অন্যপ্রান্তে প্রায় দুই কিলোমিটারজুড়ে ফসলের মাঠ। সেখানে পায়ে হাঁটার পথও নেই। যেখানে সড়ক নির্মাণের কোন পরিকল্পনাও নেই বলে জানিয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর। এ পথে মানুষ চলাচল না থাকায় সেতুটি কোন কাজেই আসছে না বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। কোটালীপাড়া উপজেলা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে এ সেতুর নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করেছে। ডিপিতে রতাল খালের ওপর ব্রিজ নির্মাণ করার কথা উল্লেখ রয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা তদবির করেই সেতুটি নির্মাণ করান। যদিও সড়ক নির্মাণের কোন ব্যবস্থা নেই। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জমির মালিকদের ম্যানেজ করে রাস্তার জন্য জমি নেয়ার চেষ্টা চলছে। ভুলের খেসারত নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে রাস্তা নির্মাণের আগেই সেতু নির্মাণ করার ঘটনা ঘটেছে। উপজেলার সনমান্দি ইউনিয়নের মারুবদী শিকদার বাড়ির খালের ওপর এ সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। জানা যায়, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ২৯ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় মারুবদী সেতুটি। এ সেতুর নির্মাণ করে নাদিম এন্টারপ্রাইজ নামের এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০১৬ সালের শেষদিকে এর কাজ শেষ হয়। সেতুর এক পাশে অলিপুরা থেকে ছনকান্দা এবং অন্য পাশে সনমান্দি যাওয়ার সড়ক থাকলেও ব্রিজের গোড়ায় মাটি নেই। অন্য পাশে রয়েছে বিশাল জঙ্গল। এলাকাবাসীর অভিযোগ, অপরিকল্পিতভাবে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। সনমান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদ হাসান জিন্নাহ বলেন, কিভাবে রাস্তা ছাড়া সেতু হলো এটি আমার জানা নেই। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের ভাটিপাড়া গ্রামে খালের ওপর নির্মিত সেতুটি বর্ষা এলেই পানিতে ডুবে যায়। এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীর (এডিপি) অর্থায়নে মোগরাপাড়া ইউনিয়নের ভাটিপাড়া গ্রামের খালের ওপর ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মাণ করা হয়। নারায়ণগঞ্জ এলজিইডির এক কর্মকর্তা জানান, ঢাকা এলজিইডির প্রকৌশলীদের ভুল নক্সায় সেতুটি নির্মিত হয়। দুর্নীতি ও অনিয়ম করে পুরনো নক্সা দিয়ে আরসিসি পিলারের পরিবর্তে ইটের পিলার দিয়ে সেতুটি করা হয়। একই উপজেলার মেনীখালী নদীর ওপর পাশাপাশি তিনটি সেতু নির্মাণ করেছে এলজিইডি। এর মধ্যে একটি সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে পারে না। এ সেতুর উত্তর প্রান্তে সংযোগ সড়কের নদীর ওপর গত বছর সড়ক ও জনপথ অধিদফতর (সওজ) আরেকটি উঁচু সেতু ও সংযোগ সড়ক নির্মাণ করেছে। ফলে এলজিইডির সেতু ও সংযোগ সড়কটি সওজের সেতুর একেবারে নিচে চলে গেছে। এখন এলজিইডি ইচ্ছা করলেই তাদের সেতুর সংযোগ সড়ক উঁচু করতে পারছে না। অন্য দুটি সেতু অপ্রশস্ত হওয়ার কারণে একসঙ্গে দুটি যানবাহন পার হতে পারবে না। সেতু নির্মাণে নক্সার ভুলের খেসারত এখন দিতে হচ্ছে দুই ইউনিয়নের ২০ গ্রামের মানুষকে। অপরিকল্পিত নির্মাণযজ্ঞ রাজশাহীতে রাজশাহীর ৯ উপজেলায় নির্মাণ হচ্ছে ৭৪টি সেতু-কালভার্ট। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের অধীনে চলতি ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে এসব কালভার্ট নির্মাণ হচ্ছে। এতে ব্যয় হচ্ছে ২০ কোটি ৩৬ লাখ ৯৬ হাজার ৬২৯ টাকা। অভিযোগ উঠেছে, এসব সেতু-কালভার্ট নির্মাণ হচ্ছে অপরিকল্পিতভাবে। ফলে কোন কাজেই আসবে না এগুলো। এতে অতিরিক্ত ব্যয় দেখিয়ে সরকারী অর্থ লোপাট হচ্ছে। তবে সংশ্লিষ্টদের দাবি, পরিকল্পনামাফিক হচ্ছে কাজ। গড়ে ২২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকিটাও শেষ হয়ে যাবে সময়মতো। ফলে সুফল পাবেন জনগণ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তানোর উপজেলায় নির্মাণ হচ্ছে ৬টি সেতু-কালভার্ট। সব মিলিয়ে এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ কোটি ৩১ লাখ ৪৬ হাজার ৬৮৯ টাকা। এর মধ্যে বাঁধাইড় ইউনিয়নের গিল্লা প্রকাশনগর খাড়িতে নির্মাণ হচ্ছে ৬০ ফুটের একটি সেতু। এতে ব্যয় হচ্ছে ৫৬ লাখ ৮৯ হাজার ১০৬ টাকা। ২০০৬ সালে উপজেলার চাঁন্দুড়িয়া ইউনিয়নের দেওতলা হামিরপুর খালের ওপর প্রায় ১৬ লাখ ১৫ হাজার ৫৫৩ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় আরেকটি সেতু। সংযোগ সড়ক না থাকায় এখনও ঠাঁয় দাঁড়িয়ে সেতুটি। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বাঁধাইড় ইউনিয়নের গাল্লা প্রকাশনগর খাড়িতে সেতু নির্মাণকাজ চলছে। সেতুটি নির্মাণ শুরু হলেও সংযোগ সড়ক নেই। সেতুর মাথায় রয়েছে ধানক্ষেত। নির্মাণাধীন সেতুটির ১০০ ফিট দক্ষিণে রয়েছে সেতু। তাতে সড়কও রয়েছে। নতুন করে এ সেতুর প্রয়োজন ছিল না বলে জানিয়েছেন সেখানকার লোকজন। একই অবস্থা কলমা ইউনিয়নের বলদিপাড়া মোয়াতলা খাড়িতে সেতু নির্মাণেও। এই সেতুর দুই পাশে বনবিভাগের বিপুল সংখ্যক ঔষধি ও বনজ গাছের বাগান। এছাড়া পাঁচন্দর ইউনিয়নের বনকেশর মরাপাড়া-বানিয়াল খাড়ি সেতুটিও ধানক্ষেতের পাশে। এছাড়া এই সেতুর স্থানে নক্সায় কোন সড়ক নেই। সরনজাই ইউনিয়নের বিল্লি খাড়িতেও একই কায়দায় সেতুটি নির্মাণ হচ্ছে। প্রত্যেক উপজেলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দফতরের প্রকৌশলী এ প্রকল্পের কারিগরি কমিটির সদস্য। এমন কয়েকজন উপজেলা প্রকৌশলী নাম প্রকাশ না করে জানান, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয় সরকারের প্রকৌশল বিভাগ নয়। তাদের সঙ্গে কোন উপজেলা প্রকৌশলী নেই। ফলে কোন পরিকল্পনা ছাড়াই নির্মাণ হচ্ছে এসব সেতু-কালভার্ট। বাউফলে অকারণে সেতু পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার ভরিপাশা গ্রামে খালের ওপর একটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে, যার দুই পাশে ফসলি জমি। সেতুর আধা কিলোমিটারের মধ্যে কোন সড়ক নেই। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের সেতু/কালভার্ট প্রকল্পের আওতায় ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরের বরাদ্দে ৩৬ ফুট দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। এতে ব্যয় ধরা হয় ২৯ লাখ ৫৭ হাজার টাকা। নির্মাণের দায়িত্বে ছিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রাসেল সিকদার এন্টারপ্রাইজ। গত বছরের শেষদিকে সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়। তবে সংযোগ সড়কের কাজ শেষ হয়নি। ৭ লাখ ২০ হাজার টাকার বিল দেয়া হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার কয়েকজন বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের সেতু/ কালভার্ট প্রকল্পের আওতায় কেশবপুর ইউনিয়নে বেশ কয়েকটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। অন্য ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ স্থান বাদ দিয়ে কেশবপুর ইউনিয়নের অগুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রাধান্য পেয়েছে। আর এর পেছনে ভূমিকা রেখেছেন অধিদফতরের এক উর্ধতন কর্মকর্তা, যার বাড়ি এ ইউনিয়নেই। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মোঃ রাসেল সিকদার বলেন, দরপত্র অনুযায়ী সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। সামনে সংযোগ সড়কও নির্মাণ করা হবে। সেতুর দুই পাশে সড়ক আছে কিনা তা তাদের বিবেচ্য নয়। সেতু হলেও কাজে আসছে না শরীয়তপুর সদর উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের দুটি গ্রাম কদমতলী ও পূর্ব মাহমুদপুর। এ দুই গ্রামের মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে একটি খাল। উভয় গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনে ছয় বছর আগে খালটির ওপর একটি সেতু নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)। কিন্তু সেতু নির্মাণ হলেও এর দুই পাশে নেই কোন সংযোগ সড়ক। সেতুর নক্সায় সংযোগ সড়কের বিষয়টি উল্লেখ না থাকায় তা নির্মাণ করা হয়নি। ফলে ভুল নক্সায় নির্মিত এ সেতুর কোন সুফলই পাচ্ছেন না স্থানীয়রা। ২০০৫-০৬ অর্থবছরে রাজশাহীর তানোরে শিব নদীর ওপর ২১৬ মিটার দৈর্ঘ্য সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হয় ২০১২ সালে। এর পর এ সেতুর দুই পাশে নির্মাণ করা হয় সংযোগ সড়ক। কিন্তু নির্মাণের পর তিন দফা ভেঙ্গে পড়ে এ সংযোগ সড়ক। জানা যায়, সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে ভুল নক্সায়। যদি সেতুটির পশ্চিম দিকে আরও বাড়ানো হতো, তাহলে এমন ফাটল দেখা দিত না। ফলে সংযোগ সড়কের কারণে সেতুটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে এখন। সাঁথিয়ায় সেতুর সুফল মিলছে না পাবনার সাঁথিয়া ও সুজানগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কোন সংযোগ সড়ক ছাড়াই নির্মাণ করা হয়েছে কয়েকটি সেতু। এসব সেতু নির্মাণে সরকারের অনেক অর্থ ব্যয় হলেও স্থানীয় জনগণ তার কোন সুফল পাননি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সুজানগর উপজেলার ঘোড়াদহ ও রামকান্তপুর গ্রামের সীমান্তবর্তী এলাকায় কোন রাস্তা ছাড়াই মাঠের মধ্যে একটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। রাস্তাবিহীন ওই সেতুটি এলাকাবাসীর কোন কাজেই আসছে না। বরং এ সেতুর কারণে এলাকাবাসীর চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। গৌরীপুরে মানুষের ভোগান্তি গেল না ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ভাংনামারী ইউনিয়নের খোদাবক্সপুর গ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর তৈরি হয় একটি সেতু। কিন্তু সেতুর দুদিকে কোন সংযোগ সড়ক নেই। এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের এপ্রিলে পুরনো ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর ভোলার আলগী-নাপ্তের আলগী সড়কে প্রায় ৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকা বরাদ্দে সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। এর নক্সায় কোন সংযোগ সড়কের কথা উল্লেখ ছিল না। সেতুর কাজ শেষ করার পর গত বছরের অক্টোবরে সংযোগ সড়ক করার পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু সেতু এলাকার দুই পাশের মানুষ তাদের ফসলি জমি ছাড়তে না চাওয়ায় সংযোগ সড়কটি পরিকল্পিতভাবে করা যায়নি। কাজে আসল না ৩২ লাখ টাকার সেতু নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার পুটিমারী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডেও ভেড়ভেড়ী গ্রামের সালামের মোড় থেকে জমসের আলীর বাড়ির সামনের সড়কে খালের ওপর সেতু থাকলেও সংযোগ সড়ক না থাকায় তা কোন কাজে আসছে না। ফলে লাখ টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মাণ করা হলেও উপকার পাচ্ছে না এলাকাবাসী। উপজেলার পুটিমারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু সায়েম লিটন বলেন, সেতুটির দুই পাশে সড়ক করার জন্য মাসিক সমন্বয় কমিটির সভায় একাধিকবার বলেছি। কিন্তু কোন কাজ হচ্ছে না। সূত্র জানায়, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৩২ লাখ ৫২ হাজার ৬৫৩ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। ২০১৬ সালে মেসার্স মিনহাজুল এন্টারপ্রাইজ নামের এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ করে। বিশ্বম্ভরপুরের কান্না সুনামগঞ্জ শহর থেকে প্রায় ৩০ কিমি দূরে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়ন। ফতেপুর ইউনিয়নের মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে আগুয়া নদী। অর্থাৎ এই নদী পার হলেই যেমন ইউনিয়নে প্রবেশ সম্ভব; তেমনি দ্রুততম সময়ে পৌঁছা যায় তাহেরপুর। এ কারণে তাহেরপুরের বেশিরভাগ মানুষই এ পথে যাতায়াত করেন। অথচ এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘশ্বাস হলো ‘আগুয়া সেতু’। এলাকাবাসীর স্বপ্ন পূরণে সেতুর নির্মাণকাজ প্রায় ১০ বছর আগে শুরু হয়েছিল। কিন্তু নক্সায় ত্রুটি ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতিতে কিছুদিনের মধ্যেই কাজটি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে গচ্ছা যায় সরকারের কয়েক কোটি টাকা। নদীর দু’প্রান্তে নির্মিত হয়েছিল সেতুর সামান্য গার্ডারের কাজ। এগুলোই সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে বছরের পর বছর। ঝুলছে রডও। ব্রিজের সঙ্গে সংযোগ সড়কের কাজও শেষ হয়নি। অথচ সেতুটির নির্মাণকাজ বন্ধের পর পেরিয়ে গেছে অন্তত সাত বছর। সুনামগঞ্জের সড়ক ও জনপথ বিভাগ বলছে, সেতুটির রি-ডিজাইন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে এটিসহ আরও সাতটি সেতু নির্মাণের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে। কাজে আসছে না ১৯ কোটি টাকার সেতু নাটোরে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ১৯ কোটি ৩৪ লাখ টাকায় নির্মিত ব্রিজগুলো কাজে আসছে না জনসাধারণের। সেতুগুলোর সংযোগ সড়ক তৈরি না করায় দুর্ভোগ কমার বদলে বেড়েছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে নির্মিত এসব ব্রিজের সংযোগ সড়ক না করেই টাকা তুলে নিয়েছেন বেশিরভাগ ঠিকাদার। আর ঠিকাদারদের এসব অনৈতিক কাজে সহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে খোদ প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে, যেখানে সেখানে অপ্রয়োজনীয় ব্রিজ নির্মাণ, নদীর গতিপথ বন্ধ এবং সঙ্কুচিত করে নির্মাণ করা হয়েছে ব্রিজগুলো। অপরদিকে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বরাদ্দ বাড়িয়ে ৩৩ কোটি টাকায় বিভিন্ন নদীর ওপর নির্মাণ করা হচ্ছে আরও ১০৯টি ব্রিজ। সম্প্রতি নাটোরের জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, সরকারী টাকা যাচ্ছেতাইভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। পরিত্যক্ত ব্রিজগুলো সচল করার নির্দেশ দেয়া হবে বলে জানান তিনি। কালিয়াকৈরেও সেতু আছে সড়ক নেই দুযোর্গ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরাধীন সেতু-কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় গাজীপুরের কালিয়াকৈরে সাতটি সেতু ও কালভার্ট নির্মাণকাজ চলছে। অভিযোগ উঠেছে, তদারকির অভাবে নির্মাণকাজে ধীরগতি, ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি করছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি। এদের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও। এলাকাবাসী ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরের দুযোর্গ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরাধীন সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্প হাতে নিয়েছে বর্তমান সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে এক কোটি ৮৪ লাখ ৪২ হাজার ৪৪৭ টাকা ব্যয়ে তিনটি সেতু ও চারটি কালভার্ট নির্মাণের কাজ চলছে। এগুলো হচ্ছেÑ মৌচাক ইউনিয়নের কলাবাঁধা-আমবাগ রাস্তার বাইদে ৪০ লাখ ৯৪ হাজার ৫০০ টাকা ব্যয়ে ৫০ ফুট দৈর্ঘ্য সেতু, সূত্রাপুর ইউনিয়নের চাঁদপুর-বামনদহ রাস্তায় বিলে ৪০ লাখ ৯৪ হাজার ৫০০ টাকা ব্যয়ে ৫০ ফুট সেতু। এছাড়াও শ্রীফলতলী ইউনিয়নের বহিয়াবহ পল্লী শিশু ক্লিনিক-বহিয়াবহ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় রাস্তায় খালের ওপর ৩২ লাখ ৫২ হাজার ৬৫৩ টাকা ব্যয়ে ৪০ ফুট সেতু এবং ফুলবাড়িয়া ইউনিয়নের গাছবাড়ি-কাঁথাচূড়া রাস্তায় বাইদে ১৯ লাখ ৭৪ হাজার ১৫৬ টাকা ব্যয়ে ২৪ ফুট কালভার্ট, চাপাইর ইউনিয়নের বড়গোবিন্দপুর-বাতিনাচালা রাস্তায় মনির সিকদারের খালের পাশে বাইদে ১৬ লাখ ৭৫ হাজার ৫৪৬ টাকা ব্যয়ে ২০ ফুট কালভার্ট, বোয়ালী ইউনিয়নের ঢোলসমুদ্র-কোকিলাচালা রাস্তায় বাইদে ১৬ লাখ ৭৫ হাজার ৫৪৬ টাকা ব্যয়ে ২০ ফুট কালভার্ট, আটাবহ ইউনিয়নের চ-িতলা-মাথালিয়া রাস্তায় কামারিয়া কবরস্থানের কাছে ১৬ লাখ ৭৫ হাজার ৫৪৬ টাকা ব্যয়ে ২০ ফুট কালভার্ট। এসব কাজের তত্ত্বাবধানে রয়েছে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয়। ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরের এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু কাজের মন্থরগতি থাকায় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোনটিই সমাপ্ত হওয়া নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। ১-২টি কালভার্ট নির্মাণকাজ শেষ হলেও দুই পাশে মাটি না দেয়ায় মোটরসাইকেল, রিক্সা, ভ্যান, সিএনজিসহ বিভিন্ন যানবাহন দূরের কথা পায়ে হেঁটে চলাও কষ্টকর। এসব সেতু ও কালভার্টের দুই পাশে মাটি ফেলার কথা থাকলেও তা ফেলা হচ্ছে না। এছাড়া চলতি অর্থবছর শেষ হলেও এসব সেতু ও কালভার্ট নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে ওই সড়কগুলো দিয়ে চলাচলরত হাজার হাজার শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষ। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বোয়ালী ইউনিয়নের ঢোলসমুদ্র-কোকিলাচালা রাস্তায় কোন শ্রমিক নেই, নেই কোন নির্মাণসামগ্রীও। শুধু মাটি খনন করে রাখা হয়েছে। মুঠোফেনে ওই কালভার্টের ঠিকাদার রুস্তম আলী বলেন, ‘পিআইও স্যারের সঙ্গে কথা বলে কাজটি স্থানীয় একজনকে দেয়া হয়েছে। ফুলবাড়িয়া ইউনিয়নের গাছবাড়ী-কাঁথাচূড়া রাস্তায় কালভার্ট নির্মাণকাজের কোন শ্রমিক দেখা যায়নি। ঢালাই করা হলেও দুই পাশে ফেলা হয়নি মাটিও। অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে কালিয়াকৈর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মোঃ আহম্মেদ রেজা আল মামুন জানান, সেতু ও কালভার্ট নির্মাণকাজ শেষ হয়নি, বিলও দেয়া হয়নি। যে কালভার্টটির কাজ হচ্ছে না, তার বিষয়ে বিভাগীয় দফতরে জানানো হয়েছে। আর মাটি ফেলার বিষয়ে তিনি বলেন, সেতু ও কালভার্টের দুই পাশে মাটি না ফেলা পর্যন্ত ঠিকাদারের চূড়ান্ত বিল দেয়া হবে না।
×