ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

দুই-তৃতীয়াংশ ব্যাংকেই সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিট

প্রকাশিত: ০৩:৫৬, ৭ জুলাই ২০১৭

দুই-তৃতীয়াংশ ব্যাংকেই সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিট

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ব্যাংকিং খাতের ঋণের গড় সুদের হার ১০ শতাংশের নিচে বা সিঙ্গেল ডিজিটে নেমেছে বেশ কয়েক মাস আগেই। প্রতিমাসের হিসাবেই দেখা যাচ্ছে, গড় সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নেমে আসা ব্যাংকের সংখ্যা বাড়ছে। দেশে ৫৭টি তফসিলী ব্যাংকের মধ্যে মাত্র ১৯টি ব্যাংকের সুদের হার এখনও ১০ শতাংশের উপরে রয়েছে। আর বাকিগুলোর গড় সুদের হার ১০ শতাংশের নিচে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন দেশের বিনিয়োগে স্থবিরতা চলছে। উদ্যোক্তারা যে পরিমাণ ঋণ নেয়ার দরকার তা নিচ্ছে না। ফলে ব্যাংকিং খাতে অলস টাকা বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে পরিচালন ব্যয় কমাতে ব্যাংকগুলো আমানতের সুদ হার কমাচ্ছে। যাতে নতুন করে আমানত না আসে সেদিকেও নজর রাখছে ব্যাংকগুলো। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যানে এমন পরিস্থিতিতে দেখা গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ১৩টি ব্যাংক স্প্রেড সীমা অতিক্রম করেছে। তবে রাষ্ট্রীয় মালিকানার সব বাণিজ্যিক ব্যাংক ও বিশেষায়িত ব্যাংকের স্প্রেড নির্ধারিত সীমার মধ্যে রয়েছে। কিন্তু বিদেশী ও বেসরকারী মালিকানার ব্যাংকগুলোর স্প্রেড সীমার মধ্যে নেই। এসব ব্যাংকগুলোকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে নির্দশনা দেয়ার পরেও তারা তা মানছে না। প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, মে শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো ঋণের ক্ষেত্রে ৮ দশমিক ৭১ শতাংশ হারে সুদ আদায় করেছে। আমানতের বিপরীতে দিয়েছে ৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ সুদ। স্প্রেড দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ০২ শতাংশীয় পয়েন্ট। বিশেষায়িত ব্যাংকের স্প্রেড সবচেয়ে কম। যা মাত্র ৩ দশমিক ১০ শতাংশ। বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো আমানতের বিপরীতে দিয়েছে ৫ দশমিক ৯৭ শতাংশ সুদ। ঋণের ক্ষেত্রে নিয়েছে ৯ দশমিক ০৭ শতাংশ সুদ। বেসরকারী খাতের ৮ ব্যাংকের স্প্রেড ৫ শতাংশীয় পয়েন্টের ওপরে অবস্থান করছে। গত মে মাসে বেসরকারী ব্যাংকগুলো ঋণের ক্ষেত্রে গড়ে ১০ দশমিক ০৩ শতাংশ হারে সুদ আদায় করেছে। আমানতের বিপরীতে দিয়েছে ৫ দশমিক ২১ শতাংশ সুদ। গড় স্প্রেড দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৮২ শতাংশীয় পয়েন্ট। বিদেশী ব্যাংকগুলোর স্প্রেড এখনও ৫ শতাংশীয় পয়েন্টের উপরে রয়েছে। বিদেশী ব্যাংকগুলো আমানতের বিপরীতে ১ দশমিক ৫৯ শতাংশ সুদ দিয়েছে। অন্যদিকে ঋণের বিপরীতে আদায় করছে ৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ সুদ। এ খাতের ব্যাংকগুলোর স্প্রেড সবচেয়ে বেশি। যা ৬ দশমিক ২৬ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ঋণের বিপরীতে সবচেয়ে বেশি সুদ নিচ্ছে বেসরকারী খাতের ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড। ঋণের বিপরীতে ব্যাংকটি ১২ দশমিক ৩৮ শতাংশ সুদ আদায় করেছে। অন্যদিকে, আমানতের বিপরীতে মাত্র ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ সুদ দিচ্ছে। ব্যাংকটির স্প্রেড ৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ। এর পরেই রয়েছে বিদেশী স্টান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক। ব্যাংকটির স্প্রেড ৮ দশমিক ১৭ শতাংশ। স্প্রেড ৫ শতাংশীয় পয়েন্ট অতিক্রম করা অন্য ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে বিদেশী স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া, সিটি ব্যাংক এনএ, ওয়ারী ব্যাংক এবং এইচএসবিসি ব্যাংক। এছাড়া অন্য বেসরকারী ব্যাংকগুলো হলোÑ দ্য সিটি ব্যাংক লিমিটেড, আইএফআইসি ব্যাংক লিমিটেড, উত্তরা ব্যাংক লিমিটেড, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড, ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড, প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেড এবং দ্য ফারমার্স ব্যাংক লিমিটেড।
×