ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

অপহরণের নাটক এবং সুইস ব্যাংকে টাকা পাচার

প্রকাশিত: ০৩:৩৮, ৭ জুলাই ২০১৭

অপহরণের নাটক এবং সুইস ব্যাংকে টাকা পাচার

‘বহু ভঙ্গ বঙ্গদেশে তবু রঙে ভরা’, কথাটা যে কবিই বলে থাকুন, বড় সঠিক কথা বলেছেন। ইদানীং বিএনপির নেতানেত্রীদের কথাবার্তা এবং বিএনপি সমর্থক কোন কোন বুদ্ধিজীবীর কাজ বারবার দেখে কথাটা আরও সত্য মনে হয়। সম্প্রতি বিএনপির সদস্য সংগ্রহ অভিযানের সূচনা করতে গিয়ে বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশীদের বহু টাকা, এই টাকাগুলো কাদের, তা আমরা জানতে চাই। এই টাকাগুলো কাদের তাদের নাম আমাদের দরকার। আমরা জানতে চাই কারা সুইস ব্যাংকে কত টাকা কেন রেখেছে? বর্তমান সরকার জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে। আমি তাদের কাছেই দাবি করছি সুইস ব্যাংকে কারা কত টাকা রেখেছে তাদের নামধামসহ হিসাবপত্র প্রকাশ করুন।’ অতঃপর তিনি বলেছেন, ‘দেশে দুর্নীতির ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে। সেদিন একটা কাগজে দেখলাম, পাঁচ বছরে নতুন কোটিপতি হয়েছে ৫০ হাজার। তার মানে বুঝতে পারছেন কী পরিমাণ দুর্নীতি তারা করেছে? না হলে কিভাবে তারা কোটিপতি হয়ে গেল? এরা কারা? সবাই আওয়ামী লীগের। সে জন্যে তারা ভয়ে ও নিজেদের বাঁচানোর জন্য বিভিন্ন দেশে সেকেন্ড হোম বানিয়ে বসে আছে। টাকা বানিয়ে বসে আছে।’ এই অভিযোগ কতটা সত্য, কতটা অতিরঞ্জন সে আলোচনায় আপাতত না গিয়ে এটাকে রঙ্গরস বলছি এ কারণে যে, বিএনপি নেত্রীর এই মন্তব্য শুনে মনে হলো, তিনি আয়নায় নিজের এবং নিজের দলের প্রতিবিম্বই দেখছেন এবং ছবিটা অন্যের বলে দেখানোর চেষ্টা করছেন। এই চেষ্টাটা দেশের অনেক মানুষই বুঝতে পারছেন। কিন্তু ‘রাজা, তুমি ল্যাংটা’ এই কথাটা স্পষ্টভাবে বলার বেশি লোক দেশে নেই। সবাই বিএনপির নেতানেত্রীর রঙ্গরস উপভোগ করেন। বিএনপি সমর্থক দু’একজন বুদ্ধিজীবীও রঙ্গরস সৃষ্টিতে কম যান না। সম্প্রতি বকেয়া বাম এক বুদ্ধিজীবী নিখোঁজ অথবা গুম হয়েছেন বলে খবর প্রচারিত হওয়ায় আঁৎকে উঠেছিলাম। তাহলে কি আরেক ইলিয়াস আলী গুম হওয়ার দায়ে আওয়ামী লীগ সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে? ভদ্রলোক নিরুদ্দেশ হতেই বিএনপির প্রচারযন্ত্র সরবে বেজে উঠেছে। আওয়ামী লীগ সরকারই এই বুদ্ধিজীবীকে গুম করেছে এই অভিযোগ তুলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে জীবিত ফেরত দেয়ার দাবি জানিয়েছে। এমনকি এ্যামনেস্টি পর্যন্ত দৌড়ঝাঁপ করেছে। সরকারই বিএনপি-ঘরানার এই বুদ্ধিজীবীকে গুম করেছে বলে আরেকটি রাজনৈতিক ইস্যু তৈরি করার চেষ্টা করেছে। বুদ্ধিজীবীর স্ত্রী বলেছেন, স্বামী অপহৃত হওয়ার পর তাকে টেলিফোন করে জানিয়েছেন, ‘ওরা আমাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। মুক্তিপণ দাবি করবে। ত্রিশ-চল্লিশ লাখ টাকার ব্যবস্থা রেখো।’ ‘সেলুকাস, কী বিচিত্র এ দেশ’। একুশ শতকেও এমন রঙ্গরসের নাটক সাজানো সম্ভব? যে ভদ্রলোক সচরাচর সকাল দশটার আগে ঘর থেকে বেরুন না, তিনি নাকি সকাল পাঁচটায় টেলিফোন পেয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন! কে বা কারা তাকে টেলিফোন করেছিল? নিশ্চয়ই কোন পরিচিত জন। তার পরিচয় কি? তারপর যশোরের নওয়াপাড়ায় পুলিশ তাকে একটি বাস থেকে উদ্ধার করেছে। তিনি গফুর এই নামে টিকেট কিনে সেখানে যাচ্ছিলেন। কোন অপহরণকারী তার সঙ্গে ছিল না এবং তার সঙ্গে নিজস্ব মুঠোফোনও ছিল। তার কাছ থেকে তা অপহরণকারীরা সরায়নি। তাহলে এই মঞ্চ অসফল নাটকের পরিচালক ও নায়ক কি এই বুদ্ধিজীবী নিজেই? সত্যি কেউ কি তাকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা করেছিল? পুলিশী তদন্ত চলছে। এই ট্র্যাজি-কমেডি নাটকের আসল রহস্য শীঘ্রই উদ্ঘাটিত হবে। তবে বিএনপি-ঘরানার এই বুদ্ধিজীবী নাকি পুলিশের কাছে বলেছেন, ‘তাকে অপহরণ করে সরকারকে বিব্রত করাই ছিল সম্ভবত কোন মহলের উদ্দেশ্য।’ এ কথা যদি সত্য হয়, তাহলে সরকারকে বিব্রত করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সিদ্ধির চক্রান্ত কারা করেছিল? স্বভাবতই বিএনপির দিকে সকলে তাকাবেন। এই বুদ্ধিজীবীর তথাকথিত অপহরণের খবর প্রচারিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সরকারকে দায়ী করে বিএনপি জোর প্রচারণা শুরু করেছিল। এই বুদ্ধিজীবী যদি মহিলা হতেন, তাহলে ভাবা যেত, তিনি অন্যের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য এটা করেছেন। বহুকাল ধরে লেখালেখি করেও তিনি ইদানীং জনসমাজের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারছেন না। তার লেখালেখি তেমন গুরুত্ব পাচ্ছে না। নিজের প্রতি সকলের দৃষ্টি ফিরিয়ে আনার উদ্দেশে তিনি কিছুকাল আগে ঢাকা ক্লাবের ড্রেস-কোড অমান্য করে লুঙ্গি পরিহিত অবস্থায় ক্লাবে ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন। ক্লাবে তাকে ঢুকতে না দেয়ায় তা নিয়ে তুমুল হৈচৈ হয়েছিল। তিনি সম্ভবত খুশি হয়েছিলেন। এবারও এই অপহরণটি একই উদ্দেশে সাজানো রঙ্গরস কিনা তা আমি এই মুহূর্তে বলতে পারব না। কথায় বলে, ‘যেমন রুহ্্ তেমন ফেরেশতা।’ বাংলাদেশেও যেমন বিএনপি-ঘরানার একশ্রেণীর বুদ্ধিজীবীর কা-কারখানা, তেমনি দলের নেতানেত্রীদেরও একই ধরনের কথাবার্তা। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, সুইস ব্যাংকে জমা রাখা বাংলাদেশীদের টাকা বহুগুণ বেড়ে যাওয়ায় বিএনপি নেত্রী হাসিনা সরকারের কাছে তার হিসাব চেয়েছেন এবং দেশের ৫০ হাজার নব্যধনীর সকলেই যে আওয়ামী লীগের সেই দাবিও করেছেন। এটা সিরিয়াস অভিযোগ। এটা নিয়ে বিএনপি নেত্রী রঙ্গরস না করলেই পারতেন। প্রথম কথা, সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশীদের গচ্ছিত টাকার অংশ যে বহুগুণ বেড়েছে, সে কথা এই বিদেশী ব্যাংকের রিপোর্টেই প্রকাশ করা হয়েছে। সুইস ব্যাংক এই তথ্যটুকুই মাত্র প্রকাশ করেছে। অর্থ আমানতকারীদের নামধাম তো তারা প্রকাশ করেনি। নামধাম গোপন রাখাটাই তাদের নিয়ম। বাংলাদেশের হাসিনা সরকার চাইলেই তা পাবেন না। এটা জেনেই খালেদা জিয়া লম্বা গলায় কথা বলেছেন। সুইস ব্যাংকে এ বছর সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে এ কথাটা যখন সুনির্দিষ্টভাবে তিনি জানতেই পেরেছেন, তখন এই টাকা কারা পাচার করেছে, তাদের নামধামও জেনে নিয়ে তাদের নামের তালিকাটা প্রকাশ করলে কি ভাল হতো না? তাহলে দেখা যেত এই অর্থ পাচারকারীদের কতজন আওয়ামী লীগের এবং কতজন বিএনপির? একটা মজার কথা বলি। বেশ কয়েক বছর আগে অধুনালুপ্ত বিসিসিআই ব্যাংকের (ইধহশ ড়ভ ঈৎবফরঃ ধহফ ঈড়সসবৎপব ওহঃবৎহধঃরড়হধষ) কেলেঙ্কারির ঘটনাটি অনেকের নিশ্চয়ই স্মরণ আছে। মানি লন্ডারিংসহ আরও অনেক গুরুতর অভিযোগ এই ব্যাংকটির বিরুদ্ধে ওঠে এবং ব্রিটিশ সরকার সে সম্পর্কে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করায় বিসিসিআই বন্ধ হয়ে যায়। এই ব্যাংকে বহু দেশের শাসক ও শাসক সম্প্রদায়ের বিদেশে পাচার করা অর্থের বিশাল আমানত ছিল। তাদের মধ্যে বাংলাদেশের এবং পাকিস্তানের অনেক শীর্ষ জেনারেলের নামও প্রকাশিত হয়েছিল। দেখা গিয়েছিল, যে রাজনীতিকদের সামরিক নেতারা দুর্নীতিবাজ বলে সুযোগ পেলেই গালমন্দ করেন, সেই জেনারেলদের পাচার করা অর্থই এই ব্যাংকে ছিল তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। খালেদা জিয়া ৫০ হাজার কোটিপতি গত ৫ বছরে দেশে গজিয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। এবং তারা সকলেই আওয়ামী লীগের বলে দাবি করেছেন। তাহলে এই পঞ্চাশ হাজার নব্যধনীর নামধাম আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে চেয়ে লাভ নেই। বিএনপি নেত্রী নিজেই দলের একটি পরিসংখ্যান ব্যুরো গঠন করে এই নব্যধনীদের নামের তালিকা সংগ্রহ ও প্রকাশ করতে পারেন। তাহলে দেখা যেত এই চরিত্রহীন লুটেরা নব্যধনীদের কত অংশ বিএনপির এবং কত অংশ আওয়ামী লীগের। এদের মধ্যে একটি ভাসমান অংশেরও সন্ধান পাওয়া যেত। যারা বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে বিএনপির সঙ্গে থাকে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে আওয়ামী লীগের হয়ে যায়। এদের আসল জন্মদাতা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জেনারেল জিয়াউর রহমান। তাই এদের আসল এবং গোপন আনুগত্য বিএনপির দিকে। দেশে নব্যধনীর সংখ্যা বেগম জিয়া ৫০ হাজার বলেছেন। এরা সকলেই নাকি কোটিপতি। এই ৫০ হাজার সংখ্যা নিয়ে দেশে বিতর্ক আছে। তবু যুক্তির খাতিরে বেগম জিয়ার সংখ্যাটাই মেনে নিলাম। বিএনপি নেত্রী এদের সম্পর্কে তার বক্তৃতায় একটি তথ্য গোপন করেছেন। এই পঞ্চাশ হাজার নব্য কোটিপতির জন্ম গত পাঁচ বছরে নয়। অর্থাৎ আওয়ামী লীগের আমলে নয়। এদের জন্ম ও বিকাশ জিয়াউর রহমান, এরশাদের সামরিক শাসন এবং বেগম জিয়ার সরকারের আমলে। গত পাঁচ বছরে হয়তো এদের সংখ্যা ৫০ হাজারে এসে পৌঁছেছে। বঙ্গবন্ধু সরকারকে উৎখাতের পর জিয়াউর রহমান দেশের অর্থনীতির চাকা উল্টো দিকে ঘুরিয়ে দেন। সরকারী ব্যাংক, বীমা প্রাইভেট পুঁজির হাতে তুলে দিয়ে নব্যধনীদের লুটপাটের জন্য দরোজা উন্মুক্ত করে দেন। ঘোষণা করেন ‘মানি ইজ নো প্রবলেম’। দেশে দলে দলে স্যুটকেস সর্বস্ব শিল্পপতি গড়ে ওঠে। তাদের মধ্যে ব্যাংকের ঋণখেলাপীদের সংখ্যা বাড়ে হাওয়ার গতিতে। বিদেশী অর্থনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলেন, পাকিস্তানে গড়ে উঠেছিল ২৪ বছরে ২৩টি কোটিপতি পরিবার। বাংলাদেশে জিয়াউর রহমানের আমলে গড়ে ওঠে ২৩ হাজার কোটিপতি। এরশাদের আমলে তা বেড়ে দাঁড়ায় আরও কয়েক হাজার। তারপর খালেদা জিয়ার আমলে তা লাগামহীন হয়ে ওঠে। সেই সঙ্গে বিদেশে কালো টাকা পাচার বেড়ে যায়। এখন বিদেশে টাকা পাচার ও বিদেশী ব্যাংকে টাকা রাখার ব্যাপারে বেগম জিয়া সোচ্চার এবং আওয়ামী লীগের ঘাড়ে সব দোষ চাপানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু বিদেশে এই অসাধু পন্থায় অর্জিত অর্থ পাচার এবং তা বিদেশী ব্যাংকে রাখার ব্যাপারে তার এক ছেলেই অভিযুক্ত ও দ-িত হয়েছে। হাসিনা পরিবারের কেউ হয়নি। বিদেশী ব্যাংক থেকে সেই অর্থের কিয়দংশ হাসিনা সরকারকেই উদ্ধার করতে হয়েছে। আওয়ামী লীগের আমলেও কোটিপতি নব্যধনীদের সংখ্যা বাড়েনি তা নয়। কিন্তু বিএনপি আমলের নব্যধনীদের তুলনায় তাদের আনুপাতিক সংখ্যা কত তার একটা হিসেব বিএনপির নেত্রীই দেশবাসীকে দেবেন কি? বেগম জিয়া আওয়ামী লীগকে খোঁচা মেয়ে বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অবৈধভাবে কোটিপতি হওয়ায় ভয়ে এবং নিজেদের প্রাণ বাঁচাবার তাগিদে বিভিন্ন দেশে সেকেন্ড হোম বানিয়ে বসে আছে এবং টাকা বানিয়েছে।’ অবৈধ অর্থ ও সন্ত্রাসের দুর্গ হাওয়া ভবন তৈরির নায়ক বেগম জিয়ার প্রথম পুত্র বিষয়ে দ-িত হওয়ার ভয়ে লন্ডনে সেকেন্ড হোম বানিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের শেখ ও রাজাদের মতো প্রায় একদশক ধরে বাস করছেন। তার হাতে আলাদীনের চেরাগ। সেই চেরাগে ঘষা দিলেই টাকা আসে। সেই টাকায় লন্ডনে রাজার হালে বাস করেন। বড় বড় হোটেলে প্রচুর অর্থ ব্যয়ে রাজনেতিক সভা করে বাংলাদেশের জাতির পিতা থেকে শুরু করে জাতীয় নেতাদের চরিত্রে নর্দমার কাদা ছেটান। আরেক পুত্র কুয়ালালামপুরে সেকেন্ড হোম বানিয়েছিলেন। তার সম্প্রতি মৃত্যু হয়েছে। বেগম জিয়ার দুই পুত্রই নব্য কোটিপতি। দু’জনেই দুর্নীতি ও অন্যান্য গুরুতর অভিযোগে বিচারে দ-িত হওয়ার ভয়ে দেশ ছেড়ে পালান। আর দেশে ফেরেননি। বেগম জিয়া প্রবাদের ‘চোরের মায়ের মতো’ বড় গলা করে গালি দিচ্ছেন আওয়ামী লীগকে। আমি আওয়ামী লীগকেও ধোঁয়া তুলসি পাতা বলি না। কিন্তু বেগম জিয়া তাদের দিকে আঙ্গুল তোলেন কি অধিকারে? জেনারেল জিয়াউর রহমানের নাকি একটি ভাঙ্গা স্যুটকেস মাত্র ছিল। তার মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে তার লায়েক পুত্র তারেক রহমান কি করে সেই ভাঙ্গা স্যুটকেস থেকে বোম্বে ডাইং থেকে নানা বড় বড় ব্যবসা ফেঁদে রাতারাতি হাওয়া ভবন গড়েছিলেন, কুবেরের ধনের অধিপতি হলেন তা এক বিস্ময়! পাকিস্তানে ১৯৫৮ সালে ক্ষমতা হারিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ইস্কান্দার মির্জা। তাকে লন্ডনে চলে যেতে হয়েছিল। অর্থাভাবে সেই এক সময়ের প্রবল প্রতাপান্বিত মানুষ তার ভারতীয় বন্ধু ধীরেশ্বর স্বামীর রেস্টুরেন্টে ম্যানেজারের চাকরি করতেন। মিসরের রাজা ফারুক সিংহাসন চ্যুতির পর প্যারিসে এসে রেস্তরাঁয় ঢুকে খাবারের টাকা দিতে পারতেন না। আর বাংলাদেশের বিএনপির যুবরাজ দেশ থেকে পালানোর পরও বিদেশে সমস্ত পরিবার নিয়ে রাজার হালে বাস করছেন। রহস্যটা কি? বেগম জিয়া আগে তার ঘরের হিসাবটা দেবেন কি? বিএনপি-ঘরানার বুদ্ধিজীবী অপহরণ নাটকের একক অভিনেতা কি? দলের নেত্রী আয়নায় নিজেদের চেহারা দেখে সেটাকে আওয়ামী লীগের চেহারা বলে কি চালাতে চান? এটাকে রঙ্গরস ছাড়া আর কী বলব? এই কৌতুক নাট্যের শেষ পরিণতি কি? মানুষকে কৌতুক রঙে মাতিয়ে আগামী নির্বাচনে জয়লাভ? দেশের মানুষকে বিএনপি নেতারা সত্যই কি এত বোকা ভাবেন? [লন্ডন ৫ জুলাই বুধবার, ২০১৭]
×