ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

শতাব্দী জুবায়ের

পাহাড়ের কান্না!

প্রকাশিত: ০৪:০৮, ৬ জুলাই ২০১৭

পাহাড়ের কান্না!

বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই কয়েকদিনের টানা বর্ষণে চট্টগ্রাম, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও কক্সবাজারে পাহাড় ধসে অনেক প্রাণ ঝরে গেছে। এই ধসে শুধু সাধারণ জনগণ নয় সেনাবাহিনীর সদস্যসহ ১৫৬ জন নিহত হয়েছেন। বর্ষার শুরুতেই যদি এই অবস্থা হয় তবে সামনে আরও বর্ষণে যে কি হবে সেটাই ভাবনার। বাস্তবিক অর্থে পাহাড়ের প্রান্তিক মানুষকে নিয়ে ভাবার মতো কেউ নেই। কেন্দ্রের মানুষদের তাদের নিয়ে ভাবতে যেন মানা! এই প্রান্তিক মানুষগুলো রাজনৈতিকভাবেও শক্তিশালী নয় আবার অর্থনৈতিকভাবেও স্বাবলম্বি নয়। হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর এই সদস্যরা মরলেই কি? বা বাঁচলেই কি? যারা কেন্দ্রে বাস করেন তাদের তাতে কিছু আসে যায় না। পাহাড় ধসের মতো মর্মান্তিক ঘটনায় ২০০৭ সালে ১২৭ জনের প্রাণহানি ঘটেছিল। তৎকালীন সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি কমিটি গঠন করেছিলেন। সেই কমিটি পাহাড় ধসের ২৮টি কারণ চিহ্নিত করেছিল। পাহাড় রক্ষা এবং ধস ঠেকাতে প্রণয়ন করেছিল ৩৬ দফা সুপারিশ। দুঃখের বিষয় হলো গত এক দশকেও বাস্তবায়ন হয়নি একটি সুপারিশও। এটিই বিস্ময়ের। পাহাড়ের পাদদেশের বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে কিংবা পাহাড়ী অঞ্চলে বসতি স্থাপন করে হয়ত প্রাণহানি কমানো যেতে পারে কিন্তু নির্বিচারে পাহাড়ী বনজ সম্পদ ধ্বংস ও পাহাড় কাটা বন্ধ না করলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে। এতে করে অদূর ভবিষ্যতে যে পরিবেশ বিপর্যয় ঘটবে তা মোকাবেলা করা কঠিন হয়ে যাবে। তাই পাহাড় রক্ষা করার জন্য এখনই কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, পাহাড় ধসের কারণ দুটি-ভূতাত্ত্বিক ও মানবসৃষ্ট। কোন অঞ্চলে ৩টি ভূতাত্ত্বিক কারণে পাহাড় ধস হতে পারে। পাহাড়ের ভূতাত্ত্বিক গঠন, বালুর বিন্যাস এবং পাহাড়ের ঢালুতা। আর মানব সৃষ্ট কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে- পাহাড়ে চাষাবাদ ও বন উজাড় এবং পাহাড় কাটা। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
×