ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

খন্দকার মাহ্বুবুল আলম

চাই সমন্বিত উদ্যোগ

প্রকাশিত: ০৪:০৮, ৬ জুলাই ২০১৭

চাই সমন্বিত উদ্যোগ

সাম্প্রতিককালে একটার পর একটা সৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগ আমাদের ভাবিয়ে তুলছে। প্রকৃতির স্বাভাবিক মেজাজ তো আছেই, তার ওপর একশ্রেণীর লোভী মানুষের অপরিণামদর্শী আচরণ প্রকৃতিকে আরও বেশি পরিমাণে ক্ষুব্ধ করে তোলে। প্রকৃতির এই ক্ষুব্ধতার পেছনে যৌক্তিক কারণ নিহিত থাকলেও মানুষের ওপর মানুষের ক্ষুব্ধতার কোন যৌক্তিক কারণ থাকে না। মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠার পেছনে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে লোভ এবং লাভের বিষয় জড়িত থাকে। এই লাভ এবং লোভের কারণে মানুষ শুধু মানুষের ওপর কেন মানুষের এই পরম বন্ধু প্রকৃতির ওপরও নির্বিচারে আক্রমণ চালায়, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। এক্ষেত্রে হুজুগে চলে না, মানুষ কিন্তু হুজুগে চলে। যেখানে ‘হুজুগ’ থাকে সেখানে যুক্তিবোধ থাকে না। এটিই হচ্ছে মানবজাতির জন্য ভারি বিপদের কথা! হাওড়ের বিপর্যয়ের পর ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ এবং তৎপরবর্তীকালে অতিবৃষ্টিজনিত পাহাড়ী ঢল আর ধস আবারও মানবিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি করল। প্রকৃতির সঙ্গে আমরা যুদ্ধে লিপ্ত হতে গিয়ে হেরে যাচ্ছি। নিকট অতীতে পাহাড় ধসের কারণে এত বেশি মানুষ নিহত হওয়াসহ ঘরবাড়ি ধ্বংস হওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে মনে হয় না। আমরা কি শুধু এমন দুঃখজনক পরিস্থিতির মধ্যে বার বার হাবুডুবু খেতেই থাকব। ২০০৭ সালেও এমন বর্ষণজনিত পাহাড়ী ঢল ও ধসের কারণে ১২৭ জন নিহত হওয়ার পরও মানুষের মধ্যে সচেতনতাবোধ ফিরে না আসায় আবারও এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হলো। এর পরও মানুষ এই পাহাড়গুলোকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলে। নির্বিচারে পাহাড় কেটে বিভিন্ন অংশে সমতল করে ঘরবাড়ি নির্মাণ, নির্বিচারে বৃক্ষনিধন ইত্যাদি কারণে এমন পরিস্থিতি বা অবস্থার সৃষ্টি বলে বিশেষজ্ঞরা মত দিয়ে বার বার সতর্ক করে আসা সত্ত্বে¡ও এই সতর্কবাণীগুলো কেন এই মানুষদের কান পর্যন্ত পৌঁছে না। অনেকে এই পাহাড় কেটে মাটি অন্যত্র বিক্রি করে ব্যবসা করে থাকে। দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে কিনা জানি না। প্রকৃতির ওপর এমন অত্যাচার প্রকৃতি কিভাবে সইবে? শুধু কি তাই? এর পাশাপাশি দেখা যায়, ঢাকা রাজধানীসহ চট্টগ্রাম শহর এবং অন্যান্য শহরেও রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির হিড়িক তো আছেই। এসব কাজ বিশেষত বর্ষা মৌসুম এলেই বেশি দেখা যায়। কারণ অজ্ঞতা। এ সময় কাদা পানিতে একাকার হয়ে বেহাল অবস্থার কারণে জনদুর্ভোগ বেড়ে যায়। এক্ষেত্রেও সুষ্ঠু নীতিমালার অভাব বিদ্যমান। একে অপরের কাঁধে দায় দিয়ে বাঁচতে চায় যেন। এসব সমস্যার নিরসনে সমন্বিত উদ্যোগের দরকার থাকলেও এমনটি লক্ষ্য করা যায় না। এটি দেশ ও মানব প্রেমের অভাব নয় কী? ষড়ঋতুর দেশ এই বাংলাদেশে বর্ষাকাল এলেই দুর্ভোগের কোন শেষ থাকে না। বৃষ্টিজনিত জলাবদ্ধতা মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রাকে একেবারে অচল করে দেয়। কোথাও হাঁটু পানি, কোথাও কোমর পানিতে সয়লাব হয়ে যায়। ফলে এসব গুরুত্বপূর্ণ নগরীর কোন কোন সড়ক পথের জলাবদ্ধ জলের গা বেয়ে নৌকা চলার দৃশ্যও দেখা যায়। অনেক নিচু ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করে তোলে। এবারের বর্ষায় চট্টগ্রামের অনেক নিম্নাঞ্চল বেশি প্লাবিত হয়েছে। মধ্যম হালিশহর, চট্টগ্রাম থেকে
×