ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

লিয়াকত হোসেন খোকন

আর দেরি নয়

প্রকাশিত: ০৪:০৭, ৬ জুলাই ২০১৭

আর দেরি নয়

বর্ষা মৌসুম এলেই পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড় ধস দেখা দেয় তেমনি ঢাকার জলাবদ্ধতা ও যানজট প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। এদিকে ঢাকার রাস্তাঘাট ক’দিন বাদে বাদে মেরামত করার ফলে জনগণকে চলাচলে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দেখা যায়, আজ সিটি কর্পোরেশন বা সড়ক বিভাগ রাস্তা খুঁড়ছে, ড্রেন বড় করছে, এখানে খুঁড়ছে ওখানে খুঁড়ছে শুধুই খোঁড়াখুঁড়ির কাজ চলছে বর্ষাকালেই। এ যেন থেমে নেই, রাস্তা মেরামতের নামে খোঁড়াখুঁড়ি চলছেই। এরই ১ মাস পরে ওয়াসা আসে, দু’মাস পরে তিতাস গ্যাসের লোককজন আসে লাইন ঠিক করার জন্য। রাস্তা খুঁড়ছে- এই যে বারে বারে রাস্তা খুঁড়াখুঁড়ির ফলে যানবাহন চলাচলে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, মানুষও হেঁটে যে যাবে সে ব্যবস্থাটুকুও আর থাকে না। অতি বৃষ্টি হলে রাস্তায় জমে যায় প্রায় হাঁটু পরিমাণ পানি। এই তো ঢাকার বর্ষাকালের চিত্র। পানি যে নিষ্কাশন হবে সে ব্যবস্থাও আজ ক্ষীণ। তাই প্রতিবছর বর্ষা এলেই ঢাকার রাস্তাঘাট দিয়ে চলাচলে জনগণের ভোগান্তি বাড়ে। আর এজন্যই কালের পরিক্রমায় ঢাকা এখন বিশ্বের বাস অযোগ্য শহরের তালিকায়। এক সময় বর্ষার পানি সরে যাওয়ার জন্য ঢাকা শহরের চারপাশ ঘিরে থাকা নদীগুলোর সঙ্গে সংযোগ স্থাপনকারী অনেক খাল ছিল। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ- ডেমরা (ডিএনডি) প্রকল্পের ভিতর বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে জালের মতোই ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা খালের অধিকাংশই এখন হারানো অতীত। খাল দখলের কারণেই আজ এই বর্ষায় খোদ ঢাকা নগরীতে দুর্বিষহ জলাবদ্ধতা চলছে আর এ কারণে ভোগান্তিতে রয়েছে কয়েক লাখ নাগরিক। এ অবস্থায় আমরা মনে করি, হারিয়ে যাওয়া খালগুলো অবৈধ দখলদারদের কাছ থেকে উদ্ধার করে যথাযথ তত্ত্বাবধানের মাধ্যমে পানির প্রবাহ ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে। তাতে বদলে যাবে ঢাকার চিত্র। এভাবেই ঢাকা একটি আধুনিক ও সুপরিকল্পিত নগর হিসেবে গড়ে উঠবে। দুঃখ সহকারে এ কথাও বলতে বাধ্য হচ্ছি যে, ঢাকার চারপাশে থাকা নদী ও ঢাকার মধ্যে থাকা দখল হয়ে যাওয়া খালগুলো উদ্ধার করে রক্ষা করা না গেলে ঢাকার মৃত্যু অবধারিত। শুধু জলাবদ্ধতা নয়, সুপেয় পানির অভাবেও ঢাকায় মানুষের বসবাস অযোগ্য হয়ে দাঁড়াবে। সুতরাং সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ এ ব্যাপারে জরুরী চিন্তাভাবনা করুন। পাহাড় ধসে পার্বত্য চট্টগ্রামে শতাধিক মানুষের মৃত্যুর পরে অবশেষে পরিবেশবাদীরা নড়েচড়ে উঠে এর কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে নানা ধরনের বক্তব্য রাখছেন। কোন কোন মিডিয়া গোলটেবিলও করেছে। আমরা তো বলব, এ সব বক্তব্য কয়েকদিন মিডিয়ায় সরব হয়ে থাকবে। ক’দিন বাদে আমরা সব ভুল যাব। অতীতে এই হয়েছে, ভবিষ্যতেও তাই হবে। মূলত এ জন্য দায়ী যারা পাহাড় কাটেন, বন উজাড় করেন তারাই। তবে বজ্রপাত কোন কারণ হতে পারে না। পাহাড় কাটা শুরু হয় ১৯৭৭ সাল থেকেই অর্থাৎ যখন থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ে অনেক বাঙালী সেটলারকে বসতি গড়ার জন্য স্থানান্তর করা হয়। এরাই শুরু করে পাহাড় কাটা, বনজঙ্গল উজাড় করা। পাহাড় কেটে কেটে সেটলাররা বাড়িঘর তৈরি করতে থাকে। এক পর্যায়ে সেটলারদের সঙ্গে যোগ হয় ভূমিদস্যুরা। রূপনগর, ঢাকা থেকে
×