ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বর্ষা এলেই জলাবদ্ধতা

প্রকাশিত: ০৪:০৬, ৬ জুলাই ২০১৭

বর্ষা এলেই জলাবদ্ধতা

পাহাড় ধস মনুষ্য সৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগ। অস্বীকার করা যাবে না পাহাড় কেটে নিজেরাই নিজেদের বিপদ ডেকে আনি। অনেক বছর ধরেই পার্বত্য অঞ্চলে পাহাড় কেটে বসতি স্থাপনা ও বিভিন্ন বাণিজ্যিক স্থাপনা তৈরি এটা নতুন কোন ঘটনা বা বিষয় নয়। এক ধরনের অসৎ ব্যক্তিরা রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থেকে পাহাড়ের গাছপালা কেটে পাহাড়কে ন্যাড়া করে পাহাড়কে দিনে দিনে ঝুঁকিপূর্ণ ও ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। তারা অর্থ উপার্জনকে প্রধান ও মূল লক্ষ্য মনে করেন। গাছপালা কেটে বন উজাড় করায় ও অপরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন স্থাপনা তৈরিতে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে মানুষের যে প্রাণহানি ঘটছেÑ এ বিষয়ে তাদের কোন মাথাব্যথা নেই। প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য মূলত এরাই দায়ী। পাহাড়ের নিচ থেকে মাটি কাটার ফলে পাহাড় তার ওপরের ভারি বোঝা নিচের দিকে চাপ প্রয়োগ করে। পাহাড়ের নিচের ভিত যদি মজবুত না থাকে এবং এ অবস্থায় যদি একটানা দু-তিন দিন অঝোর ধারায় বৃষ্টি হয় তখন পাহাড়ের মাটি নরম হয়ে নিচের দিকে নামতে থাকে। এ সময় পাহাড়ের গায়ে যে সকল স্থাপনা বা বসতি থাকে তা মাটিকে আঁকড়ে ধরার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। ফলে বসবাসরত স্থাপনা ভেঙ্গে নিচে পড়ে মানুষের প্রাণহানি হয়। এভাবে প্রতিবছর শত শত লোকের প্রাণহানি ঘটে। এভাবে কত যুগ প্রবাহিত হলে মানুষের বিবেকে নাড়া দেবে তা বোধগম্য নয়! পাহাড় কাটা ও বন উজাড় করা এ দুটিকে বিশেষজ্ঞরা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মূল কারণ বলে মনে করছেন। পাহাড়িয়া অঞ্চলের সবাইকে এ বিষয়ে অধিক সচেতনতা থাকতে হবে। এক ধরনের অসৎ ব্যক্তিরা দিনের পর দিন পাহাড় কেটে বসতি স্থাপন করেই চলেছে। এদের যেন ধরা ও বাঁধা দেয়ার কেউ নেই! বনভূমি থেকে গাছপালা কেটে ফেলায় পাহাড়ী ঝরনাও দিন দিন শুকিয়ে যাচ্ছে। আইনত পাহাড় কাটা দ-নীয় অপরাধ হলেও কেউ তা তোয়াক্কা করছে না। এই আইনের সঠিক প্রয়োগ হতেও দেখা যাচ্ছে না। পাহাড় কাটা থেকে বিরত রাখার জন্য স্থানীয় এমপি, চেয়ারম্যান, মেম্বার ও জনপ্রতিনিধিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সর্বদা সজাগ থাকতে হবে- যেন কেউ কোনভাবেই কোন ব্যক্তিই পাহাড় কেটে বসতি বা ইমারত তৈরি করতে না পারে। পাহাড় ধসের জন্য প্রকৃতিকে দোষারোপ করে লাভ নেই। প্রকৃতি তার স্বাভাবিক আচরণ করবে এটাই স্বাভাবিক ও চিরন্তন সত্য। ভবিষ্যতে প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে মোকাবেলার জন্য এখনই আমাদের সঠিক পদক্ষেপ নিতে হবে। তা না হলে ভবিষ্যতে আরও বড় ধরনের বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে হবে। মনে রাখতে হবে, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জন্য আমরা নিজেরাই দায়ী। অন্যদিকে রাজধানী ঢাকা শহরে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির সময় অনাবৃষ্টি ও অতিবৃষ্টির ফলে পানি নিষ্কাশন হতে না পেরে রাস্তায় পানি জমে গাড়ি ও মানুষ চলাচলের একেবারে অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ফলে মানুষকে সীমাহীন দুর্ভোগ ও কষ্ট পোহাতে হয়। একটানা তিন থেকে চার ঘণ্টা অতিবৃষ্টি হলেই রাজধাানীর একটু নিচু জায়গা হাঁটু পানিতে ভরে যায় এবং দেখলে মনে হয় গ্রামে কোন নদীর মধ্যে রিক্সা ও গাড়িগুলো কোন গন্তব্যে পৌঁছার জন্য এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করছে। আবার অনেক স্থানে রিক্সা বা গাড়ি পানির মধ্যে অদৃশ্য গর্তে আটকে আছে। ঢাকায় প্রতিবছর বর্ষা এলে যদি এভাবে জনগণের দুর্ভোগ পোহাতে হয় তবে মানুষ কিভাবে স্বস্তিতে রাজধানীতে বসবাস করবে! তবে এরই নাম কি রাজধানী? আলাদাতপুর, নড়াইল থেকে
×