ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

হয়রানির শিকার যাত্রী

বরিশালে চাঁদাবাজদের কাছে জিম্মি পরিবহন মালিক শ্রমিক

প্রকাশিত: ০৬:৩৩, ৫ জুলাই ২০১৭

বরিশালে চাঁদাবাজদের কাছে জিম্মি পরিবহন মালিক শ্রমিক

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ ঢাকাসহ উত্তরাঞ্চল থেকে বরিশাল তথা বৃহত্তর দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে চলাচল করা পরিবহন থেকে দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশ্যেই চাঁদাবাজি করে আসছে চিহ্নিত একটি প্রভাবশালী মহল। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ওই চক্রের লোকজনে পরিবহন চলাচলে বাধা প্রদান করে আসছে। এমনকি অর্থ চুক্তির প্রেক্ষিতে সমঝোতার অঙ্গীকার নামায় স্বাক্ষর আদায়েরও অভিযোগ রয়েছে চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে। সূত্রমতে, চাঁদাবাজদের হাত থেকে রেহাই পেতে ভুক্তভোগী সংশ্লিষ্ট পরিবহন মালিকরা সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। ওই আবেদনের অনুলিপি প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে প্রেরণ করেও কোন সুফল মেলেনি। ফলে চাঁদাবাজদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়া পরিবহন মালিক, চালক এবং স্টাফরা এ ঘটনায় দ্রুত প্রতিকার পেতে সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। জানা গেছে, বিগত এক যুগেরও অধিক সময় ধরে ঢাকাসহ উত্তরাঞ্চল থেকে যাত্রী নিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে চলাচল করে আসছে মেঘনা, সুগন্ধা, সোনারতরী, গোল্ডেন লাইন, বেপারিসহ বিভিন্ন নামের অসংখ্য পরিবহন। গত কয়েক মাস আগে ওইসব পরিবহন চলাচলে বাঁধা প্রদান করেন বরিশাল ও পটুয়াখালী মিনি বাস মালিক সমিতির দায়িত্বশীল এক নেতা। ভুক্তভোগী পরিবহনের একাধিক চালকরা জানান, ওই নেতা ও তার সহযোগীরা বরিশালের বাকেরগঞ্জের মূল সড়কে স্বঘোষিত চেক পোস্ট বসিয়ে উল্লিখিত যাত্রীবাহী পরিবহনগুলো থামিয়ে প্রকাশ্যেই চাঁদাবাজি করে আসছে। একইভাবে রূপাতলী-ঝালকাঠি রুটেও চেকপোস্ট বসিয়ে একইভাবে চাঁদাবাজি করা হয়। চালকরা আরও জানান, প্রশাসন ও ট্রাফিক পুলিশের মতো চেক পোস্ট বসিয়ে প্রকাশ্যেই বাস মালিক সমিতির ওই নেতা এবং তার সহযোগীরা যাত্রীবাহী পরিবহন থামিয়ে চাঁদাবাজি করে আসছে। বিষয়টি প্রশাসন তথা বাস মালিক সমিতির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ জানলেও রহস্যজনক কারণে সবাই নীরব ভূমিকা পালন করছেন। ফলে ক্রমেই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে চাঁদাবাজ চক্রটি। বিষয়টি নিয়ে সমিতির সদস্যদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হলেও ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতা হওয়ার কারণে চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছেন না। একাধিক পরিবহন মালিক জানান, দীর্ঘ একযুগেরও অধিক সময় ধরে তারা সংশ্লিষ্ট সমিতি ও প্রশাসনের অনুমোদনক্রমে বৈধভাবেই দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে বাস চলাচ্ছেন। গত কয়েক মাস আগে ওইসব পরিবহন চলাচলে বাধা প্রদান করেন বরিশাল ও পটুয়াখালী মিনি বাস মালিক সমিতির দায়িত্বশীল এক নেতা ও তার সহযোগীরা। ওই নেতার দাবি অবৈধভাবে দক্ষিণের বিভিন্ন রুটে পরিবহনগুলো চালানো হচ্ছে। তাই প্রতিনিয়ত মহাসড়কের পাশের উল্লিখিত দুইটি স্থানে প্রকাশ্যে টেবিল-চেয়ার বসিয়ে চেকপোস্ট বসিয়ে ওইসব যাত্রীবাহী পরিবহন থামিয়ে তাদের চাহিদা অনুযায়ী চাঁদা আদায় করা হয়। যারা চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানায় যাত্রীসহ তাদের পরিবহনগুলো ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটক করে রাখা হচ্ছে। এমনকি স্টাফদের মারধরও করা হয়। পরবর্তী সময়ে তাদের দাবিকৃত টাকা দেয়ার পর কিংবা অর্থ চুক্তির প্রেক্ষিতে সমঝোতার অঙ্গীকার নামায় স্বাক্ষর আদায় করে পরিবহনগুলো ছাড়া হয়।
×