ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ-থাই পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক আজ

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ৫ জুলাই ২০১৭

বাংলাদেশ-থাই পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক আজ

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ ১৯ বছর পর বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। দুই দেশের মধ্যে সপ্তম পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের তিন দিনব্যাপী এ বৈঠক আজ বুধবার থেকে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে। এ বৈঠকে অংশ নেয়ার জন্য থাই পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডন প্রামোদ উইনেই আজ ঢাকায় আসছেন। থাইল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাঈদা মুনা তাসনিম গত রবিবার থাই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে আসন্ন বৈঠকের আলোচ্যসূচী নিয়ে আলোচনা করেছেন। ঢাকার বৈঠকে থাই পররাষ্ট্রমন্ত্রী ১৮ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন। অন্যদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত একটি বড় দলের নেতৃত্ব দেবেন। বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে এ বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে মঙ্গলবার থাইল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাঈদা মুনা তাসনিম জনকণ্ঠকে বলেন, দুই দেশের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠানের জন্য সকল ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। তিনি প্রত্যাশা করেন, এই বৈঠকের মধ্য দিয়ে দুই দেশের মধ্যে এক নতুন দিগন্তের সূচনা হবে। থাই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে রাষ্ট্রদূত মুনা তাসনিম বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর শুভেচ্ছা বার্তা পৌঁছে দেন। তিনি বলেন, আসন্ন বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড যৌথ কমিশনের বৈঠকের মাধ্যমে পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা দুই দেশের সম্পর্ক আরও পর্যালোচনা এবং শক্তিশালী করার পদক্ষেপ নেবেন। জবাবে থাই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রশংসা করে বলেন, থাইল্যান্ড বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করতে আগ্রহী। উল্লেখ্য, সর্বশেষ যৌথ কমিশনের বৈঠকটি হয়েছিল ১৯৯৮ সালে। যৌথ কমিশনের বৈঠক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বেই অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এর আগে ২০১৫ সালে ঢাকায় দুই দেশের মধ্যে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই বৈঠকে যোগ দিতে ঢাকায় এসেছিলেন থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্র সচিব নরসিত সিনহাসেনি। বৈঠকে বাণিজ্য, খাদ্য, জ্বালানি, পর্যটন ও স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ বিষয়ে জানিয়েছিল থাইল্যান্ড। সেই সময় খাদ্য ও পণ্যের মান সংরক্ষণ এবং যাচাইয়ের জন্য বাংলাদেশের বিএসটিআই ও থাইল্যান্ডের মান নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান একসঙ্গে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। এবার থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ নতুন স্তরে নিতে কানেকটিভিটি ইস্যুতে আলোচনা হবে। এছাড়া সড়ক ও সমুদ্রপথে দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ মাধ্যম শক্তিশালী করার বিষয়ে আলোচনা হবে। বিসিআইএম (বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মিয়ানমার) করিডরের সঙ্গে সড়ক পথে থাইল্যান্ডও যুক্ত হতে আগ্রহী। থাইল্যান্ডের পূর্ব-পশ্চিম করিডর এবং উত্তর-দক্ষিণ করিডরের সঙ্গে বিসিআইএম করিডর যুক্ত করা সম্ভব। এতে করে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হবে। আবার এই রুট ব্যবহার করে বাংলাদেশ সরাসরি মালয়েশিয়া, লাওস ও ভিয়েতনামও যেতে পারবে। এই সংযোগ স্থাপিত হলে দুই দেশেরই বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে এবং উন্নয়ন নিশ্চিত হবে। সমুদ্রপথে ও উপকূলীয় জাহাজ চলাচলের মাধ্যমে বাংলাদেশের মংলা এবং চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে থাইল্যান্ডের কয়েকটি বন্দরের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব। এই সংযোগ কার্যকর করতে এবারের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে আলোচনা হবে।
×