ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

হাঁপানির ক্রমবর্ধমান প্রবণতা মোকাবেলা

প্রকাশিত: ০৬:৪৩, ৪ জুলাই ২০১৭

হাঁপানির ক্রমবর্ধমান প্রবণতা মোকাবেলা

হাঁপানির দ্রুত ক্রমবর্ধমান প্রবণতা এখন বাংলাদেশে উদ্বেগের একটি কারণ বলে মনে করা হয়। সম্প্রতি প্রকাশিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট থেকে জানা যায়, বর্তমানে বিশ্বে হাঁপানি রোগীর সংখ্যা প্রায় ১৫ কোটির বেশি এবং প্রতিবছর বিশ্বে ২৬ লাখ মানুষের মৃত্যু হয় এই রোগের কারণে। এ সবের মধ্যে শিশু মৃত্যুর সংখ্যা ৪ লাখের মতো। অন্যদিকে একই রিপোর্টে প্রকাশিত হয় যে বাংলাদেশে বর্তমানে হাঁপানি রোগীর সংখ্যা বাংলাদেশে প্রায় ১০ মিলিয়ন মানুষ ২০০২ সালে ৭ মিলিয়ন থেকে বেড়ে দাঁয়ায়। প্রতিবছর নতুন করে আরও ৫০ হাজার লোক এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এবং মাত্র পাঁচ শতাংশ রোগী এ রোগের যথার্থ চিকিৎসা পাচ্ছে (দুই শতাংশ রোগী বিদেশে বা পার্শ্ববর্তী দেশে গিয়ে)। স্বভাবত কারণেই এই রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পর আমাদের যথেষ্ট উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ রয়েছে। বাংলাদেশে এই রোগের চিকিৎসা ব্যবস্থা অপ্রতুল এবং চিকিৎসক কম হলেও আধুনিক চিকিৎসা যে নেই তা বলা যাবে না। সরকারী হাসপাতাল এবং ব্যক্তি পর্যায়ে অনেক সংশ্লিষ্ট চিকিৎসা বিশেষজ্ঞের চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেখানে সর্বাধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা বিদ্যমান। রোগের ধরন অনুযায়ী কম বা বেশি সময় হলেও এ রোগ থেকে রোগীকে সম্পূর্ণভাবে মুক্ত করা সম্ভব। আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা থাকলেও মাত্র পাঁচ শতাংশ রোগী কেন চিকিৎসা পাচ্ছে? এর বড় কারণ রোগীদের অসচেতনতা কুসংস্কার ইত্যাদি। অনেকেই রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসকের দ্বারস্থ হয় না। চূড়ান্তভাবে রোগে আক্রান্ত হওয়ার পরও অনেকে অজ্ঞতাবশত তথাকথিত ঝাড়ফুঁক তাবিজ-কবজ ইত্যাদি চিকিৎসা নিতে গিয়ে রোগের জটিল অবস্থায় উপনীত হয়ে মৃত্যুবরণ করে। অথচ রোগের প্রাথমিক অবস্থায় যথাযথ চিকিৎসা নিলে সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়া সম্ভব। হাঁপানি রোগের উপসর্গ বা লক্ষণ * বুকের ভেতর বাঁশির মতো সাঁই সাঁই শব্দ হওয়া * শ্বাস নিতে ও ছাড়তে কষ্ট হওয়া * দম খাটো অর্থাৎ ফুসফুস ভরে দম নিতে না পারা * ঘন ঘন কাশি * বুকে আঁটসাঁট অথবা দম বন্ধভাব * স্বস্তিতে রাতে ঘুমাতে না পারা রোগীদের জানা দরকার হাঁপানি রোগ সম্পর্কে অনেক রোগীর ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে, দেশে এই রোগের আধুনিক চিকিৎসা নেই। সচ্ছল রোগীরা তাই পার্শ্ববর্তী দেশসহ বিভিন্ন দেশে চিকিৎসা নিতে গিয়ে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা এবং সময় দুটোই নষ্ট করছে। অন্যদিকে অশিক্ষিত ও দরিদ্র শ্রেণীর রোগীরা মনে করে তাবিজ-কবজ, পানি পড়া, মালা পড়া দিয়ে এ রোগ সেরে যাবে। এসব অপচিকিৎসা, দেরিতে চিকিৎসা-অজ্ঞতা অনেক রোগীকে অকালে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এ জন্য রোগীদের জানা দরকার, সঠিক সময়ে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা ও চিকিৎসা বর্তমানে বাংলাদেশেই রয়েছে। অপচিকিৎসা নিয়ে মৃত্যুবরণ কিংবা বৈদেশিক মুদ্রা অপচয় করে বিদেশে যাওয়ার কোন দরকার নেই। ডা. মোহাম্মদ আজিজুর রহমান সহকারী অধ্যাপক বক্ষব্যাধি, এম এইচ শমরিতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, ঢাকা। মোবাইল : ০১৭১৫৩৬৩২৬১ ই- মেইল : [email protected]
×